আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট উত্তোলনে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

প্রতিনিধি, ইবি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট উত্তোলনে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পরও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় এখনো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। এরই প্রতিফলন দেখা যায় সনদ অথবা মার্কশিট উত্তোলনের মতো একটি মৌলিক সেবায় শিক্ষার্থীদের এই চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

অধ্যয়ন শেষে একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত হচ্ছে ফলাফল হিসেবে সনদ সহজে হাতে পাওয়া। কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের জন্য সনদ অথবা মার্কশিট উত্তোলনে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। প্রশাসনিক জটিলতা, জনবল সংকট ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে সার্টিফিকেট উত্তোলন এখন কঠিন ও সময়সাপেক্ষ একটি কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী মার্কশিট ও সনদ উত্তোলনের জন্য আসেন, যা চাকরির মৌসুমে বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনে। অথচ এই পুরো কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কর্মরত আছেন মাত্র পাঁচ-ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। স্বাভাবিকভাবেই তারা এত সংখ্যক শিক্ষার্থীর চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি সনাতন পদ্ধতিনির্ভর হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ঘুরতে হয় এক কক্ষ থেকে অন্য কক্ষে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক সময় তাদের তিরস্কারের মুখোমুখিও হতে হয়। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে এসেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে নেই কোনো অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম বা ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার। এমনকি নেই একটি তথ্য কেন্দ্র বা ইনফরমেশন ডেস্ক, যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা নির্ভরযোগ্যভাবে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেতে পারেন।

মার্কশিট তুলতে আসা এক শিক্ষার্থী মৌমিতা তাসফিয়া বলেন, ‘আমি এক মার্কশিটের জন্য চার দিন ধরে ঘুরছি। এখনো মার্কশিট হাতে পাইনি। ২০২৫ সালে এসেও এভাবে অ্যানালগ পদ্ধতিতে তিন-চার দিন অপেক্ষা করে মার্কশিট নিতে হচ্ছে। বিষয়টা আসলেই দুঃখজনক। আমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যেন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও সনাতন পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে ডিজিটালাইজেশন করে, তাতে অন্তত আমাদের মতো সাধারণ শিক্ষার্থীরা যারা আছেন তাদের ভোগান্তি একটু হলেও কম হবে।’

সরেজমিনে দপ্তরের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখা গেছে, ট্যাবুলার শিটের বইগুলো গোপনীয় শাখায় অবহেলায় পড়ে আছে, যা শিক্ষার্থীরাই খুঁজে নিয়ে সেবা নিচ্ছেন। পরীক্ষার খাতাগুলোও স্থান সংকুলানের অভাবে পড়ে আছে করিডোরে, যা অপ্রতুল সংরক্ষণ ব্যবস্থার নজির হয়ে আছে। এসবের মাঝে শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট উত্তোলনের জন্য ‘এই টেবিল থেকে ওই টেবিলে ঘোরাঘুরি’ যেন নিত্যদিনের চিত্র।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির বিষয়গুলো আমি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কীভাবে সনদপ্রদান প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুত করা যায়, সে জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন