সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজান নগরে নতুন ঘর নির্মাণের আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে ভয়াবহ বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছেন একই পরিবারের ও তাদের আত্মীয়স্বজন মিলিয়ে ১১ জন। কালোজিরা ভেবে দানাদার কীটনাশক মিশিয়ে পিঠা তৈরি করায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অসুস্থদের মধ্যে রয়েছেন শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তারা হলেন— সুমাইয়া (২২), আইজা (২), মেহজাবিন (১০), সামিয়া (৪), আকলিমা (৩৫), জান্নাতি (১৫), আইয়ুব খান (৬০), আজিহা (১), শারমিন (২৩), মিতা (৩৫) ও উম্মে হাবিবা (২১)।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নতুন ঘর তৈরির আনন্দে মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনিদের নিয়ে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। বিকালে পিঠা তৈরির সময় রান্নাঘরে রাখা দানাদার কীটনাশকের প্যাকেটকে কালোজিরা মনে করে ভুলবশত মিশিয়ে ফেলেন পরিবারের সত্তরোর্ধ্ব বয়স্কা জুলেখা বিবি। পিঠা খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই সবার বমি, মাথা ঘোরা, পেটে তীব্র ব্যথাসহ বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। আতঙ্কিত পরিবার তৎক্ষণাৎ তাদের শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. শাকির হোসেন জানান,রোগীদের আনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পাকস্থলী ধোয়াসহ জরুরি চিকিৎসা শুরু করি। উপসর্গ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, খাবারের সঙ্গে কীটনাশক জাতীয় বিষ মিশেছিল। বর্তমানে সবাই পর্যবেক্ষণে আছেন এবং তাদের অবস্থা স্থিতিশীল।
ঘটনার পর এলাকাজুড়ে ছড়িয়েছে উদ্বেগ ও শঙ্কা। স্থানীয়রা বলছেন, রান্নাঘরে খাবারের উপকরণের পাশে কীটনাশক, ইঁদুর মারার বিষ বা অন্যান্য ক্ষতিকর দ্রব্য অযত্নে রাখা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ বিপ্লব হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে এটি সম্পূর্ণ ভুলবশত সংঘটিত দুর্ঘটনা বলে প্রতীয়মান হয়েছে। কোনো ধরনের নাশকতার আলামত পাওয়া যায়নি।

