আগামী ২৫ ডিসেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঢাকায় আগমনকে কেন্দ্র করে লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ না পাওয়ার প্রতিবাদে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন লালমনিরহাট জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে এই অবরোধের কারণে রেলস্টেশনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় এবং চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজারো যাত্রী।
সকাল ৯টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা লালমনিরহাট রেলস্টেশনে এসে ঢাকাগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনের সামনে বসে ও শুয়ে রেললাইন অবরোধ করে রাখেন। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং স্টেশনের উভয় পাশে প্রচণ্ড শীতে দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রীরা আটকা পড়েন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, আগামী ২৫ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি বিশেষ ট্রেন বরাদ্দের আবেদন করা হয়। তবে কয়েক দিন অপেক্ষার পর সোমবার রাতেই রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা বিশেষ ট্রেন দিতে পারবে না। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই তারা রেলপথ অবরোধে নামেন বলে জানান বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতারা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা টিকিটের বিনিময়ে বৈধভাবে একটি বিশেষ ট্রেন চেয়েছিলাম। অথচ তিন দিন ধরে আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।”
এদিকে রেলপথ অবরোধের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কারো সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে, কারো স্বজন গুরুতর অসুস্থ, আবার কারো রয়েছে জরুরি দাপ্তরিক কাজ। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
ট্রেনের যাত্রী আনোয়ারা বেগম বলেন, “আমরা কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। আমাদের সময়ের মূল্য অনেক। অবরোধের কারণে কখন ট্রেন ছাড়বে জানি না—এই অনিশ্চয়তায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।”
এ বিষয়ে রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানতে লালমনিরহাট ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার) অফিসে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, “ডিআরএম স্যার বর্তমানে পরিদর্শন কাজে কুড়িগ্রাম জেলায় অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।”
ঘটনার সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রেলপথ অবরোধ চলমান ছিল এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থান নেয়।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, রেলওয়ের সক্ষমতা কম এবং কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে বিএনপিকে ট্রেন বুকিং দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তারা রেলপথ অবরোধ করে রেখেছে। এতে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

