মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণ না করেই টাকা উত্তোলন

উপজেলা প্রতিনিধি, তিতাস (কুমিল্লা)
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ১৪

কুমিল্লার তিতাস উপজেলার দুধঘাটা নূরে মোহাম্মদী (স.) দাখিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর ও প্রধান গেট নির্মাণ না করেই প্রকল্পের পুরো টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার আগের টিনের সীমানাপ্রাচীর ও পুরোনো গেটই আছে; নতুন কোনো নির্মাণকাজের চিহ্ন নেই।

বিজ্ঞাপন

২০২৩-২৪ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাদ্রাসাটির সীমানা প্রাচীর ও গেট নির্মাণের জন্য ১৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। কিন্তু কোনো কাজ বাস্তবে সম্পন্ন না করেই মাদ্রাসার সুপারসহ প্রকৌশল বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা যৌথ স্বাক্ষরে শতভাগ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে মাদ্রাসার দাতা সদস্য ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন সরকার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. শাহীনুর ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর ১৪ লাখ ২৫ হাজার টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর কার্যাদেশ জারি হয়। কাজটি ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। বুড়িচং উপজেলার মেসার্স জাহানারা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। কিন্তু প্রায় এক বছর পার হলেও কোনো কাজ শুরু হয়নি এবং কোনো নির্মাণসামগ্রীও আনা হয়নি।

তবুও ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর মাদ্রাসার সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল, সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহববুর রহমান ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. বজলুর রহমান মোল্লার যৌথ স্বাক্ষরে ‘কাজ সম্পন্ন ও হস্তান্তর সনদ’ দেখিয়ে পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়।

মাদ্রাসার সুপার মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘যৌথ স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি দুই মাস আগে জানতে পারি। আমি কোনো স্বাক্ষর দেইনি; আমার স্বাক্ষর জাল করে টাকা তোলা হয়েছে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী বজলুর রহমান লিখিতভাবে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।’

মাদ্রাসার সভাপতি মো. সানোয়ার হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. শাহীনুর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাহানারা ট্রেডার্সের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমি অসুস্থ, পরে কথা বলব।’

সহকারী প্রকৌশলী মাহববুর রহমান ও উপসহকারী প্রকৌশলী বজলুর রহমানের ফোনেও সাড়া মেলেনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘মাদ্রাসার জন্য বরাদ্দ পাওয়া এই প্রথম। কাজ না করেই টাকা তুলে নেওয়া দুঃখজনক। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চাই।’

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত