
মো. সিয়াম আকন

আমাদের ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলন এসব ঘটনার অন্যতম। এদিন মাতৃভাষা বাংলা করার দাবিতে প্রাণ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন দেশপ্রেমী ও ভাষাপ্রেমী মানুষ।
মাতৃভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ২১ ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এর যে গৌরবময় অধ্যায় রয়েছে, তা পৃথিবীর বুকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আছে। কারণ বিশ্বে এখন পর্যন্ত আমরাই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি-বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে মহান ২১ ফেব্রুয়ারির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে। এর পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে।
২১ ফেব্রুয়ারি কী ঘটেছিল?
সেদিন, অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে অবস্থান করলে পুলিশ তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্র ও যুবক হতাহত হন। শোকাবহ এ ঘটনার প্রতিবাদে পুরো পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের পরও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বের হয়ে আসে। তারা ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’-সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়।
ছাত্রদের আন্দোলনের পাশাপাশি পূর্ববঙ্গের আইন পরিষদের সদস্যরা ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মতামতকে বিবেচনা করার আহ্বান জানাতে থাকেন। একই সময়ে সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত আইন পরিষদের সদস্যদের সভাস্থল ঘিরে রাখে পুলিশ। এর দুই ঘণ্টা পর ছাত্ররা বাধা পেরিয়ে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে তাদের সতর্ক করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় কিছু ছাত্র বের হতে পারলেও অনেকে পুলিশের বাধার মুখে আটকে পড়ে। ছাত্ররা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় তাদের কয়েকজনকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বেলা ২টার দিকে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। ছাত্ররা প্রথমে আইন পরিষদের সদস্যদের আইনসভায় যোগ দিতে বাধা দিলেও
পরে সিদ্ধান্ত নেন তারা আইনসভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবেন। কিন্তু ছাত্ররা আইনসভার দিকে রওনা হলে ৩টার দিকে পুলিশ ছাত্রাবাসে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে।
গুলিতে আব্দুল জব্বার ও রফিক উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। এ ছাড়া অহিউল্লাহ নামে একজন কিশোরসহ নিহত হন আব্দুস সালাম, আবুল বরকতসহ আরও অনেকে।
এ সময় ছাত্রদের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণ ঘটনাস্থলে আসার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রদের আন্দোলন জনমানুষের আন্দোলনে পরিণত
হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষরাও এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। রেডিওর শিল্পীরা তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে শিল্পী ধর্মঘট আহ্বান করেন।
২১ ফেব্রুয়ারির পরের দিন মিছিল ও বিক্ষোভে সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ১৪৪ ধারা অমান্য করার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ শোক পালন করতে থাকে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে ছাত্রদের মিছিলে যোগ দেন। ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ৩০ হাজার লোকের একটি মিছিল কার্জন হলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পুলিশ একপর্যায়ে গুলিবর্ষণ করে। ওই ঘটনায় সরকারি হিসেবে চারজনের মৃত্যু হয়। বিকালে আরেকটি বিশাল মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়। বিক্ষুদ্ধ জনতা সরকার পক্ষের প্রথম সারির দুটি সংবাদপত্রের প্রেস অফিসে আগুন দেয়।
ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে ওঠে, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তখন থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি জাতীয় ‘শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা বিশ্বজুড়ে সব মানুষের কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আমাদের ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলন এসব ঘটনার অন্যতম। এদিন মাতৃভাষা বাংলা করার দাবিতে প্রাণ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন দেশপ্রেমী ও ভাষাপ্রেমী মানুষ।
মাতৃভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে ২১ ফেব্রুয়ারি শোকাবহ হলেও এর যে গৌরবময় অধ্যায় রয়েছে, তা পৃথিবীর বুকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আছে। কারণ বিশ্বে এখন পর্যন্ত আমরাই ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি-বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালে মহান ২১ ফেব্রুয়ারির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে। এর পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হচ্ছে।
২১ ফেব্রুয়ারি কী ঘটেছিল?
সেদিন, অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে অবস্থান করলে পুলিশ তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্র ও যুবক হতাহত হন। শোকাবহ এ ঘটনার প্রতিবাদে পুরো পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের পরও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় বের হয়ে আসে। তারা ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’-সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়।
ছাত্রদের আন্দোলনের পাশাপাশি পূর্ববঙ্গের আইন পরিষদের সদস্যরা ভাষা সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মতামতকে বিবেচনা করার আহ্বান জানাতে থাকেন। একই সময়ে সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত আইন পরিষদের সদস্যদের সভাস্থল ঘিরে রাখে পুলিশ। এর দুই ঘণ্টা পর ছাত্ররা বাধা পেরিয়ে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি নিলে তাদের সতর্ক করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় কিছু ছাত্র বের হতে পারলেও অনেকে পুলিশের বাধার মুখে আটকে পড়ে। ছাত্ররা ক্যাম্পাস ত্যাগ করার সময় তাদের কয়েকজনকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বেলা ২টার দিকে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। ছাত্ররা প্রথমে আইন পরিষদের সদস্যদের আইনসভায় যোগ দিতে বাধা দিলেও
পরে সিদ্ধান্ত নেন তারা আইনসভায় গিয়ে তাদের দাবি উত্থাপন করবেন। কিন্তু ছাত্ররা আইনসভার দিকে রওনা হলে ৩টার দিকে পুলিশ ছাত্রাবাসে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে।
গুলিতে আব্দুল জব্বার ও রফিক উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। এ ছাড়া অহিউল্লাহ নামে একজন কিশোরসহ নিহত হন আব্দুস সালাম, আবুল বরকতসহ আরও অনেকে।
এ সময় ছাত্রদের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনগণ ঘটনাস্থলে আসার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রদের আন্দোলন জনমানুষের আন্দোলনে পরিণত
হয়। সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষরাও এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। রেডিওর শিল্পীরা তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে শিল্পী ধর্মঘট আহ্বান করেন।
২১ ফেব্রুয়ারির পরের দিন মিছিল ও বিক্ষোভে সারা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ১৪৪ ধারা অমান্য করার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ শোক পালন করতে থাকে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল ত্যাগ করে ছাত্রদের মিছিলে যোগ দেন। ২২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় ৩০ হাজার লোকের একটি মিছিল কার্জন হলের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পুলিশ একপর্যায়ে গুলিবর্ষণ করে। ওই ঘটনায় সরকারি হিসেবে চারজনের মৃত্যু হয়। বিকালে আরেকটি বিশাল মিছিলে পুলিশ হামলা চালায়। বিক্ষুদ্ধ জনতা সরকার পক্ষের প্রথম সারির দুটি সংবাদপত্রের প্রেস অফিসে আগুন দেয়।
ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে ওঠে, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়।
১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। তখন থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি জাতীয় ‘শোক দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যে চেতনায় উদ্দীপিত হয়ে বাঙালিরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষাকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, আজ তা বিশ্বজুড়ে সব মানুষের কাছ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শাকসু বানচালের চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। যদি আগামী সোমবার ভিসি এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করে রোডম্যাপ ঘোষণা না করেন, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের...
৫ ঘণ্টা আগে
সংগঠনের তথ্য, উপহার প্রদান, অনুভূতি বক্স এবং মেহেদি দেওয়ার জন্য উৎসবের ছাউনিতে চারটি আলাদা বুথ। সেখানে ছিল নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। আয়োজকরা নতুন সদস্য আহ্বান ও প্রচারপত্র বিলি করেন। ফটকের সামনে একটি ব্যানারে লেখা, ‛প্রিয় ভাইয়েরা, ভেতরে প্রবেশ ও উঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।’
৫ ঘণ্টা আগে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
৬ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
৭ ঘণ্টা আগে