ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে দুদকের ফাঁদে কাস্টমসের ২ কর্মকর্তা

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ১৬
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ২৭

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে ফাঁদ পেতে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় এবং তার সহযোগী মাইনুদ্দীনকে ঘুষের ৩০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে আটক করেছে।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি বিশেষ টিম সফল এ ফাঁদ অভিযান পরিচালনা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

দুদক জানায়, অভিযোগ আসে হোমল্যান্ড প্লাস্টিক স্যু ইন্ডাস্ট্রিজের প্রোপাইটর আমির হোসেনের পক্ষ থেকে। তিনি জানিয়েছিলেন যে, জাপান থেকে আমদানি করা BREAK ACRYLIC MIXED PLASTIC WASTE AND SCRAP (মূল্য ৬,৪২৮.১০ মার্কিন ডলার, HS Code: 3915.90.00) পণ্য ছাড়করণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া হলেও শুল্কায়ন সেকশন-৭(বি)-এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীব রায় ও মো. ছারওয়ার উদ্দিন ইচ্ছাকৃতভাবে পণ্য ছাড়করণে বিলম্ব ঘটাচ্ছেন এবং নির্ধারিত হারের বাইরে অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করছেন। টাকা না দিলে কর্মকর্তারা পণ্যটি বিলম্ব বা নিলামে বিক্রির হুমকি দিচ্ছিলেন।

ঘুষ দাবির এই অভিযোগে দুদক তদন্ত শুরু করে এবং আইন ও বিধি অনুযায়ী ফাঁদ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। অভিযানের সময় দুদকের বিশেষ টিম ছদ্মবেশে ঘুষ লেনদেন পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণের সময় রাজীব রায় ও মাইনুদ্দিন ঘুষ গ্রহণের মুহূর্তে হাতেনাতে আটক করা হয়।

অভিযানের পর দস্তাবেজ ও আলামতের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযানের প্রেক্ষিতে সাক্ষীদের বক্তব্য গ্রহণসহ সকল আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে মামলা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, তদন্তকালে অপরাধে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের ফাঁদ অভিযান শুধু দুদকের সক্রিয় ভূমিকার প্রতিফলন নয় বরং সরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। চট্টগ্রামের বন্দর শহরের কাস্টমস সেক্টর দীর্ঘদিন ধরেই ঘুষ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে এসেছে। এই অভিযানের মাধ্যমে দুদক স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সম্ভাব্য অপরাধীদের সতর্কবার্তাও দিচ্ছে।

দুদকের কর্মকর্তা বলেন, আমরা সচেতন যে দুর্নীতির কর্মকাণ্ড শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠানে নয়, বাণিজ্যিক কার্যক্রমকেও প্রভাবিত করছে। তাই, আইন অনুযায়ী অভিযানের মাধ্যমে যারা এই ধরনের অপরাধে জড়িত তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলকভাবে শাস্তি দেয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত