চলতি সপ্তাহে মালয় উপদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যবর্তী মালাক্কা প্রণালিতে এক বিরল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় আঘাত হানে এশিয়ার চার দেশ ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায়। সাইক্লোন ‘সেনইয়ার’ আঘাতে কদিনের টানা বৃষ্টি এবং এর ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণহানির সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০০। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক। ডুবে গেছে এসব দেশের বিস্তীর্ণ এলাকা।
বন্যা ও ভূমিধসে এই তিন দেশের লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে হাজার হাজার বাসিন্দা। বহু এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার অভিযান। শ্রীলঙ্কায় জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার (বিএনপিবি) প্রধান শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এবারের বন্যায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৪২ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ রয়েছেন ২৭৯ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। সুমাত্রার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা। মঙ্গলবার থেকে উদ্ধারকারীরা বন্যার পানিতে আটকেপড়া বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু পরিস্থিতি প্রতিকূল থাকায় তা ব্যাহত হচ্ছে।
থাইল্যান্ডের সরকারি মুখপাত্র জানিয়েছেন, দক্ষিণ থাইল্যান্ডে বন্যা ও ভূমিধসে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৬২ জন। প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাট ইয়াই শহরে একদিনে ৩৩৫ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছেÑযা ৩০০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মঙ্গলবার সেখানকার একটি হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে আট ফুটেরও বেশি উঁচু বন্যার পানি ঢুকে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় জনদুর্ভোগ আরো বেড়েছে।
শুক্রবার দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয় সিএনএনকে জানিয়েছে, সোংখলা প্রদেশে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা ১০ পর্যটককে উদ্ধার করেছে তারা।
আর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের আঘাতে মালয়েশিয়াতে মারা গেছেন দুজন। অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৩৪ হাজার মানুষকে।
এদিকে শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়াহর প্রকোপে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন ১৯৩ জন। নিখোঁজ রয়েছেন ২২০ জন। রাজধানী কলম্বোর আশপাশের নিচু এলাকা এখনো বন্যার পানিতে ডুবে আছে। বিদ্যুৎবিহীন রয়েছেন লাখো বাসিন্দা।