পরিচ্ছন্নতায় ঝাড়ু হাতে রেলের মহাব্যবস্থাপক, শ্রমিকদের সঙ্গে ভাগ করে খেলেন খিচুড়ি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ২৭

চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি)। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক এলাকাটি তার শীতল ছায়া, ঘন গাছগাছালি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে প্রতিদিন শত শত মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকে। তবে নানা কারণে সিআরবি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল না। এ অবস্থায় এলাকাটি ধীরে ধীরে তার সৌন্দর্য হারাতে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

এই পরিস্থিতি পাল্টাতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সুবক্তগীন নিলেন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। আজ শনিবার কর্মচারীদের উৎসাহিত করতে এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে তিনি নিজেই ঝাড়ু হাতে তুলে নেন। সকাল সকাল অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিয়ে উপস্থিত হন সিআরবি এলাকায় এবং পরিচ্ছন্নতা কাজে অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় সুবক্তগীন বলেন, নেতৃত্ব মানে শুধু অফিস কক্ষে বসে দিকনির্দেশনা দেওয়া নয়, নেতৃত্বের আসল শক্তি হলো সামনে থেকে উদাহরণ স্থাপন করা। আমরা চাই রেলওয়ের প্রতিটি কর্মচারী সিআরবিকে নিজেদের বাড়ির উঠোনের মতো ভালোবাসুক। আমি ঝাড়ু হাতে তুলে নিয়েছি যেন সবাই বুঝে, এটা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।

শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হয় এ কর্মসূচি। প্রথমেই সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সিআরবি চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এক আলোচনা সভা। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) শেখ সাকিল উদ্দিন আহমমের নেতৃত্বে আয়োজিত এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের বিভিন্ন স্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন পূবাঞ্চলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. ইবনে সফি আব্দুল আহাদ, আরএনবির চিফ কমান্ড্যান্ট মো. আশাবুল ইসলাম, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এ বি এম কামরুজ্জামান প্রমুখ।

সভায় সিআরবি এলাকার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন, এটি শুধু একটি অফিস এলাকা নয়, বরং চট্টগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত নিদর্শন। বক্তারা বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের হৃদয়। একে সুরক্ষিত ও পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব।

তারা আরও বলেন, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে। গাছপালা রক্ষা, সৌন্দর্যবর্ধন, আবর্জনা ব্যবস্থাপনা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি, এখানে আসা দর্শনার্থীদের মাঝেও সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

খিচুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া রেলওয়ের কর্মচারী, শ্রমিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, তাদের সবাইকে পরিবেশন করা হয় খিচুড়ি। হাসিমুখে সকলে একসাথে বসে খাবার গ্রহণ করেন। এ সময় গড়ে ওঠে এক চমৎকার সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত