কবির কাঞ্চন
সকালে ঘুম থেকে উঠে শুদ্ধ বাবার হাত টেনে টেনে বলল, ‘আব্বু, ওঠো, ওঠো না। সকাল ১০টা বেজে গেছে। এত দেরি করে ওঠা ভালো নয়।’
হায়দার সাহেব ছেলের মুখের দিকে ঘুমঘুম চোখে তাকিয়ে বললেন, ‘বাবা এসো, আরেকটু ঘুমিয়ে নিই। আজ শুক্রবার। অফিস বন্ধ।’
শুদ্ধ চোখ কপালে উঠিয়ে বলল, ‘এ কী কথা, বাবা! তুমিই তো শেখালে, ভোরে ঘুম থেকে না উঠলে শরীর খারাপ হয়ে যায়। নানা রোগবালাই আমাদের দেহে ভর করে।’
আড়মোড়া ভেঙে হায়দার সাহেব উঠে বসলেন। এরপর শুদ্ধের মুখের দিকে এক মুহূর্ত নির্বাক তাকিয়ে থেকে মৃদু হাসলেন। শেষে হাত দুটো ওর দিকে বাড়িয়ে দিলে শুদ্ধ বাবার বুকের ভেতর পরমানন্দে আশ্রয় নিল।
এবার হায়দার সাহেব আস্তে করে বললেন, ‘বাবা, তুমি যা বলেছ, তা-ই ঠিক। দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তুমি কি দাঁত ব্রাশ করেছ?’
: হ্যাঁ, বাবা।
: গুড। এখন আব্বুর জন্য অপেক্ষা করো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
এ কথা বলে শুদ্ধর আব্বু ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলেন।
ঘড়িতে ১২টা বাজে। শুদ্ধ গোসল সেরে আজ বাবার মতো পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেছে। ছোট্ট সোনামণি শুদ্ধকে দেখতে ঠিক তার বাবার মতো লাগছে।
হায়দার সাহেব ছেলেকে কোলে তুলে আদর করে বললেন, ‘বাবা, আজ তোমাকে কার মতো লাগছে, বলো তো?’
: আব্বু, আম্মু তো বলেছেন তোমার মতো।
হায়দার সাহেব তার নরম হাতে ছেলের নাক আলতোভাবে নেড়ে দিয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, তোমার আম্মু একদম ঠিক বলেছেন। তবে বড় হয়ে তোমাকে আমার চেয়ে অনেক বড় হতে হবে।’
শুদ্ধ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলল, “আব্বু, আমি বড় হয়ে ‘মুগ্ধ’ হব।”
হায়দার সাহেব একটু থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মুগ্ধ হব’ মানে?
: আমি ‘আবু সাঈদ’ হব।
শুদ্ধ কী বলতে চাইছে তা বুঝতে পেরে হায়দার সাহেব খুশি হয়ে বললেন, ‘এবার বুঝেছি, বাবা। তুমি কি ওদের চেন?’
: হ্যাঁ, খুব ভালো করে চিনি।
: তাহলে বলো তো ওরা কারা?
: ওরা শহীদ। ওরা আমাদের শক্তি। ওদের মতো করে আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
হায়দার সাহেব হাততালির আওয়াজ শুনে পাশে তাকিয়ে দেখেন শুদ্ধের মা জেসমিন আরা পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার চোখেমুখে বিজয়ের হাসি। ছেলের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করে তিনি বললেন, “আমাদের শুদ্ধ বড় হয়ে একজন আদর্শ নাগরিক হবে।
জুলাই-আগস্টের সময়ের লোমহর্ষক সেই ঘটনাগুলো ও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমার কাছ থেকে জানতে চায়। একাত্তরের কাহিনি শুনতে চায়। জানো, সেদিন ফেসবুকে মুগ্ধের ঘুরে ঘুরে বীরযোদ্ধাদের পানি খাওয়ানোর দৃশ্য দেখার পর থেকে ও প্রায়ই আমাকে বলে, আমি ‘মুগ্ধ’ হব। সব বীর সন্তানকে পানি পান করাব। আবার দেশ বাঁচাতে আবু সাঈদের বুক পেতে দিয়ে আত্মাহুতির দৃশ্য দেখে ও প্রায় আমার কাছে এসে দুদিকে দুহাত প্রসারিত করে বলে, আমি ‘আবু সাঈদ’। মারো আমাকে। তবু আমার দেশের ক্ষতি করো না।” ওর এমন আচরণে আমি মা হিসেবে খুবই গর্ব বোধ করি।
হায়দার সাহেব শুদ্ধের হাত ধরে বললেন, ‘শোনো বাবা, তুমি আমাদের অহংকার। আমরাও চাই, তুমি মানুষের মতো মানুষ হয়ে বড় হও।’
এরপর স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এই শোনো, নামাজের সময় হয়ে যাচ্ছে। আমরা মসজিদের দিকে চলে যাচ্ছি। তুমি আজ ভালো কিছু রান্না করো।’
: ভালো কিছু মানে?
: আমি আসার সময় কয়েকজন অসহায় মানুষ নিয়ে আসব। আমাদের মসজিদের ইমাম আর মুয়াজ্জিন সাহেবকেও নিয়ে আসব। জুলাই-আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া কামনা করে তাদের খাওয়াতে চাই।
: ভালো কথা। কিন্তু এখন বললে কি তারা আসবেন?
: এজন্যই তো আগে আগে মসজিদের দিকে যাচ্ছি।
: কজনকে বলবে?
: দশজন ধরে রাখতে পার।
: ঠিক আছে।
শুদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদের দিকে হাঁটতে লাগলেন হায়দার সাহেব। শুদ্ধ হঠাৎ বাবার হাত টেনে ধরে বলল, “আব্বু, তুমিও কি বড় হয়ে আমার মতো ‘মুগ্ধ-আবু সাঈদ’ হবে?”
হায়দার সাহেব শুদ্ধকে কোলে তুলে আদর করে বললেন, “আমরা সবাই ‘মুগ্ধ’ হব। ‘আবু সাঈদ’ হব। জুলাই-আগস্টের বীর হব। আর তাদের অবদানকে স্মরণ করে তাদের জন্য স্রষ্টার কাছে দোয়া করব।”
শুদ্ধ আনন্দিত হয়ে বলল, ‘আমিও নামাজ শেষে মোনাজাতে তাদের জন্য দোয়া করব।’
সকালে ঘুম থেকে উঠে শুদ্ধ বাবার হাত টেনে টেনে বলল, ‘আব্বু, ওঠো, ওঠো না। সকাল ১০টা বেজে গেছে। এত দেরি করে ওঠা ভালো নয়।’
হায়দার সাহেব ছেলের মুখের দিকে ঘুমঘুম চোখে তাকিয়ে বললেন, ‘বাবা এসো, আরেকটু ঘুমিয়ে নিই। আজ শুক্রবার। অফিস বন্ধ।’
শুদ্ধ চোখ কপালে উঠিয়ে বলল, ‘এ কী কথা, বাবা! তুমিই তো শেখালে, ভোরে ঘুম থেকে না উঠলে শরীর খারাপ হয়ে যায়। নানা রোগবালাই আমাদের দেহে ভর করে।’
আড়মোড়া ভেঙে হায়দার সাহেব উঠে বসলেন। এরপর শুদ্ধের মুখের দিকে এক মুহূর্ত নির্বাক তাকিয়ে থেকে মৃদু হাসলেন। শেষে হাত দুটো ওর দিকে বাড়িয়ে দিলে শুদ্ধ বাবার বুকের ভেতর পরমানন্দে আশ্রয় নিল।
এবার হায়দার সাহেব আস্তে করে বললেন, ‘বাবা, তুমি যা বলেছ, তা-ই ঠিক। দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তুমি কি দাঁত ব্রাশ করেছ?’
: হ্যাঁ, বাবা।
: গুড। এখন আব্বুর জন্য অপেক্ষা করো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
এ কথা বলে শুদ্ধর আব্বু ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলেন।
ঘড়িতে ১২টা বাজে। শুদ্ধ গোসল সেরে আজ বাবার মতো পাঞ্জাবি-পায়জামা পরেছে। ছোট্ট সোনামণি শুদ্ধকে দেখতে ঠিক তার বাবার মতো লাগছে।
হায়দার সাহেব ছেলেকে কোলে তুলে আদর করে বললেন, ‘বাবা, আজ তোমাকে কার মতো লাগছে, বলো তো?’
: আব্বু, আম্মু তো বলেছেন তোমার মতো।
হায়দার সাহেব তার নরম হাতে ছেলের নাক আলতোভাবে নেড়ে দিয়ে বললেন, ‘হ্যাঁ, তোমার আম্মু একদম ঠিক বলেছেন। তবে বড় হয়ে তোমাকে আমার চেয়ে অনেক বড় হতে হবে।’
শুদ্ধ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলল, “আব্বু, আমি বড় হয়ে ‘মুগ্ধ’ হব।”
হায়দার সাহেব একটু থেমে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘মুগ্ধ হব’ মানে?
: আমি ‘আবু সাঈদ’ হব।
শুদ্ধ কী বলতে চাইছে তা বুঝতে পেরে হায়দার সাহেব খুশি হয়ে বললেন, ‘এবার বুঝেছি, বাবা। তুমি কি ওদের চেন?’
: হ্যাঁ, খুব ভালো করে চিনি।
: তাহলে বলো তো ওরা কারা?
: ওরা শহীদ। ওরা আমাদের শক্তি। ওদের মতো করে আমরা আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।
হায়দার সাহেব হাততালির আওয়াজ শুনে পাশে তাকিয়ে দেখেন শুদ্ধের মা জেসমিন আরা পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার চোখেমুখে বিজয়ের হাসি। ছেলের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করে তিনি বললেন, “আমাদের শুদ্ধ বড় হয়ে একজন আদর্শ নাগরিক হবে।
জুলাই-আগস্টের সময়ের লোমহর্ষক সেই ঘটনাগুলো ও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমার কাছ থেকে জানতে চায়। একাত্তরের কাহিনি শুনতে চায়। জানো, সেদিন ফেসবুকে মুগ্ধের ঘুরে ঘুরে বীরযোদ্ধাদের পানি খাওয়ানোর দৃশ্য দেখার পর থেকে ও প্রায়ই আমাকে বলে, আমি ‘মুগ্ধ’ হব। সব বীর সন্তানকে পানি পান করাব। আবার দেশ বাঁচাতে আবু সাঈদের বুক পেতে দিয়ে আত্মাহুতির দৃশ্য দেখে ও প্রায় আমার কাছে এসে দুদিকে দুহাত প্রসারিত করে বলে, আমি ‘আবু সাঈদ’। মারো আমাকে। তবু আমার দেশের ক্ষতি করো না।” ওর এমন আচরণে আমি মা হিসেবে খুবই গর্ব বোধ করি।
হায়দার সাহেব শুদ্ধের হাত ধরে বললেন, ‘শোনো বাবা, তুমি আমাদের অহংকার। আমরাও চাই, তুমি মানুষের মতো মানুষ হয়ে বড় হও।’
এরপর স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘এই শোনো, নামাজের সময় হয়ে যাচ্ছে। আমরা মসজিদের দিকে চলে যাচ্ছি। তুমি আজ ভালো কিছু রান্না করো।’
: ভালো কিছু মানে?
: আমি আসার সময় কয়েকজন অসহায় মানুষ নিয়ে আসব। আমাদের মসজিদের ইমাম আর মুয়াজ্জিন সাহেবকেও নিয়ে আসব। জুলাই-আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া কামনা করে তাদের খাওয়াতে চাই।
: ভালো কথা। কিন্তু এখন বললে কি তারা আসবেন?
: এজন্যই তো আগে আগে মসজিদের দিকে যাচ্ছি।
: কজনকে বলবে?
: দশজন ধরে রাখতে পার।
: ঠিক আছে।
শুদ্ধকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদের দিকে হাঁটতে লাগলেন হায়দার সাহেব। শুদ্ধ হঠাৎ বাবার হাত টেনে ধরে বলল, “আব্বু, তুমিও কি বড় হয়ে আমার মতো ‘মুগ্ধ-আবু সাঈদ’ হবে?”
হায়দার সাহেব শুদ্ধকে কোলে তুলে আদর করে বললেন, “আমরা সবাই ‘মুগ্ধ’ হব। ‘আবু সাঈদ’ হব। জুলাই-আগস্টের বীর হব। আর তাদের অবদানকে স্মরণ করে তাদের জন্য স্রষ্টার কাছে দোয়া করব।”
শুদ্ধ আনন্দিত হয়ে বলল, ‘আমিও নামাজ শেষে মোনাজাতে তাদের জন্য দোয়া করব।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
২২ মিনিট আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
১ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে