নকল গবেষণাপত্র বিতর্ক: শেকৃবি ভিসির সিভিতেই যুক্ত ছিল সেই প্রবন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৩১

অনুমতি ছাড়াই শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফের নাম ব্যবহার করে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গবেষণাপত্রটি অন্য একটি প্রবন্ধের সঙ্গে ৯৮ শতাংশ মিল থাকায় মেধাস্বত্ব চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ ওঠে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ২০১৭ সালে প্রোগ্রেসিভ এগ্রিকালচার জার্নালে ঢাকা শহরের মশার প্রজাতি নিয়ে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান (NIPSOM)-এর গবেষক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সারোয়ার। ওই প্রবন্ধের মূল লেখক হিসেবে উপাচার্য ড. আব্দুল লতিফের নামও উল্লেখ করা হয়।

কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, প্রবন্ধটির বিষয়বস্তু ২০১৪ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশারের প্রকাশিত এক গবেষণার সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যায়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার রোববার (১৯ অক্টোবর) শেকৃবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠান।

নোটিশে বলা হয়, অনুমতি ছাড়া তার গবেষণাকর্ম ব্যবহার করে উপাচার্যের নাম যুক্ত করা হয়েছে, যা মেধাস্বত্ব লঙ্ঘনের শামিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ বলেন, “গবেষণাপত্রে আমার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আমি তা জানতাম না। জার্নাল থেকেও এ বিষয়ে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। আমার এক পিএইচডি শিক্ষার্থী প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছে, যেখানে আমাকে না জানিয়ে সহলেখক হিসেবে নাম দিয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর ড. সারোয়ার আমার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্যের ব্যবহৃত ১৪ পৃষ্ঠার একাডেমিক সিভির ১১তম পৃষ্ঠায় বিতর্কিত প্রবন্ধটি যুক্ত ছিল।

এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও তার প্রোফাইলে এটি তালিকাভুক্ত ছিল। তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সোমবার রাতে সেটি ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের জানান, ‘অধ্যাপক লতিফের অনুমতি ছাড়াই আমি তার নাম প্রবন্ধে যুক্ত করেছি। তিনি এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন না। এজন্য আমি নিঃশর্তভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে অধ্যাপক আব্দুল লতিফের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি সম্পন্ন করেন ড. মো. গোলাম সারোয়ার। পরে তিনি তার গবেষণাটি জার্নালে প্রকাশ করেন। যদিও সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি নীতিমালায় প্রকাশনা বাধ্যতামূলক ছিল না।

বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অনুমতি ছাড়া নাম সংযুক্ত করা এবং সেটি উপাচার্যের সরকারি প্রোফাইলে ব্যবহার করায় বিষয়টি প্রশাসনিক ও নৈতিক প্রশ্নের মুখে ফেলেছে শেকৃবি কর্তৃপক্ষকে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত