এমরানা আহমেদ
রাজধানী ঢাকার রাশিদা বেগম একজন রত্নগর্ভা মা। তিন সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ‘রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। আরেক মা পঞ্চরত্নের জননী মোছা. ফরিদা বেগম। নিজে শিক্ষিত না হয়ে পাঁচ সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য তিনিও রত্নগর্ভা মায়ের খেতাব অর্জন করেন।
সর্বগুণে গুণান্বিত এই রত্নগর্ভা মায়েদের বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত করা কঠিন। বলতে গেলে, একজন পরিপূর্ণ মায়ের প্রতিচ্ছবিই এই রত্নগর্ভা মায়েরা। তারা নিজের সন্তানদের মধ্যে স্বপ্নবীজ বপন করেন, বীজ বপন করেই ক্ষ্যান্ত হন না এই মায়েরা, তাদের সব ধরনের পরিচর্যা করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এমনই ত্যাগী আর আত্মপ্রত্যয়ী আমাদের এক-একজন রত্নগর্ভা মা।
এই রত্নগর্ভা মায়েদের সন্তানরাই পারে সমৃদ্ধ দেশ, সমাজ আর মর্যাদাশীল একটি পরিপূর্ণ জাতি উপহার দিতে। সমাজে সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করে বাস্তবে এর স্বাক্ষর রেখেছেন আমাদের রত্নগর্ভা মায়েরা। এ বছর ১১ মে রোববার বিশ্ব মা দিবসের এই বিশেষ দিনে আমরা সব মাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানো হয়।
রাশিদা বেগম, মোছা. ফরিদা বেগমসহ এ বছর একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ ৩৫ জন নারীকে ‘রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-২৪’ পদক দেওয়া হয়েছে। এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের প্রবক্তা আজাদ প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড। বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা গত ১১ মে রোববার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে ২৫ জন নারীকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে এবং ১০ জন নারীকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেয়। সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছরেই সফল মায়েদের এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
সাধারণ ক্যাটাগরিতে সম্মানিত মায়েরা হলেন- মারতুজা নুসরাত, মোছা. ফরিদা বেগম, রাশিদা বেগম, নাসিমা মান্নান চৌধুরী, বিবি মরিয়ম, রোকেয়া খানম, পিয়ারা বেগম, আফরোজা পারুল, রোকসানা আক্তার, হাসিনা আক্তার, বেগম সালেহা করিম, ফাতিমা নার্গিস, আঞ্জুমান আরা বেগম, সালমা আলম, মোছা. জোবেদা খানম, মোছা. রাজিয়া বেগম, মোছাম্মৎ মাহমুদা বেগম, কিশোয়ার জাহান, মোসা. ফাতেমা বেগম, সুরাইয়া চৌধুরী, রাবেয়া পারভীন বানু, আদরিনী সরকার, হাছিনা আক্তার, মনোয়ারা বেগম ও অ্যাডভোকেট হালিমা আক্তার।
বিশেষ ক্যাটাগরিতে যারা রয়েছেন : শাহানা সিরাজ, মোসা. মুসলিমা খানম রানা, স্মৃতি কণা বড়ুয়া, খাদিজা খন্দকার, ফাতেমা আলম শাহানা, সাহানা আকতার চৌধুরী, অলকা ঘোষ, শামছুন্নাহার হোসেন, মোছা. ফরিদা বেগম ও সৈয়দা দিলরুবা খানম।
ঢাকা ক্লাবে অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আমার দেশ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রত্নগর্ভা মা রাশিদা বেগমের সঙ্গে। আলাপচারিতায় তিনি জানান, ১৯৫০ সালে ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৬৯ সালের ১৩ মার্চ কুমিল্লা নিবাসী বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বোর্ডের সহকারী পরিচালক মো. খুরশীদ আলমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর মায়ের কোলজুড়ে আসে একে একে চার সন্তান। তাদের একজন দেড় বছর বয়সে মারা যায়। ১৯৭৪ সালে বিএ পাস করে স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। পরে বিএড ডিগ্রি লাভ করেন।
মা রাশিদা বেগমের প্রথম সন্তান বাকীউল আলম, স্নাতকোত্তর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক, (ফিন্যান্স) বসুন্ধরা গ্রুপ, বর্তমানে উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী, শিশুদের ছড়া সাহিত্য অঙ্গনেও বাকীউল আলমের নিরন্তর পদচারণে, দ্বিতীয় সন্তান রাফিউল আলম, এমবিবিএস, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ বরিশাল, মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইন হেলথ ইকোনমিকস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, তৃতীয় সন্তান ফারজানা আফরোজ শিপা এমবিবিএস, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সিলেট, এফসিপিএস (চাইল্ড) ডিপ্লোমা ইন চাইল্ড হেলথ, ড. এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক। মা নিজে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চেয়েছিলেন সন্তানদেরও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে।
অনুষ্ঠানে কথা হয়, পঞ্চরত্নের জননী মোছা. ফরিদা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৯৭২ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদ উদ্দিনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মঙ্গাপীড়িত নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার প্রত্যন্ত কয়াগোলাহাটে মায়ের সংসার জীবন শুরু হয়। সদ্য মুক্তিযুদ্ধ ফেরত স্বামীর ছিল না স্থায়ী কোনো কর্মসংস্থান। স্বামী নিজের পছন্দে বিয়ে করায় শাশুড়ির অপছন্দের পাত্রী ছিলেন তিনি। ফরিদা বেগম ছিলেন দূরদর্শী। তিনি যেকোনো প্রতিকূলতার মধ্যেই সবকিছু মানিয়ে নিতে পারতেন। ১৯৭৩ সালে মায়ের কোলজুড়ে আসে প্রথম সন্তান। তখন থেকে মা স্বপ্ন দেখতেন একদিন তিনি সফল হবেন, নিজ সন্তানদের মধ্যে। সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার।
স্বামী স্থানীয় সৈয়দপুর পৌরসভায় একটি ছোট পদে চাকরি পান, শুরু হয় মায়ের নতুন সংগ্রাম। স্বল্প বেতনে সংসার চালানো। এরই মধ্যে মায়ের কোলজুড়ে আসে একে একে আরো চার সন্তান। অভাবের সংসারে আত্মীয়স্বজন বড় ছেলেকে কাজে লাগিয়ে দিতে বলে। কিন্তু সন্তানদের পড়াশোনা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে মা ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে বাড়িতে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালনপালন করতেন।
বাড়ির আঙিনায় শাকসবজি চাষ করতেন। এভাবে সংসারে বিভিন্ন আয়ের পথ খুঁজতেন। মা নিজে বেশি পড়াশোনা না জানলেও মায়ের কড়া নজরদারিই ছিল সন্তানদের ভয়ের কারণ। আর এভাবেই মা একেক সন্তানের প্রতি একেকভাবে শ্রম দিয়েছেন। আর এভাবেই মা একেক সন্তানের প্রতি একেকভাবে শ্রম দিয়েছেন। মায়ের এই শ্রমই সন্তানদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন। মোছা. ফরিদা বেগমের প্রথম সন্তান নীলফামারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক, দ্বিতীয় সন্তান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, তৃতীয় সন্তান সহকারী শিক্ষক, চতুর্থ সন্তান উপসচিব ও পঞ্চম সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাস্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন। এ ছাড়া বিশেষে অতিথি ছিলেন কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াত, সবুর খান, আজাদ প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
আজাদ প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার মা আমার ভালোবাসা’ এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ২০০৩ সাল থেকে আজাদ প্রোডাক্টসের পক্ষ থেকে প্রতিবছরের মতো এবার ২২তম বছরের অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। যে মায়েরা কঠিন শ্রম ও মন্ত্রমুগ্ধ দীক্ষা দিয়ে সন্তানের মানুষের মতো মানুষ করেছেন, দেশ-বিদেশে আলোকিত ও বিকশিত করেছেন, প্রতিবছর তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়ে থাকে।
তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, বহু মানুষের ভালোবাসায় গড়ে ওঠা সাফল্যের প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রোডাক্টস। তবে এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি আমার মা। তাই তো মায়েদের প্রতি ভালোবাসা ও দেশের সার্বিক শিক্ষা প্রসারের নেপথ্য শক্তি মায়েদের আরো সচেতন করার মানসে আমাদের এই আয়োজন ‘আজাদ প্রোডাক্টস, রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠান।
এই মায়েরাই সমাজে তাদের সন্তানদের সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার নিপুণ স্থপতি। আজ আমাদের ২১তম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ২০০৩ সাল থেকে এই অনুষ্ঠানটি করে আসছি। যতই দিন যাচ্ছে, অনুষ্ঠানটির জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আয়োজন যদি একজন মাকেও অনুপ্রাণিত করে, তবে আমাদের উদ্দেশ্য সার্থক হবে।
রাজধানী ঢাকার রাশিদা বেগম একজন রত্নগর্ভা মা। তিন সন্তানকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর ‘রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। আরেক মা পঞ্চরত্নের জননী মোছা. ফরিদা বেগম। নিজে শিক্ষিত না হয়ে পাঁচ সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য তিনিও রত্নগর্ভা মায়ের খেতাব অর্জন করেন।
সর্বগুণে গুণান্বিত এই রত্নগর্ভা মায়েদের বিশেষ বিশেষণে বিশেষায়িত করা কঠিন। বলতে গেলে, একজন পরিপূর্ণ মায়ের প্রতিচ্ছবিই এই রত্নগর্ভা মায়েরা। তারা নিজের সন্তানদের মধ্যে স্বপ্নবীজ বপন করেন, বীজ বপন করেই ক্ষ্যান্ত হন না এই মায়েরা, তাদের সব ধরনের পরিচর্যা করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এমনই ত্যাগী আর আত্মপ্রত্যয়ী আমাদের এক-একজন রত্নগর্ভা মা।
এই রত্নগর্ভা মায়েদের সন্তানরাই পারে সমৃদ্ধ দেশ, সমাজ আর মর্যাদাশীল একটি পরিপূর্ণ জাতি উপহার দিতে। সমাজে সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করে বাস্তবে এর স্বাক্ষর রেখেছেন আমাদের রত্নগর্ভা মায়েরা। এ বছর ১১ মে রোববার বিশ্ব মা দিবসের এই বিশেষ দিনে আমরা সব মাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানো হয়।
রাশিদা বেগম, মোছা. ফরিদা বেগমসহ এ বছর একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ ৩৫ জন নারীকে ‘রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-২৪’ পদক দেওয়া হয়েছে। এই অ্যাওয়ার্ড প্রদানের প্রবক্তা আজাদ প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেড। বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তারা গত ১১ মে রোববার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের স্যামসন এইচ চৌধুরী সেন্টারে ২৫ জন নারীকে সাধারণ ক্যাটাগরিতে এবং ১০ জন নারীকে বিশেষ ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দেয়। সন্তানদের যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছরেই সফল মায়েদের এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।
সাধারণ ক্যাটাগরিতে সম্মানিত মায়েরা হলেন- মারতুজা নুসরাত, মোছা. ফরিদা বেগম, রাশিদা বেগম, নাসিমা মান্নান চৌধুরী, বিবি মরিয়ম, রোকেয়া খানম, পিয়ারা বেগম, আফরোজা পারুল, রোকসানা আক্তার, হাসিনা আক্তার, বেগম সালেহা করিম, ফাতিমা নার্গিস, আঞ্জুমান আরা বেগম, সালমা আলম, মোছা. জোবেদা খানম, মোছা. রাজিয়া বেগম, মোছাম্মৎ মাহমুদা বেগম, কিশোয়ার জাহান, মোসা. ফাতেমা বেগম, সুরাইয়া চৌধুরী, রাবেয়া পারভীন বানু, আদরিনী সরকার, হাছিনা আক্তার, মনোয়ারা বেগম ও অ্যাডভোকেট হালিমা আক্তার।
বিশেষ ক্যাটাগরিতে যারা রয়েছেন : শাহানা সিরাজ, মোসা. মুসলিমা খানম রানা, স্মৃতি কণা বড়ুয়া, খাদিজা খন্দকার, ফাতেমা আলম শাহানা, সাহানা আকতার চৌধুরী, অলকা ঘোষ, শামছুন্নাহার হোসেন, মোছা. ফরিদা বেগম ও সৈয়দা দিলরুবা খানম।
ঢাকা ক্লাবে অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আমার দেশ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় রত্নগর্ভা মা রাশিদা বেগমের সঙ্গে। আলাপচারিতায় তিনি জানান, ১৯৫০ সালে ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৬৯ সালের ১৩ মার্চ কুমিল্লা নিবাসী বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন বোর্ডের সহকারী পরিচালক মো. খুরশীদ আলমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর মায়ের কোলজুড়ে আসে একে একে চার সন্তান। তাদের একজন দেড় বছর বয়সে মারা যায়। ১৯৭৪ সালে বিএ পাস করে স্কুলে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। পরে বিএড ডিগ্রি লাভ করেন।
মা রাশিদা বেগমের প্রথম সন্তান বাকীউল আলম, স্নাতকোত্তর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তন মহাব্যবস্থাপক, (ফিন্যান্স) বসুন্ধরা গ্রুপ, বর্তমানে উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী, শিশুদের ছড়া সাহিত্য অঙ্গনেও বাকীউল আলমের নিরন্তর পদচারণে, দ্বিতীয় সন্তান রাফিউল আলম, এমবিবিএস, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ বরিশাল, মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইন হেলথ ইকোনমিকস (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, তৃতীয় সন্তান ফারজানা আফরোজ শিপা এমবিবিএস, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ সিলেট, এফসিপিএস (চাইল্ড) ডিপ্লোমা ইন চাইল্ড হেলথ, ড. এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক। মা নিজে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চেয়েছিলেন সন্তানদেরও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে।
অনুষ্ঠানে কথা হয়, পঞ্চরত্নের জননী মোছা. ফরিদা বেগমের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৯৭২ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদ উদ্দিনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মঙ্গাপীড়িত নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার প্রত্যন্ত কয়াগোলাহাটে মায়ের সংসার জীবন শুরু হয়। সদ্য মুক্তিযুদ্ধ ফেরত স্বামীর ছিল না স্থায়ী কোনো কর্মসংস্থান। স্বামী নিজের পছন্দে বিয়ে করায় শাশুড়ির অপছন্দের পাত্রী ছিলেন তিনি। ফরিদা বেগম ছিলেন দূরদর্শী। তিনি যেকোনো প্রতিকূলতার মধ্যেই সবকিছু মানিয়ে নিতে পারতেন। ১৯৭৩ সালে মায়ের কোলজুড়ে আসে প্রথম সন্তান। তখন থেকে মা স্বপ্ন দেখতেন একদিন তিনি সফল হবেন, নিজ সন্তানদের মধ্যে। সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার।
স্বামী স্থানীয় সৈয়দপুর পৌরসভায় একটি ছোট পদে চাকরি পান, শুরু হয় মায়ের নতুন সংগ্রাম। স্বল্প বেতনে সংসার চালানো। এরই মধ্যে মায়ের কোলজুড়ে আসে একে একে আরো চার সন্তান। অভাবের সংসারে আত্মীয়স্বজন বড় ছেলেকে কাজে লাগিয়ে দিতে বলে। কিন্তু সন্তানদের পড়াশোনা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে মা ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে বাড়িতে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল লালনপালন করতেন।
বাড়ির আঙিনায় শাকসবজি চাষ করতেন। এভাবে সংসারে বিভিন্ন আয়ের পথ খুঁজতেন। মা নিজে বেশি পড়াশোনা না জানলেও মায়ের কড়া নজরদারিই ছিল সন্তানদের ভয়ের কারণ। আর এভাবেই মা একেক সন্তানের প্রতি একেকভাবে শ্রম দিয়েছেন। আর এভাবেই মা একেক সন্তানের প্রতি একেকভাবে শ্রম দিয়েছেন। মায়ের এই শ্রমই সন্তানদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলেন। মোছা. ফরিদা বেগমের প্রথম সন্তান নীলফামারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক, দ্বিতীয় সন্তান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, তৃতীয় সন্তান সহকারী শিক্ষক, চতুর্থ সন্তান উপসচিব ও পঞ্চম সন্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাস্ট স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন। এ ছাড়া বিশেষে অতিথি ছিলেন কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, অভিনেতা ও নির্মাতা আবুল হায়াত, সবুর খান, আজাদ প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
আজাদ প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার মা আমার ভালোবাসা’ এই প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে ২০০৩ সাল থেকে আজাদ প্রোডাক্টসের পক্ষ থেকে প্রতিবছরের মতো এবার ২২তম বছরের অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। যে মায়েরা কঠিন শ্রম ও মন্ত্রমুগ্ধ দীক্ষা দিয়ে সন্তানের মানুষের মতো মানুষ করেছেন, দেশ-বিদেশে আলোকিত ও বিকশিত করেছেন, প্রতিবছর তাদের সম্মাননা দেওয়া হয়ে থাকে।
তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন, বহু মানুষের ভালোবাসায় গড়ে ওঠা সাফল্যের প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রোডাক্টস। তবে এই সাফল্য দেখে যেতে পারেননি আমার মা। তাই তো মায়েদের প্রতি ভালোবাসা ও দেশের সার্বিক শিক্ষা প্রসারের নেপথ্য শক্তি মায়েদের আরো সচেতন করার মানসে আমাদের এই আয়োজন ‘আজাদ প্রোডাক্টস, রত্নগর্ভা মা অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান অনুষ্ঠান।
এই মায়েরাই সমাজে তাদের সন্তানদের সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার নিপুণ স্থপতি। আজ আমাদের ২১তম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ২০০৩ সাল থেকে এই অনুষ্ঠানটি করে আসছি। যতই দিন যাচ্ছে, অনুষ্ঠানটির জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আয়োজন যদি একজন মাকেও অনুপ্রাণিত করে, তবে আমাদের উদ্দেশ্য সার্থক হবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শাকসু বানচালের চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। যদি আগামী সোমবার ভিসি এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করে রোডম্যাপ ঘোষণা না করেন, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের...
১ ঘণ্টা আগেসংগঠনের তথ্য, উপহার প্রদান, অনুভূতি বক্স এবং মেহেদি দেওয়ার জন্য উৎসবের ছাউনিতে চারটি আলাদা বুথ। সেখানে ছিল নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। আয়োজকরা নতুন সদস্য আহ্বান ও প্রচারপত্র বিলি করেন। ফটকের সামনে একটি ব্যানারে লেখা, ‛প্রিয় ভাইয়েরা, ভেতরে প্রবেশ ও উঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।’
২ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
৩ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
৪ ঘণ্টা আগে