ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ অক্টোবর ‘শরৎ উৎসব ১৪৩২’

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ২৮

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩টায় চারুকলা অনুষদের তত্ত্বাবধানে বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব ১৪৩২’ অনুষ্ঠিত হবে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, নৃত্যকলা বিভাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় শরৎ উৎসব আয়োজনের জন্য সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীকে দেওয়া ভেন্যু বরাদ্দ অবশেষে বাতিল করা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গোষ্ঠীটি আবেদন করার সময় ‘তথ্য গোপন’ করেছে এবং বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।

বিজ্ঞাপন

শনিবার সকালে অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভা শেষে ডিন সাংবাদিকদের জানান, তাদের সম্পর্কে অনুসন্ধান ও যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী তথ্য গোপন রেখে শরৎ উৎসব আয়োজনের অনুমতির আবেদন করেছিল। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় তাদের বিতর্কিত ভূমিকা বিবেচনায় নিয়ে উৎসবের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের শিল্প-সংস্কৃতির মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যকে লালন করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উদ্যোগে শরৎ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকাল ৩টায় চারুকলা অনুষদের তত্ত্বাবধানে বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব ১৪৩২’ অনুষ্ঠিত হবে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, নৃত্যকলা বিভাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

চারুকলা অনুষদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ৯ অক্টোবর ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীসমাজ’ নামের একটি সংগঠন লিখিতভাবে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, গোষ্ঠীটির আয়োজক ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে পরিচিত এবং বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সহযোগী ছিলেন।

অভিযোগের পরদিন চারুকলার প্রধান ফটকে এ সংক্রান্ত পোস্টারও লাগানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আয়োজকদের বিষয়ে প্রাপ্ত ছবিসহ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তারা বিগত স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। এতে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই প্রথমে অনুষ্ঠান স্থগিত এবং পরবর্তীতে বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন , আবেদনপত্রে যা যা প্রয়োজন, সবই আমরা দিয়েছিলাম। সেভাবেই অনুমতি পেয়েছিলাম। এখন বলছে আমরা তথ্য গোপন করেছি- এটা আমাদের বোধগম্য নয়। প্রায় ১৯ বছর ধরে আমরা শরৎ উৎসব পালন করছি। এটা কখনোই রাজনৈতিক আয়োজন ছিল না।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃতির মধ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত কিছু নাই। আমরা প্রকৃতির বন্দনা নিয়ে কাজ করি। এরকম উৎসব বন্ধ করে কার লাভ হলো, বুঝতে পারছি না। তবে প্রকৃতি নিজের নিয়মেই তাদের জবাব দেবে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চারুকলা অনুষদ কর্তৃপক্ষ ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পীসমাজ’-এর অভিযোগ পাওয়ার পর শরৎ উৎসব স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর আয়োজকরা বিকল্প ভেন্যু হিসেবে গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেন। কিন্তু সেখানে ‘বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায়’ পুলিশ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় বলে জানান গোষ্ঠীর সদস্যরা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত