ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

পানিতে ডুবে নয়, হত্যা করা হয়েছে সাজিদকে

প্রতিনিধি, ইবি
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১০: ১৩
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৫, ১১: ০৮

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়নি, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদন ও ময়নাতদন্ত রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।

গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল-সংলগ্ন পুকুরে ভেসে ওঠে সাজিদের লাশ। মৃত্যুর আগের দিন বিকেলেও তাকে ক্যাম্পাসে দেখা গেছে। হঠাৎ তার মৃত্যুর খবরে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিজ্ঞাপন

সাজিদের পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছিলেন এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সাজিদ ছিলেন ভালো সাঁতারু। একজন ভালো সাঁতারু কীভাবে পানিতে ডুবে মারা গেল- সেই প্রশ্ন ছিল মুখে মুখে? তবে তখনও হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রথমে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে বিক্ষোভে নামে। এরপর ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যা প্রমাণিত হওয়ায় আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্র সংগঠনগুলো। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও শুরু হয়েছে সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ইবি প্রশাসনের গঠন করা পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির তদন্তে উঠে আসে, যেদিন সাজিদকে শেষবার দেখা গেছে, ওই দিন রাতেও তার মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি রিসিভ হয়। একটি কলের লোকেশন ছিল শেখপাড়া বসন্তপুর এলাকায়। পরবর্তী কলের লোকেশন ছিল বিজ্ঞান ভবনের আশপাশে।

এত দ্রুত অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়টিও কমিটির কাছে সন্দেহজনক বলে মনে হওয়ায় এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তারা ঘটনাটিকে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করার জন্য সুপারিশ করেন।

শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে চলেছেন।

তাদের দাবি, সাজিদের হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে পিবিআই অথবা সিআইডি-কে দায়িত্ব দেওয়া হোক। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার, সাজিদের পরিবারকে প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা প্রদান করার দাবিও করছেন তারা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত