শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

উদ্ভাবন ও গবেষণায় শীর্ষে, সবুজে-সৌন্দর্যে অনন্য

মাঈন উদ্দিন
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ১৭

উদ্ভাবন, গবেষণা, একাডেমিক সাফল্য এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের এক উচ্চশিক্ষালয় সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। চলতি বছরের বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩৫ বছরে পদার্পণ করেছে। এই দীর্ঘযাত্রায় প্রতিষ্ঠানটির অর্জনের ঝুলি ভরপুর।

বিজ্ঞাপন
SUS-Uparja

একাডেমিক অগ্রযাত্রা

দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উচ্চ শিক্ষায়তন শাবিপ্রবি। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠ স্বগৌরবে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। ১৯৮৬ প্রতিষ্ঠিত হলেও শাবিপ্রবিতে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে। শুরুতে তিনটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে সাতটি অনুষদের অধীনে ২৮টি বিভাগ রয়েছে। প্রথমদিকে অর্থনীতি, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল এই বিদ্যাপীঠের। পরে বিজ্ঞানের আধুনিক বিষয় ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ খোলা হয়। বর্তমানে আরো ১৩টি বিভাগ খোলার জন্য আলোচনা চলছে।

আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রথম থেকেই দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ক্রেডিট পদ্ধতির শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়। এসব ছাড়া শাবিপ্রবির অধীনে আধুনিক ভাষা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি নামে দুটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। রয়েছে একটি বিশেষায়িত কলেজ, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। যেখানে আধুনিক বিজ্ঞানের তিনটি বিভাগে শিক্ষাকার্যক্রম চালানো হয়। এছাড়া ক্যাম্পাসের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য রয়েছে একটি স্কুল এবং কলেজ।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী পরিসংখ্যান

১০০ শিক্ষার্থী ও ১৩ জন শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু হয় শাবিপ্রবির। বর্তমানে এই উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় আট হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও ৬০০-এর মতো শিক্ষক রয়েছেন। তাদের সার্বক্ষণিক সেবা নিশ্চিতের জন্য রয়েছেন ৭০০ কর্মকর্তা।

উদ্ভাবনে যেন সেরাদের সেরা

নিত্যনতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করছেন শাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। উদ্ভাবনে তাদের অর্জনের ঝুলিতে যেন কমতি নেই। ২০০৯ সালে শাবিপ্রবিতেই প্রথমবারের মতো দেশে এসএমএসভিত্তিক ভর্তিব্যবস্থা চালু হয়। এ জন্য আন্তর্জাতিক ও সরকারের স্বীকৃতি মেলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে পুরো দেশে এসএমএসভিত্তিক ভর্তিপদ্ধতি বাস্তবায়ন করে সরকার।

SUST-3

শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন ‘পিপীলিকা’ রয়েছে তালিকায়। বানান সংশোধন, অভিধান, খবরসহ প্রভৃতি কাজ করা যেত এর মাধ্যমে। এতেই থেমে না গিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে শিক্ষার্থী তৈরি করলেন ‘একুশে’ কী-বোর্ড। শব্দানুমান এ যেন ছিল অনন্য প্রতিকৃত।

উদ্ভাবনের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও ছিলেন সহযোগী। মাত্র ১০-২০ মিনিটে ক্যানসার শনাক্ত করা এমন প্রযুক্তি তৈরি করেন একদল শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের তৈরি আরো কয়েকটি সাড়া-জাগানো উদ্ভাবনের মধ্যে রয়েছেÑস্বয়ংক্রিয় গাড়ি ‘অটোমামা’, কথা বলা রোবট ‘রিবো’ ও হাঁটতে পারে রোবট ‘লি’, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য স্বল্পমূল্যের ই-ব্রেইল প্রযুক্তি প্রভৃতি।

এছাড়া আইডিয়া উদ্ভাবনের সুনাম কুড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। অনন্য সব আইডিয়া দিয়ে পুরস্কার পাচ্ছেন এ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা। কারো কারো আইডিয়া এখন বাজারেও জায়গা করে নিয়েছে। এর মধ্যে প্রীতিলতা অন্যতম।

গবেষণা ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

উদ্ভাবনের ও গবেষণায় পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায়ও শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক সফলতা রয়েছে। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আয়োজিত মহাকাশ অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-এ শাবিপ্রবির ‘টিম অলিক’ বিশ্বসেরা চারটি দলের একটি হিসেবে নির্বাচিত হয়, যা বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবজনক অর্জন এনে দেয়।

এছাড়া ২০২০ সালে আয়োজিত জাতীয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের দল ‘ডিফাইন কোডার্স’ চ্যাম্পিয়ন ও ২০২৩ সালে যুব গণিত চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা স্বর্ণপদক লাভ করে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইসিপিসি এশিয়া-পশ্চিম আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় শাবিপ্রবির ‘ফ্যানাটিকস’ দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে।

পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, গণিত ও জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে থাকে। দেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এসব অলিম্পিয়াডে তারা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পুরস্কার অর্জন করেছে।

এছাড়া শাবিপ্রবির শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বহু দেশে শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে যুক্ত রয়েছেন। এটি প্রমাণ করে, শাবিপ্রবি আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছায়।

বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি

ইলেকট্রোকেমিস্ট্রি অ্যান্ড ক্যাটালাইসিস রিসার্চ ল্যাবরেটরি (ইসিআরএল) থেকে ১০ বছরে শুধু শিক্ষার্থীদেরই ১২৫টিরও বেশি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এ রকম প্রতিটি বিভাগেই শিক্ষকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা গবেষণায় যুক্ত হয়ে সাফল্য অর্জন করছেন। শিক্ষকরাও এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরে ২০২৪ সালে সিমাগো র‌্যাংকিংয়ে গবেষণায় দশম এবং সামাজিক প্রভাবে চতুর্থ স্থানে উঠে আসে শাবিপ্রবি। এছাড়া কিউএস র‌্যাংকিংয়ে দেশে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানভিত্তিক পরিমাপক সায়েন্টিফিক ইনডেক্স অনুসারে শিক্ষকদের আন্তর্জাতিক অবস্থান আরো উন্নত হয়েছে। তাদের এই সাফল্য গবেষণার জোরালো ভিত্তি তৈরি করছে।

এছাড়া প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তিন শতাধিক গবেষণাপত্র বিশ্বের বিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হয়ে আসছে।

সবুজে ঘেরা টিলাবেষ্টিত ক্যাম্পাস

শুধু উদ্ভাবন ও গবেষণায় যুক্তই থাকেন না এখানকার শিক্ষার্থীরা। সবুজের ঘেরা এই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আড্ডায় মেতে ওঠেন প্রতিমুহূর্তে । ৩২০ একরের এই ক্যাম্পাসে প্রায় ১২০ এলাকাজুড়ে রয়েছে ছোট টিলা, যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে অনেকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। চারপাশে বনজ গাছ, লতা-পাতায় ক্যাম্পাস আচ্ছাদিত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের সঙ্গে অবস্থিত। সেখান থেকে গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাকে বলা হয় ‘কিলো রোড’। এ রাস্তাটির দুই পাশে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন লেক।

SUST-4

বর্ষার শুরুতে রাস্তার পাশে থাকা জারুলগাছে বেগুনি ফুল ফুটে। এই দৃশ্য এক অনন্য প্রাকৃতিক আবহ তৈরি করে। শত সোপানে শহীদ মিনার শাবিপ্রবির আরেকটি আকর্ষণ। এটি দেশের সবচেয়ে উঁচুস্থানে নির্মিত হওয়া একমাত্র শহীদ মিনার। এই অনন্য বৈশিষ্ট্যের জন্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এটি। নতুন করে যুক্ত হয়েছে শহীদ রুদ্র সেন লেক, যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দ্বীগুণ করেছে। পর্যটকদের জন্য এই ক্যাম্পাস অন্যতম পছন্দের জায়গা।

এসব জায়গায় শিক্ষার্থীরা চড়ুইবাতি, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা কিংবা বারবিকিউ পার্টি করে থাকেন। সবুজ দিয়ে বেষ্টিত থাকায় তাপমাত্রাও তুলনামূরক কম থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক গঠন ও পড়াশোনায় মনোযোগী হতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

চেতনা-৭১

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চেতনা-৭১’ সিলেটের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্য বীর বাঙালির অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক। ২০১১ সালের ৩০ জুলাই শিল্পী মোবারক হোসেন নৃপালের নকশায় নির্মিত এ ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। এতে দেখা যায় জাতীয় পতাকা উঁচিয়ে রাখা এক ছাত্র, যার দৃপ্ত ভঙ্গি যেন বলে, ‘তোমরা আজকের ছাত্র, আগামীর নেতৃত্ব।’ তার পাশে সংবিধানের প্রতীকী বই হাতে এক ছাত্রী জানান দেন, আইন ও সংবিধানই স্বাধীনতা রক্ষার পথ। লাল-কালো সিরামিক ইটে গড়া তিন ধাপে বেদির ওপর নির্মিত এ ভাস্কর্যের উচ্চতা প্রায় ১২ ফুট। শাবিপ্রবির প্রাঙ্গণেই অবস্থিত এই ভাস্কর্য প্রজন্মের চেতনায় জাগিয়ে তোলে বীরত্ব, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ।

শাহজালাল (রহ.) কর্নার

ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি ও দরবেশ শাহজালাল (রহ.) নামে প্রতিষ্ঠিত সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তাকে স্মরণ করে রাখার জন্য ৫ আগস্ট ২০২৫ তারিখে তার নামে একটি কর্নার স্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কর্নারটিতে শাহজালাল (রহ.) ওপর লিখিত বিভিন্ন বই, পুস্তকের পাশাপাশি ওনার ব্যবহৃত প্রতীকী তরবারি রাখা হয়েছে।

SUST-2

আবাসন ও যাতায়াত

শুরুতে একটি আবাসিক হল নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ছয়টি আবাসিক হল। তিনটি মেয়েদের জন্য ও তিনটি ছেলেদের জন্য। আবাসন সংকট নিরসনে দুটি এক হাজার আসনের হল নির্মাণাধীন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধায় রয়েছেÑবাসব্যবস্থা, ফ্রি ইন্টারনেট। আগে আবাসিক হলগুলোয় সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের আধিপত্যের কারণে অনেক অসহায় শিক্ষার্থীই আসন পেতেন না। তবে গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের পর নতুন নিয়ম করে আসন বণ্টন করে কর্তৃপক্ষ। এতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশ নেই। হলে ফিরেছে পড়াশোনার পরিবেশ।

দেশের একমাত্র ক্যাম্পাস শাবিপ্রবি। যেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রয়েছে ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবস্থা।

জুলাই অভ্যুত্থান ও শাবিপ্রবি

দেশের অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই জুলাই অভ্যুত্থানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা রেখেছে সাহসী ভূমিকা। কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বৈরাচার পতন আন্দোলন সবখানেই সিলেটের প্রাণকেন্দ্র ছিল শাবিপ্রবি। সিলেটের প্রথম শহীদ ছিলেন শাবিপ্রবির সাহসী শিক্ষার্থী রুদ্র সেন। ১৪ জুলাই রাতে শেখ হাসিনার ভাষণকে ঘিরে উত্তাল হয় ক্যাম্পাস। ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’—এই স্লোগানে হল থেকে বেরিয়ে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ রাতে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হন অনেকে। ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়।

SUST-5

এ সময় তাদের রুম থেকে উদ্ধার হয় মাদক ও অস্ত্র। ১৮ জুলাই ভোরে প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। ওইদিন দুপুরে প্রধান ফটকে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। বিকালবেলা পুলিশ ও ছাত্রলীগের দাওয়ায় খালে পড়ে শহীদ হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুদ্র সেন। কিন্তু শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা দমে না গিয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সিলেটের আপামর জনতা।

২৬ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রুদ্র সেনের স্মরণে প্রধান ফটকের নামকরণ করে শহীদ রুদ্র তোরণ। তাছাড়া জুলাই আন্দোলনে তার ভূমিকা স্মরণীয় করে রাখার জন্য তার নামে নতুন লেকের নামকরণ করেন।

পিছিয়ে নেই সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমেও

শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য অর্ধশতাধিক সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, দক্ষতাভিত্তিক সংগঠন রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেÑশাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় স্মৃতিসংসদ, স্বপ্নোত্থান, কিন, থিয়েটার সাস্ট, সাহিত্য সংসদ, ক্যারিয়ার ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, ডিবেটিং ক্লাব, স্পোর্টস সাস্টসহ নানা সংগঠন। এসব সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সুপ্ত দক্ষতায় পারদর্শী হয়ে ওঠে। এ ছাড়া এসব সংগঠন নিয়মিতই ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকে। এতে সবসময় ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীমুখর হয়ে ওঠে।

উপাচার্যের বক্তব্য

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একসঙ্গে প্রায় বিশটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার কাজ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান এবং দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা, গবেষণা, ল্যাব ও শ্রেণিকক্ষের কোনো সংকট থাকবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সেলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং নতুন করে ১৩টি বিভাগ চালুর অনুমোদনের আবেদন করা হয়েছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে; এ বছর পিএইচডি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ছয় হাজার থেকে বাড়িয়ে ত্রিশ হাজার করা হয়েছে এবং গবেষণার জন্য বিভিন্ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। আগের উপাচার্য কর্তৃক আটকে রাখা প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর বৃত্তি আবার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক সিস্টেম মেরামত, উন্নত ইন্টারনেট সুবিধার জন্য অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনসহ সর্বোপরি শাবিপ্রবিকে একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত