অ্যান্ড্রয়েডে পিডিএফ পড়বেন কোন অ্যাপে

শাকের আনোয়ার
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪৭

প্রযুক্তির উৎকর্ষের এ সময় আমাদের অবসর যাপন ও আনন্দ-বিনোদনের প্রায় সবটাই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছে। কারো সঙ্গে কথা বলা, চ্যাটিং করা, গেম খেলা অথবা গান শোনা থেকে শুরু করে দরকারি-অদরকারি কী-ই বা হাতের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করা যায় না! অনেকে টুকটাক লেখালেখি ছাড়া বই-পুস্তকও পড়েন মোবাইল ফোনে। পিডিএফের ক্ষেত্রে হার্ডকপির মতো বহনের ঝামেলা যেমন পোহাতে হয় না, তেমনি সময় ও টাকা ব্যয় করে লাইব্রেরি থেকে কিনে আনার ঝামেলাও এতে নেই। কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে সবই এখন সহজ হয়ে গিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তবে মোবাইল ফোনে কোন অ্যাপ ব্যবহার করে পিডিএফ পড়বেন? প্লেস্টোরে পিডিএফ রিডার লিখে সার্চ করলে বহু অ্যাপ পাওয়া যাবে। কিন্তু কোনোটার হয়তো ডিজাইন ভালো নয়, কোনোটায় অতিপ্রয়োজনীয় অপশনগুলোই নেই; আর অতিরিক্ত অ্যাড তো তার ওপর আছেই। এই লেখায় অ্যান্ড্রয়েডের দুটি পিডিএফ রিডার নিয়ে কথা বলব।

অ্যাডোব অ্যাক্রোব্যাট রিডার

অ্যান্ড্রয়েডের পিডিএফ রিডারের কথা বলা হলে সর্বপ্রথম যে নামটি বলতে হয় তা হলো অ্যাডোব অ্যাক্রোব্যাট রিডার (Adobe Acrobat Reader)। অ্যাক্রোব্যাট রিডারের ইন্টারফেইস প্রাথমিক ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ করে বানানো হয়েছে। ফলে হঠাৎ করে দেখলেও সহজে ব্যবহার করা যায়। সম্ভবত এ কারণেই অ্যাক্রোব্যাট অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাপের তালিকায় এতটা জনপ্রিয়। প্লেস্টোরে অ্যাপটির ডাউনলোড সংখ্যা পাঁচ শ মিলিয়ন। সংক্ষেপে অ্যাক্রোব্যাটের মৌলিক অপশনগুলো তুলে ধরছি।

অ্যাপটিতে শুরুতেই বেশ কিছু প্রয়োজনীয় অপশন রয়েছে। যেমনÑ পিডিএফে কমেন্ট করা, টেক্সট হাইলাইট করা, ড্রয়িং করা, কিছু লেখা এবং ফিল অ্যান্ড সাইন ইত্যাদি। এ ছাড়া অ্যাক্রোব্যাটে পিডিএফ তৈরি করা, এডিট করা, কম্প্রেস করা, পেজ ক্রপ করা, পেজ অর্গানাইজ করা ও একাধিক পিডিএফ ফাইল মার্জ করাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টুল রয়েছে, যেগুলো প্রায়ই আমাদের প্রয়োজন হয়।

মুন প্লাস রিডার

পিডিএফ পড়ার আরেকটি জনপ্রিয় অ্যাপ হলো মুন প্লাস রিডার (Moon+ Reader)। এই অ্যাপে অবশ্য শুধু পিডিএফই ‍পড়া যায় না; বরং পিডিএফ ছাড়াও ইপাব ও মোবি ইত্যাদি ফরম্যাটও পড়া যায়। তবে অ্যাডোব অ্যাক্রোব্যাটে শুধুই পিডিএফ পড়া যায়। প্লেস্টোরে মুন প্লাস রিডারের ডাউনলোড সংখ্যা ১০ মিলিয়ন।

অ্যাপটি ওপেন করলে শুরুতেই দেখা যাবে রিসেন্ট লিস্ট। তথা সাম্প্রতিক পঠিত বইগুলো এ তালিকায় থাকবে। পেছনের কোনো বই ওপেন করলে সেটি আবার চলে আসবে ‍প্রথমে। এরপর রয়েছে ফেভারিট বা পছন্দ-তালিকা। পছন্দ-তালিকায় যোগ করা সব বই এখানে দেখা যাবে। আরো রয়েছে শেষে স্ট্যাটিক্স অপশনে শুরুতেই দেখাবে শেলফে থাকা বইয়ের সংখ্যা, পঠিত বইয়ের সংখ্যা এবং রিডিং আওয়ার বা সর্বোচ্চ কত ঘণ্টা পড়া হয়েছে তাও দেখা যাবে।

মুন প্লাস রিডারে অন্যান্য রিডারের মতো স্ক্রল করে পৃষ্ঠা পরিবর্তন করতে হয় না; বরং স্ক্রিনের ডান পাশে টাচ করলে পরের পৃষ্ঠায় যায় আর বাম পাশে টাচ করলে পেছনে যায়। আর মাঝখানে টাচ করলে অনরিডিং প্রয়োজনীয় অপশনগুলো দেখা যায়। যেমন ওরিয়েন্টেশন, নাইট মোড, অটো স্ক্রল, ব্রাইটনেস, বুকমার্কস ইত্যাদি ছাড়াও ওপরে বাম পাশের কোনায় আরো অসংখ্য প্রয়োজনীয় অপশন রয়েছে।

মাই শেলফে মোবাইল ফোনে যত বই আছে, সব একত্রে দেখা যায় ওপরে রয়েছে অনুসন্ধান করার সুবিধাও। মাই ফাইলস থেকে নির্দিষ্ট কোনো ফোল্ডার থেকে কোনো বই ওপেন করতে চাইলে ওপেন করা যাবে। নেট লাইব্রেরি অপশন থেকে প্রজেক্ট গুটেনবার্গ (Project Gutenberg), ফিডবুকস (Feedbooks) ও ওপিডিএস উইকি (OPDS WIKI) থেকে বিভিন্ন বই খুঁজে ডাউনলোড করার সুযোগও রয়েছে।

মুন প্লাসের স্ক্রিন ওরিয়েন্টেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ল্যান্ডস্কেপ অথবা পোট্রেইট করা যায়। অ্যাক্রোব্যাটে যে সুবিধা নেই। অ্যাক্রোব্যাটে ওরিয়েন্টেশনের জন্য মোবাইল ফোনের সেন্সর ওরিয়েন্টেশন ব্যবহার করতে হয়, যা অনেকের কাছেই বিরক্তিকর মনে হতে পারে। কারণ সেন্সর ওরিয়েন্টেশনের ক্ষেত্রে মোবাইল বাঁকা করে পোট্রেইট করতে হয়। সেন্সর অনেক সময় ধরতে পারে না। এসব ছাড়াও ইপাব ফরম্যাটের ক্ষেত্রে অ্যাপে পছন্দমতো থিম পরিবর্তন, ফন্ট পরিবর্তন ও ফন্ট সাইজ পরিবর্তন করা যায়।

বিষয়:

পিডিএফ
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত