হঠাৎ জ্বর ও কাঁপুনি আসা সিজনাল ফ্লুয়ের লক্ষণ

এন আই মানিক
প্রকাশ : ১১ জুন ২০২৫, ১৬: ০১
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ০৮: ০০

গ্রীষ্মের শেষে ও শীতের শুরুতে ঋতুভিত্তিক ফ্লু বা সিজনাল ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ লক্ষ করা যায়। প্রতিবছর এ সময়টায় দেশের নানা প্রান্তে হাজার হাজার মানুষ সর্দি-জ্বর, গলাব্যথা, হাঁচি-কাশি ও শরীর ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। ফ্লু নিয়ে আজকের হ্যালো ডাক্তার বিভাগের অতিথি সিঙ্গাপুর খু টেক হসপিটালের ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. আশিক উজ জামান। অনলাইনের মাধ্যমে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এন আই মানিক

বিজ্ঞাপন

প্রশ্ন : মৌসুমি ফ্লু কী এবং মৌসুমি ফ্লু কীভাবে ছড়ায়?

উত্তর : মৌসুমি ফ্লু হলো একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, যা সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে হয়। সংক্রমণ ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে। বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ শহর ও পরিবহন ব্যবস্থার কারণে ফ্লু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া অসচেতনতা, অনিয়মিত হাত ধোয়া ও মুখে মাস্ক না পরার ফলে সংক্রমণের হার বাড়ে।

প্রশ্ন : ফ্লুয়ের লক্ষণগুলো কীভাবে চিনব ?

উত্তর : হঠাৎ জ্বর ও কাঁপুনি আসা। গলাব্যথা বা খুসখুসে কাশিও হতে পারে। মাথা ও শরীর ব্যথা করতে পারে। এ ছাড়া ক্লান্তি বা দুর্বলতাও থাকতে পারে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বমি বা ডায়রিয়াও দেখা যেতে পারে।

প্রশ্ন : কোন কোন ব্যক্তি এই ফ্লুতে বেশি ঝুঁকিতে থাকে?

উত্তর : পাঁচ বছরের নিচের শিশু, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তির, গর্ভবতী নারী, ডায়াবেটিস, কিডনি বা হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এই ফ্লু হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। এ ছাড়া যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদেরও সম্ভাবনা বেশি থাকে।

প্রশ্ন : প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বা প্রতিকার আছে কী?

উত্তর : ঋতুভিত্তিক ফ্লু থেকে বাঁচতে কিছু সহজ ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়া ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢেকে রাখুন এবং টিস্যু ব্যবহারের পর তা ফেলুন। সংক্রমণ ছড়ানোর সময় জনবহুল জায়গা এড়িয়ে চলুন। রোগ হলে বিশ্রাম নিন এবং যথাসময়ে চিকিৎসা নিন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পুষ্টিকর খাদ্য শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন : ফ্লু হলে বাড়িতে থেকে কীভাবে সেরে ওঠা যায়?

উত্তর : অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি পান, প্যারাসিটামলজাতীয় জ্বর ও ব্যথার ওষুধেই ফ্লু সেরে যায় । মৌসুমি ফ্লুর জন্য নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আছে, তবে তা প্রাথমিক অবস্থাতেই গ্রহণ করতে হয়। ঋতুভিত্তিক ফ্লুকে সাধারণ জ্বর ভেবে অবহেলা করা অনুচিত। প্রতিটি নাগরিকের উচিত নিজেদের এবং পরিবারের সুরক্ষায় সচেতন থাকা।

ডা. আশিক উজ জামান

ক্লিনিক্যাল ফেলো, জেনারেল মেডিসিন

খু টেক পুয়াত হসপিটাল, আলেকজান্ড্রা হেলথ, সিঙ্গাপুর

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত