উপদেষ্টারা আশ্বাস দিলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ফেনীর জন্য কিছুই করেননি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৫৫

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, গত বছরের ফেনীর বন্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ভয়াবহ ঘটনা। কিন্তু আমরা বন্যার পরপর প্রথম হতাশ হয়েছি প্রধান উপদেষ্টা ফেনীর বানভাসিদের দেখতে না যাওয়ায়। তিনি অন্তত হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে আসতে পারতেন। এবারের বন্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা এলাকা পরিদর্শন করায় ধন্যবাদ জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ফেনী কমিউনিটি’ আয়োজিত মতবিনিময় এসব কথা বলেন তিনি।

সভায় সভাপতি ছিলেন কমিউনিটির আহবায়ক ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। সঞ্চালনা করেন কমিউনিটির সদস্য সচিব বুরহান উদ্দিন ফয়সল।

মতবিনিময় সভায় আরও এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোতাহের হোসেন, সাংবাদিক ও সমাজকর্মী ফারাবী হাফিজ, জাতীয়তাবাদী সমবায় দলের সাধারণ সম্পাদক ড. নিজাম উদ্দিন, কানাডা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, ব্যবসায়ী ও ফেনী ফোরামের সহ-সভাপতি দিদারুল আলম মজুমদার, সোনাগাজী ফোরামের সভাপতি ইব্রাহিম বাহারী, ব্যাংকার ও সমাজকর্মী ওমর ফারুক, ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম, সাংবাদিক কেফায়েত শাকিল, সৌদি আরব বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে দাবি আদায়ে একটি লিয়াজো কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়।

এম আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা ফেনীবাসী রাজনৈতিক ও প্রতিবেশী আগ্রাসনের শিকার হয়েছি। বর্তমানে যে সরকারটি রয়েছে এটি জনগণের সরকার। আমরা ফেনীবাসীর সমস্যা নিয়ে বর্তমান সরকারের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা এমনভাবে বলেন, মনে হয় যেন আজই সমাধান হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনো আমরা কোনো সমাধান পাইনি। ফেনীর নিরাপত্তা ইস্যুতে এই সরকারের কূটনৈতিক কোনো তৎপরতাও আমরা দেখিনি, এটি খুবই দুঃখজনক।

সম্প্রতি ফেনীর বন্যা নিরাপত্তায় ৭ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পটি যেন কোনোভাবে লুটপাটের কবলে না পড়ে সেদিকে ফেনীর বিশিষ্টজনদের নজর দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

সাংবাদিক ফারাবী হাফিজ ২৪শের বন্যায় নিজ হাতে তিনটি বেওয়ারিশ লাশ দাফন ও টানা কয়েকদিন নাওয়া খাওয়া ভুলে পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ফেনীবাসীর জন্য কাজ করার স্মৃতি তুলে ধরেন। এসময় পুরো মিলনায়তন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে।

ইঞ্জিনিয়ার মোতাহার হোসেন বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আমাদের প্রতিবেশী ভালো নয়। তারা আমাদের পরিকল্পিতভাবে ডুবিয়েছে, ডুবাতে চায়। তার মধ্যে আবার বিগত সরকারের সময় উন্নয়নের মাধ্যমে লুটপাট হয়েছে। একারণে উন্নয়নগুলো টেকসই হয়নি। যার কারণে ফেনীবাসীকে বার বার ভুগতে হচ্ছে। আমরা এবার অন্তত এটার সমাধান চাই।

দিদারুল আলম মজুমদার বলেন, ফেনীর বন্যা ঝুঁকি শুধু ফেনীর সমস্যা নয়। এটি জাতীয় সমস্যা। এই সমস্যা সামাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রয়োজন।

হুমায়ুন পাটোয়ারী, গত এক বছরে ফেনীবাসী বন্যা মোকাবিলায় অনেক দাবি তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু আমরা কোনো সমাধান পাইনি। এখনো অসংখ্য মানুষের কোনো পুনর্বাসন হয়নি। অসংখ্য ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়েছে। কেউ এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। বন্যা নিয়ন্ত্রণে শুধু বাঁধের আলোচনা হলেও নদী খাল জলাধার উদ্ধার করা হয়নি। তিনি বলেন, দাবি বাস্তবায়নে এখন আমাদের আরও শক্ত অবস্থানে যেতে হবে।

ড. নিজাম উদ্দীন বলেন, ফেনীর বন্যার বড় কারণ প্রতিবেশী দেশ ভারতের অন্যায়ভাবে চাপিয়ে দেওয়া পানি। আমরা জানি বিগত সরকার ছিল ভারতের দাস একটি সরকার। এজন্য তারা ভারতের অন্যায়ে চুপ থাকতো। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আসা সরকার অন্তত তাদের চোখে চোখ রেখে দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে এখনো বিবাদপূর্ণ বাঁধটির বিষয়েও তারা কোনো সমাধান করতে পারেনি। আগাম পানির তথ্যও আদায় করে নিতে পারছে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত