নবাবগঞ্জে যুবদল নেতার লাশ উদ্ধার

উপজেলা প্রতিনিধি, দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা)
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৮: ৩১
যুবদল নেতা আমজাদ

ঢাকার নবাবগঞ্জে বাড়ির পাশের ক্ষেত থেকে আমজাদ হোসেন (৫২) নামে নবাবগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার

মৃধাকান্দা এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৬ জুলাই ভোর চারটার দিকে চেক জালিয়াতির মামলায় দশ মাসের সাজা সংক্রান্ত পরোয়ানা নিয়ে আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে অভিযান চালায় নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ। অভিযানকালে তাকে না পেয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পুলিশের গাড়ি চলে গেছে জানতে পেরে আমজাদ ঘর থেকে বের হন। পরিবারের ধারণা, তিনি ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন।

পরে ভোর পাঁচটার দিকে স্থানীয় কয়েকজন তার বাড়ির পাশে ধৈঞ্চার ক্ষেতে আমজাদকে পড়ে থাকতে দেখে বাড়িতে খবর দেন। খবর পেয়ে আমজাদকে উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনরা লাশ বাড়িতে নিয়ে যান। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হত্যা’র অভিযোগ তুলে বিভিন্ন পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে স্থানীয় বিএনপি, যুবদলের নেতাকর্মী ও স্বজনেরা আমজাদের বাড়িতে যান। খবর পেয়ে নবাবগঞ্জ থানা-পুলিশ আমজাদের বাড়িতে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। আমজাদের নামে ২৭টি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চেক জালিয়াতির মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রায় এক বছরের সাজা পরোয়ানাও ছিল। লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

স্ত্রী মাহফুজা বেগম বলেন, আমজাদ ভোরে বাসা থেকে বের হয়েছেন। পরে খবর পাই বাড়ির পাশে তিনি আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক বলেন মারা গেছে। আমার

স্বামী কীভাবে মারা গেল আল্লাহই ভালো বলতে পারবেন। তবে এ ঘটনায় আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।

আমজাদের ভাই জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই রাজনীতি করতেন। তার অনেক প্রতিপক্ষ আছে। পুলিশ তাকে ধরতে এলেও সে কেন ওখানে গিয়ে পড়ে মারা গেল এটা আমরা বুঝতে পারছি

না।

নিহতের বড় মেয়ে আশা আক্তার বলেন, বাবার মুখে ও চোখের কোণে জখমের চিহ্ন ছিল। বাবাকে কেউ হত্যা করেছে কিনা তা এখনো বলতে পারছি না।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করাটা জরুরি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। ভোররাতে গ্রেপ্তার অভিযানের বিষয়ে ওসি বলেন, তার নামে সাজার পরোয়ানা ছিল। পুলিশ ভোর চারটায় তাঁকে ধরতে যায়। বাসার দরজা না খোলায় পুলিশ ফিরে আসে। পরে স্থানীয় লোকজন মুঠোফোনে আমজাদের মৃত্যুর খবর জানান।

অভিযানে অংশ নেওয়া উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিবুল ইসলাম ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, তারা আমজাদের বাড়িতে ঢোকেননি।

এদিকে আমজাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা-১ আসনের সাবেক এমপি ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নানের মেয়ে বিএনপি নেত্রী মেহনাজ মান্নান তার বাড়িতে যান। তিনি এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন এবং পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, আমজাদ দলের ত্যাগী নেতা ছিলেন। অনেক মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। তার রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ জানতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাচ্ছি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত