২১টি আরব, ইসলামি ও আফ্রিকান দেশের প্রতিনিধিরা ইসরাইলের সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল সোমালিল্যান্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা জানিয়েছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করবে।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রকাশিত সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরাইলের এই সিদ্ধান্ত একটি “গুরুতর দৃষ্টান্ত” স্থাপন করেছে, যা “আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা”কে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো এই পদক্ষেপকে “সর্বোচ্চ কঠোর ভাষায়” নিন্দা জানিয়ে বলে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘ সনদ স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার ওপর জোর দেয়, অথচ ইসরাইলের এই সিদ্ধান্ত তার “সম্প্রসারণবাদী মনোভাবের” প্রতিফলন।
বিবৃতিতে ইসরাইলের এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি “সম্পূর্ণ ও প্রকাশ্য অবজ্ঞা” হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করা হয় যে, এর ফলে আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল ও লোহিত সাগর এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর “গুরুতর প্রভাব” পড়তে পারে।
২১টি দেশ সোমালিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে জানায়, সোমালিয়ার ঐক্য, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সমগ্র ভূখণ্ডের ওপর তার সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করে—এমন যেকোনো পদক্ষেপ তারা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
১৯৯১ সালে সোমালিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর থেকে সোমালিল্যান্ড কার্যত একটি স্বশাসিত প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামো হিসেবে পরিচালিত হলেও এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়নি। সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার অঞ্চলটির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, আবার সোমালিল্যান্ডের নেতৃত্বও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সফল হয়নি।
সোমালিয়া সরকার সোমালিল্যান্ডকে তাদের ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এবং অঞ্চলটিকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। তারা সোমালিল্যান্ডের সঙ্গে যেকোনো সরাসরি চুক্তি বা সম্পৃক্ততাকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যের লঙ্ঘন বলে মনে করে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
এসআর