প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়

রোকনুজ্জামান রোকন নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর)
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৫২

একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়ায় অবস্থিত পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বাতিঘর হয়ে যুগ যুগ ধরে আলোর পথ দেখিয়ে চলেছে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের। উপজেলার একমাত্র শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ১২ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষকের অধীনে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছেন। বিদ্যালয়ের দেখভাল করা ও দাপ্তরিক কাজের জন্য রয়েছেন পাঁচজন কর্মচারী।

প্রতিষ্ঠাকালীন ইতিহাস সম্পর্কে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ওবায়দুর রহমান জানান, ১৯২১ সালে এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি অজপাড়াগাঁয়ে শিক্ষার আলো ছড়াতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরপর পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৬৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালে যিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তার নাম আ. করিম। তারপর থেকে অদ্যাবধি ১৬ জন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টি পরিচালনা করেছেন। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা ওবায়দুর রহমান নিজেও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠ থেকে শিক্ষা লাভ করেছেন দেশবরেণ্য অনেক ব্যক্তিত্ব। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে সুনাম কুড়াচ্ছেন শতবর্ষী এই প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী। পেশাগত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে অবদান রাখছেন দেশ ও মানুষের কল্যাণে।

তাদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা বীর উত্তম শহীদ মাহবুবুর রহমান ও বাংলাদেশ কৃষি অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সামছুল হুদা চৌধুরী অন্যতম। বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী আলমগীর কবির মুন্না বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইকবাল হোসেন নিজেও এই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি যুগ যুগ ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিলেও আজও বিদ্যালয়টির অবকাঠামো তেমন উন্নতি হয়নি। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সরকারের কাছে তিনি দাবি জানান।

নবাবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দীপক কুমার বণিক বলেন, পলাশবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়টি শতবর্ষী একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত হলেও বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর ভালো ফলাফল করে আসছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষা অফিস থেকে নিয়মিত মনিটরিং করাসহ বিদ্যালয়টিকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো উন্নয়নে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করছি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত