বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ডাকসু ব্যালট পেপার নিয়ে অভিযোগ ভিত্তিহীন, তদন্ত চলমান

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ১১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন ২০২৫ এ হেরে যাওয়া প্রার্থীদের নানা অভিযোগ ও আবেদনপত্রের বিষয়ে নিজেদের আনুষ্ঠানিক অবস্থান জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পরে এসে ব্যালট পেপার নিয়ে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগগুলো আন্তরিকতার সাথে তদন্ত করছে।

প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট ও প্রক্রিয়াগত দাবিগুলো বিবেচনা করে আইনগত মতামতের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার ডাকসু নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) কিছু ছাত্র-সংগঠন সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে কারচুপি, অনিয়ম এবং প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ তোলে। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করছে।

ব্যালট পেপার মুদ্রণ নিয়ে অভিযোগ অস্বীকার:

এক প্রার্থীর অভিযোগ ছিল, ব্যালট পেপার নীলক্ষেত বা অনিরাপদ স্থানে মুদ্রিত হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি ব্যালট পেপার প্রিন্ট করে ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যানিং করে পাঠযোগ্যতা নিশ্চিত করার পর সিলগালা অবস্থায় সরবরাহ করে।

কমিশনের মতে, “যে প্রক্রিয়ায় ব্যালট পেপার মুদ্রণ হয়েছে, তাতে কোনভাবেই অনিয়মের সুযোগ নেই। প্রতিটি ধাপে কঠোর তত্ত্বাবধান ও নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ ছিল। নির্বাচনের আগে-পরে কিংবা গণনার সময়ও প্রার্থীদের এজেন্ট, পর্যবেক্ষক বা সাংবাদিক কেউ এ নিয়ে আপত্তি তোলেননি।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পরে এসে ব্যালট পেপার নিয়ে অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযোগগুলো আন্তরিকতার সাথে তদন্ত করছে।

সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে ব্যাখ্যা:

নির্বাচন কমিশন জানায়, নির্বাচনের দিন ধারণকৃত ও সংরক্ষিত সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমানত হিসেবে সংরক্ষিত। এটি কোন পাবলিক ডকুমেন্ট নয়। আবেদনকারীরা ফুটেজ চাইলেও তাঁদের দরখাস্তে নির্দিষ্ট কোন সময়, ঘটনা বা প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ না থাকায় তা অস্পষ্ট (vague) বলে মনে করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনের ভাষ্য, “কতিপয় দরখাস্তে কেবলমাত্র কিছু সাধারণ ও ব্যাপক প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই।”

তবে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেছে, কোন প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট সময় বা প্রাসঙ্গিক ঘটনা যাচাইয়ের জন্য সিসিটিভি দেখতে চান, তবে তাঁরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে বিশেষজ্ঞ ও মনোনীত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত স্থানে ফুটেজ পর্যালোচনা করতে পারবেন।

ভোটার তালিকা প্রদানে ‘না’:

ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা প্রদানের দাবিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘স্পর্শকাতর ও গোপনীয়’ বলে অভিহিত করেছে। প্রশাসন জানায়, এটি কোন পাবলিক ডকুমেন্ট নয় এবং ডাকসু নির্বাচনী বিধিতে এর কপি দেওয়ার কোন বিধান নেই।

তাছাড়া আবেদনপত্রে এ তালিকার প্রয়োজনীয়তা বা উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার স্বার্থে তালিকা প্রদানে কর্তৃপক্ষ সবিনয়ে অপারগতা প্রকাশ করেছে।

অভিযোগ যাচাই শেষে জবাব দেওয়া হবে:

নির্বাচন নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতোমধ্যে সব আবেদন ও অভিযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়েছে। প্রতিটি দরখাস্তের বিষয়ে যথাসময়ে আবেদনকারীদের পৃথকভাবে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের উপ-পরিচালক ফররুখ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন জানায়, নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ওঠা অনেক অভিযোগই ভিত্তিহীন। তবুও প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট ও প্রক্রিয়াগত দাবিগুলো বিবেচনা করে আইনগত মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত