টাইপ না করে লেখার সহজ কৌশল

আবু আহমাদ
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ০২
আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ০৩

বর্তমানে ডিজিটাল যুগে আমরা প্রতিদিন অসংখ্য লেখা লিখি। হোক তা ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বা অফিসের ডকুমেন্ট। কিন্তু সব সময় টাইপ করে লেখা অনেকের কাছে সময়সাপেক্ষ ও ক্লান্তিকর মনে হয়। বিশেষ করে দীর্ঘ লেখা তৈরি করতে গেলে হাতের আঙুল ব্যথা হয়ে যেতে পারে। এ সমস্যার সমাধান দিচ্ছে ভয়েস টাইপিং। যেখানে কীবোর্ডে আঙুল না চালিয়েই শুধু মুখে বলে লেখা তৈরি করা সম্ভব।

ভয়েস টাইপিং মূলত স্পিচ-টু-টেক্সট প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এখানে আপনার উচ্চারিত শব্দগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (NLP)-এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে টেক্সটে রূপান্তরিত হয়। এর ফলে আপনি কথা বলার গতিতে লিখতে পারেন, যা সাধারণ টাইপিংয়ের চেয়ে অনেক দ্রুত। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে সহজ ভয়েস টাইপিং টুল হলো গুগল ভয়েস টাইপিং (Google Voice Typing) । অ্যান্ড্রয়েড ফোনে কীবোর্ডে থাকা মাইক্রোফোন আইকনে ক্লিক করে আপনি কথা বলা শুরু করলেই সেটি লেখা হয়ে যাবে। বাংলাসহ বহু ভাষা সাপোর্ট করে বলে এটি জনপ্রিয়। তবে স্পষ্ট উচ্চারণ ও নিরিবিলি পরিবেশে বললে ফল আরো ভালো হয়।

বিজ্ঞাপন

ডিকটেশন (Dictation) টুল ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ ব্যবহারকারীরা উইন্ডোজ বা ম্যাকের বিল্ট ইন ডিকটেশন ফিচার ব্যবহার করতে পারেন। উইন্ডোজ 10 বা 11-এ ‘Windows + H’ চেপে ডিকটেশন চালু করা যায় আর ম্যাকে ‘Fn’ বাটন দুবার চাপলে Dictation Mode চালু হয়। এ ছাড়া গুগল ডকসেও বিল্ট ইন ভয়েস টাইপিং অপশন আছে। যা লেখক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

যেমন : গুগল ডক্স বা গুগল কীবোর্ড (Gboard) ব্যবহার করে খুব সহজেই ভয়েস টাইপিং করা যায়।

ব্যবহারের ক্ষেত্রও বেশ বৈচিত্র্যময় ব্লগাররা দ্রুত কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। সাংবাদিকরা সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় নোট টাইপ না করেই সংরক্ষণ করতে পারেন। আর যারা শারীরিকভাবে টাইপ করতে অসুবিধা বোধ করেন, তাদের জন্য তো এটি এক বড় আশীর্বাদ। এমনকি শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রবন্ধ লিখতেও ভয়েস টাইপিং ব্যবহার করছে।

তবে ভয়েস টাইপিংয়ে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। উচ্চারণ স্পষ্ট না হলে বা আশপাশে বেশি শব্দ হলে ভুল বানান তৈরি হতে পারে। এছাড়া ইংরেজি ভাষায় এটি সবচেয়ে নির্ভুল হলেও এখন বাংলা ভয়েস টাইপিংও বেশ উন্নত হয়েছে। বিশেষত গুগল ও মাইক্রোসফটের সর্বশেষ আপডেটের ফলে।

ভবিষ্যতে ভয়েস টাইপিং প্রযুক্তি আরো উন্নত হবে। যেখানে শুধু শব্দ নয়, প্রেক্ষাপটও বুঝে সঠিকভাবে বিরামচিহ্ন, অনুবাদ ও বাক্য গঠন করা যাবে। তাই যারা এখনো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেননি, তাদের জন্য এখনই শুরু করার উপযুক্ত সময়। কারণ, কাজের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি এটি প্রযুক্তিকে আরো সহজলভ্য ও সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত