অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রান্সেসকা আলবানিজ এবং গাজাভিত্তিক চিকিৎসকরা ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য মাতিয়াজ নেমেক এ তথ্য জানান। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরই এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
নেমেক জানান, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যসহ ৩৩টি দেশের প্রায় ৩০০ জন যোগ্য মনোনয়নদাতা এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছেন। তিনি বলেন, এই মনোনয়ন “সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও মৌলিক মানবিক মূল্যবোধ রক্ষায় সাহস, প্রচেষ্টা ও দৃঢ়তার প্রতি সম্মানের বহিঃপ্রকাশ” এবং এটি “রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে শান্তির পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান”।
নেমেক ফ্রান্সেসকা আলবানিজের আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার রক্ষার ভূমিকাকে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কঠোর রাজনৈতিক চাপ ও নিষেধাজ্ঞার মুখেও তিনি তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি আমাদের সবার সামনে একটি আয়না ধরেন এবং আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি অটল থাকেন।”
মনোনয়নে গাজার চিকিৎসকরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, যার মধ্যে ডা. হুসাম আবু সাফিয়া ও ডা. সারা আল-সাক্কা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নেমেক বলেন, “স্বাস্থ্য অবকাঠামো ধ্বংসপ্রায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকটের মধ্যেও তারা জীবন বাঁচিয়ে, চিকিৎসা নীতিমালা মেনে প্রতিদিন মানবতা, সংহতি ও শান্তির মূল্যবোধ বাস্তবায়ন করছেন। এমন স্বীকৃতির তারা নিঃসন্দেহে যোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, “এই বৈশ্বিক মনোনয়ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানায়—সব পরিস্থিতিতেই আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ও মানব মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া এ সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ। যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও দখলদার বাহিনী সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে এবং ১০ অক্টোবরের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর একাধিকবার তা লঙ্ঘন করেছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
এসআর