চোখের পলকে নদীগর্ভে মসজিদ, জাজিরায় পদ্মার ভাঙন

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১২: ১৯

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে একে একে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর ধর্মীয় স্থাপনাও। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের জিরোপয়েন্ট এলাকায় আলম খাঁর কান্দি জামে মসজিদের দ্বিতল ভবনটি বিকট শব্দে চোখের পলকে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানায়, ভাঙনের আগ মুহূর্তে মসজিদ ভবনে ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে বহু মানুষ নদীর পাড়ে ভিড় করে। কিছুক্ষণ পরেই বিস্ফোরণের মতো শব্দে মসজিদটি ধসে পড়ে পদ্মার তলদেশে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শী নুরউদ্দিন মাঝি বলেন, "সকালেই খবর পাই মসজিদে ফাটল ধরেছে। আমরা অনেকেই দৌড়ে এসে দেখি, হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো মসজিদটা নদীতে পড়ে যায়। আমরা সবাই আতঙ্কিত। অনেকের ঘরবাড়ি ইতোমধ্যে গেছে, বাকিগুলোও যাবে মনে হচ্ছে।"

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকার রক্ষাবাঁধের জিরোপয়েন্টে গত বছরের নভেম্বর থেকে ভাঙন শুরু হয়। এ পর্যন্ত একাধিক ধাপে বাঁধের অন্তত ৭৫০ মিটার নদীগর্ভে চলে গেছে।

ভাঙনের কবলে পড়া এলাকার মধ্যে রয়েছে আলম খাঁর কান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও মাঝিরঘাট। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় প্রায় ৩০টি দোকানপাট ও ৫০টি বসতবাড়ি নদী গিলে খেয়েছে। ভাঙনের আতঙ্কে আরও শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে।

ভাঙনের ভয়াবহতা এতটাই যে, এখন পুরো মাঝিরঘাট বাজার ও আশপাশের অন্তত ৬০০ পরিবার সরাসরি ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই বাজারের প্রায় ২০০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙনের হুমকিতে দিন কাটাচ্ছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড শরীয়তপুর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ তারেক হাসান বলেন, "আমরা আপদকালীন ব্যবস্থা নিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। তবে পদ্মার তীব্র স্রোতের কারণে এটা পুরোপুরি থামানো সম্ভব নয়। আমরা ইতোমধ্যে স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।"

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত