অ্যান্টিভেনম না দিয়ে শিশুকে মৃত্যু দিকে ঠেলে দিলো ডাক্তার

উপজেলা প্রতিনিধি, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)
প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ২২: ০০

লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জে হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও সাপে কাটা রোগীকে ইনজেকশন না দিয়ে অন্যত্র পাঠানোর ফলে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত শিশুটির নাম মাদ্রাসা পড়ুয়া মো. আবদুল আলিম (৫)। তাদের বাড়ি রামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কলচমা চৌকিদার বাড়ি।

শিশুটির মা মহিমা আক্তার জানান, আমার ছোট ছেলে আবদুল আলিম মাদ্রাসা থেকে এসে দুপুর ১২টায় ঘরের দরজায় বসে খেলছিলো। এসময় হঠাৎ সে চিৎকার দিলে আমরা দৌড়ে আসি। এসে দেখতে পাই একটি সাপ আমার ছেলেকে কামড় দিয়ে ঘরের সাথের একটি গর্তে ঢুকে পড়ে। আমি ও আমার জা আবদুল আলিমকে নিয়ে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি। ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ফারজানা ইতি এ সময় জানান, আমাদের হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম নাই। আপনারা তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কুমিল্লা মেডি্যোল কলেজে নেয়ার পথে আমার আদরের সন্তান দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।

শিশু আবদুল আলিমের মামা মো. রাছেল শেখ জানান, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম নাই। এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই অ্যান্টিভেনমসহ মূল্যবান মেডিসিনগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্যত্র বিক্রি করে দেয়ার কারণে আমার ভাগিনার মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি।

এ বিষয়ে ডাক্তার ফারজানা ইতি জানান, ১২টার পর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারছেন না তাকে সাপে নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার ব্লাড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শ্বাসপ্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে তারা শিশুটিকে অন্যত্রে চিকিৎসা করানোর কথা বললে আমি শিশুর স্বজনদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যোগাড় করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করি। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দিবো না?

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন জানান, এমনতো হওয়ার কথা না। আমাদের হাসপাতালে সাপে কামড় দেয়া কমপক্ষে চারজন রোগীকে দেয়ার মতো অ্যান্টিভেনম রয়েছে। আমি খবর নিয়ে জানাচ্ছি। এসময় তিনি আরো জানান, যদি অন্য কোথাও রোগীকে রেফার করতে হয় তাহলে অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার করতে হবে। কিন্তু কি কারণে তিনি (ডাক্তার ফারজানা ইতি) অ্যান্টিভেনম দেননি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত