চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদে নির্বাচিতদের শিবিরের সংবর্ধনা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৫১

ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে “দুর্বার নেতৃত্বে গড়ি স্বপ্নের ক্যাম্পাস” প্রতিপাদ্যে দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের পিতা মকবুল হোসেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।

সভাপতির বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রসংসদ নির্বাচন ছিল ছাত্রসমাজের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত। এটি ছিল জুলাই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। ইসলামী ছাত্রশিবির বরাবরই ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার থেকেছে ও আন্দোলন করেছে।

তিনি বলেন, ছাত্রসংসদ শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মঞ্চ হবে না, বরং এটি হবে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের training ground। এই নেতৃত্বই আগামী দিনে দেশের গতিপথ ও নীতিনির্ধারণ করবে। প্রতিনিধিরা কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রতিনিধি নয়; বরং সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে সবার জন্য কাজ করবে। সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রবান্ধব কর্মসূচি থাকতে হবে। প্রত্যেক প্রতিনিধিকে সবার নেতা হয়ে উঠতে হবে।

শিবির সভাপতি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, আমরা তখনও পুরনো ব্যবস্থায় আটকে আছি। বিশ্বের বিভিন্ন ছাত্রসংসদ সম্পূর্ণ শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক। আমরাও এমন শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্রসংসদ চাই, যা বৈচিত্র্যময় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে মডেল হয়ে উঠবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতার চর্চা করতে চাই না, বরং একে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কেন্দ্রে পরিণত করতে চাই। জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চাই।

তিনি বলেন, ছাত্রশিবির মনে করে, ছাত্রবান্ধব কর্মসূচির পাশাপাশি জাতীয় সংকটের মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়তে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, এবং সাবেক চাকসু ভিপি এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার।

ছাত্রসংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি, রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, জাকসুর এজিএস আয়শা সিদ্দিকা মেঘলা, এবং রাকসুর নির্বাহী সদস্য সুজন চন্দ্র।

আরো বক্তব্য রাখেন—ফ্যাসিবাদী আমলে গুম হওয়া ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাশেম আরমান, জুলাই শহীদ ফয়সাল আহমেদ শান্তর মাতা কোহিনূর আক্তার, জুলাই যোদ্ধা তাহমিদ হুজায়ফা, জাগপা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, এবং খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল আজিজ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন— শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, জুলাই আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীরা, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দ, বন্ধুপ্রতীম ছাত্রসংগঠনের সভাপতিবৃন্দ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইসলামিক স্কলার, কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ, চার বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আদায়ে ছাত্রশিবির ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা শীর্ষক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে সম্মাননা স্মারক, ফুল, ক্রেস্ট ও বই তুলে দেওয়া হয়।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত