
বিউটি হাসু

স্বপ্নই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। স্বপ্নের পূর্ণতা বা সার্থকতা মানুষকে করে অমর, চিরজীবী। তাই তো স্বপ্ন দেখা চাই—আকাশের সমান, আকাশের মতো বিশাল। সমস্ত প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে এবং রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ভেঙে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এক স্বপ্নদ্রষ্টা নারী। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হননি, সব বাধাবিঘ্ন প্রতিহত করে তা সার্থকও করেছেন। তীব্র ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি মুক্ত বিহঙ্গের মতো আকাশে ডানা মেলে উড়েছেন। বলছিলাম বাংলাদেশের প্রথম নারী বৈমানিক সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানার কথা।
ডাকনাম তার ‘তিতলী’, যার অর্থ ‘প্রজাপতি’। নামের প্রতিফলন ও প্রভাব বেশ পোক্তভাবেই পড়েছিল তার ইচ্ছাশক্তির ওপর।
নামের মধ্যে যেমন অদৃশ্য ডানা ছিল, বুকেও ছিল সাহস; আর মনে আকাশে ওড়ার তীব্র ইচ্ছা। কাছের মানুষরা তাকে ‘লিটল আপা’ বলে ডাকত। রক্ষণশীল সমাজের মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা। তার জন্ম ১৯৫৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি।
সেই রক্ষণশীল সমাজে থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন আকাশে ওড়ার। তিনি শুধু যে স্বপ্ন দেখেছেন তা-ই নয়, নিজের স্বপ্নকে সত্যি করে ইতিহাসের পাতায় নামও লিখিয়েছেন, হয়েছেন দেশের প্রথম নারী বৈমানিক।
কানিজ ফাতেমা রোকসানা বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম নারী বৈমানিক ছিলেন। তার জন্মই যেন হয়েছিল ভৌগোলিক সীমানা অতিক্রম করে দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটতে, সীমানা ছাড়িয়ে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর জন্য। যে সময় বাংলাদেশের সমাজ ছিল অতিমাত্রায় রক্ষণশীল, সে সময় রক্ষণশীল সমাজের একজন নারী হয়েও তিনি স্বপ্ন দেখেছেন আকাশে ওড়ার। এমনকি তিনি সমাজের প্রতিকূল স্রোতের সঙ্গে লড়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নও করেছেন। তাই তো হয়ে আছেন স্মরণীয়।
কানিজ ফাতেমা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং নানা গুণে পারদর্শী একজন নারী। তিনি ছিলেন রেডিও ও টেলিভিশন জগতের স্বনামধন্য একজন সংগীতশিল্পীও। এমনকি সে সময়ে জার্মান ভাষার একজন ডিপ্লোমাধারীও। তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। তবে তিনি আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো স্থলে নয়, জীবনকে উপভোগ করতে চেয়েছেন নীল আকাশে পাখির মতো উড়ে উড়ে। জার্মানির মেডিকেল স্কলারশিপের মতো আকর্ষণীয় প্রস্তাব পেয়েও তিনি অনায়াসে ফিরিয়ে দেন শুধু আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন বলে।
তারপর বিএসসিতে ভর্তি হন ইডেন কলেজে। তবে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখা কখনোই ছাড়েননি। তাই তো ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাবে যোগদান করেন তিনি। ১৯৭৭ সালেই পেয়ে যান বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স, একই সঙ্গে সহ-প্রশিক্ষকের লাইসেন্সও। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
শুধু তাই নয়, সহ-প্রশিক্ষকের লাইসেন্স পেয়ে তার মাধ্যমে তিনি বহু শিক্ষানবিসকে প্লেন চালানো শেখান। আর এভাবেই সকল বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে, সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে তার এগিয়ে চলা।
এরপর একই বছর অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট নিয়োগের একটি বিজ্ঞাপন দেখে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে পুরুষশাসিত প্রথায় একজন নারীর প্লেন চালানো মানতে সবাই নারাজ। নিজের মেধা ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে সফল হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়মের বেড়াজালে আটকে গেলেন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হলেও দুঃখজনকভাবে শুধু নারী হওয়ার জন্য তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
নিয়োগের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে কেবল পুরুষেরা আবেদন করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়। তাকে দমিয়ে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয় সব মহল থেকে। তবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই নারী দমে যাওয়ার নন। তিনি কোনোভাবেই থেমে থাকেননি, হাল ছাড়েননি। বরং বলিষ্ঠভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিজের সঙ্গে হওয়া এই বৈষম্যের প্রতিবাদে পত্রিকায় তিনি কঠিন ভাষায় লেখেন।
১৯৭৯ সালের ৩১ মে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ বিমান বনাম মহিলা বৈমানিক’ শিরোনামে একটি চিঠি লিখেন কানিজ ফাতেমা রোকসানা। চিঠিতে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে লেখেন—
‘মহিলা হিসাবে আমি একবিন্দু সুবিধা চাই না বা কোটার সমর্থকও আমি নই। যদি আমি পুরুষের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করিতে পারি, তবে শুধু মেয়ে হইয়া জন্ম নেওয়ার জন্য আমাকে যেন আমার ন্যায্য অধিকার হইতে বঞ্চিত করা না হয়।’
এরপরই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
তার সেই প্রতিবাদের রেশে সে আলোচনা পৌঁছে যায় জাতীয় সংসদ পর্যন্ত। সংসদের নারী সদস্যরাও তখন তার হয়ে লড়াই শুরু করেন। অবশেষে সরকারের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ তাদের বিজ্ঞাপন থেকে নারী-পুরুষ বৈষম্যের শর্ত সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত সরকারি হস্তক্ষেপে তাকে নিয়োগ দিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইনস।
এরপর ১৯৭৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম নারী পাইলট হিসেবে নিয়োগপত্র পান রোকসানা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম বিশ্বের প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে নিয়োগপত্র পান। সেই সঙ্গে তিনি আকাশে ওড়ার স্বাধীনতায় নারীদের পথ মসৃণ করেন, ঘুচিয়ে দেন নারী-পুরুষের বৈষম্য।
বৈমানিক রোকসানা যেমন মেধাবী ছিলেন, তেমনি ছিলেন প্রতিবাদী, সাহসী ও তীব্র আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন নারী। নারীদের জন্য প্রতিকূল সমাজে বাস করেও তিনি কারো করুণা বা কৃপা আশা করেননি, নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে সবকিছু অর্জন করতে চেয়েছেন।
বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে প্রশিক্ষণকালে সার্বিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠ কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করা তিনিই প্রথম নারী পাইলট।
তবে অনেক লড়াইয়ের পর তার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ হলেও সেই আনন্দযাত্রা খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। মাত্র পাঁচ বছর পরেই ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
বৈমানিক রোকসানা নিয়োগের পাঁচ বছরের মাথায় বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়টি ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট। তিনি সেদিন চট্টগ্রাম থেকে ফকার এফ-২৭ বিমান চালিয়ে ঢাকা আসছিলেন। প্রচুর বৃষ্টিপাতের দরুন একাধিকবার চেষ্টা করেও ঢাকার রানওয়েতে অবতরণ করতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত রানওয়ে থেকে ৫০০ মিটার দূরে তার বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং ৪৫ জন যাত্রী ও চারজন ক্রুসহ করুণ মৃত্যু হয় এই সাহসী নারীর।
তবে তার বৈমানিক জীবন দীর্ঘ না হলেও তিনি নারীদের ওড়ার জন্য যে অনুপ্রেরণা তৈরি করে গেছেন, তা চিরস্মরণীয়।
তিনি নিজের স্বল্প জীবনযাত্রায় রচনা করে গেছেন নতুন ইতিহাস। পরের প্রজন্মের নারীদের মনে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বপন করে গেছেন, উড়তেও শিখিয়ে গেছেন। নিয়ম ভেঙে নারীর আকাশে ডানা মেলে ওড়ার পথ তিনিই সুগম করে গেছেন।

স্বপ্নই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। স্বপ্নের পূর্ণতা বা সার্থকতা মানুষকে করে অমর, চিরজীবী। তাই তো স্বপ্ন দেখা চাই—আকাশের সমান, আকাশের মতো বিশাল। সমস্ত প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে এবং রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ভেঙে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এক স্বপ্নদ্রষ্টা নারী। তিনি শুধু স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হননি, সব বাধাবিঘ্ন প্রতিহত করে তা সার্থকও করেছেন। তীব্র ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তিনি মুক্ত বিহঙ্গের মতো আকাশে ডানা মেলে উড়েছেন। বলছিলাম বাংলাদেশের প্রথম নারী বৈমানিক সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানার কথা।
ডাকনাম তার ‘তিতলী’, যার অর্থ ‘প্রজাপতি’। নামের প্রতিফলন ও প্রভাব বেশ পোক্তভাবেই পড়েছিল তার ইচ্ছাশক্তির ওপর।
নামের মধ্যে যেমন অদৃশ্য ডানা ছিল, বুকেও ছিল সাহস; আর মনে আকাশে ওড়ার তীব্র ইচ্ছা। কাছের মানুষরা তাকে ‘লিটল আপা’ বলে ডাকত। রক্ষণশীল সমাজের মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা। তার জন্ম ১৯৫৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি।
সেই রক্ষণশীল সমাজে থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন আকাশে ওড়ার। তিনি শুধু যে স্বপ্ন দেখেছেন তা-ই নয়, নিজের স্বপ্নকে সত্যি করে ইতিহাসের পাতায় নামও লিখিয়েছেন, হয়েছেন দেশের প্রথম নারী বৈমানিক।
কানিজ ফাতেমা রোকসানা বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম নারী বৈমানিক ছিলেন। তার জন্মই যেন হয়েছিল ভৌগোলিক সীমানা অতিক্রম করে দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটতে, সীমানা ছাড়িয়ে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর জন্য। যে সময় বাংলাদেশের সমাজ ছিল অতিমাত্রায় রক্ষণশীল, সে সময় রক্ষণশীল সমাজের একজন নারী হয়েও তিনি স্বপ্ন দেখেছেন আকাশে ওড়ার। এমনকি তিনি সমাজের প্রতিকূল স্রোতের সঙ্গে লড়ে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়নও করেছেন। তাই তো হয়ে আছেন স্মরণীয়।
কানিজ ফাতেমা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং নানা গুণে পারদর্শী একজন নারী। তিনি ছিলেন রেডিও ও টেলিভিশন জগতের স্বনামধন্য একজন সংগীতশিল্পীও। এমনকি সে সময়ে জার্মান ভাষার একজন ডিপ্লোমাধারীও। তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। তবে তিনি আর দশজন সাধারণ মানুষের মতো স্থলে নয়, জীবনকে উপভোগ করতে চেয়েছেন নীল আকাশে পাখির মতো উড়ে উড়ে। জার্মানির মেডিকেল স্কলারশিপের মতো আকর্ষণীয় প্রস্তাব পেয়েও তিনি অনায়াসে ফিরিয়ে দেন শুধু আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন বলে।
তারপর বিএসসিতে ভর্তি হন ইডেন কলেজে। তবে পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখা কখনোই ছাড়েননি। তাই তো ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাবে যোগদান করেন তিনি। ১৯৭৭ সালেই পেয়ে যান বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স, একই সঙ্গে সহ-প্রশিক্ষকের লাইসেন্সও। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
শুধু তাই নয়, সহ-প্রশিক্ষকের লাইসেন্স পেয়ে তার মাধ্যমে তিনি বহু শিক্ষানবিসকে প্লেন চালানো শেখান। আর এভাবেই সকল বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে, সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে তার এগিয়ে চলা।
এরপর একই বছর অর্থাৎ ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ বিমানের পাইলট নিয়োগের একটি বিজ্ঞাপন দেখে তিনি পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে পুরুষশাসিত প্রথায় একজন নারীর প্লেন চালানো মানতে সবাই নারাজ। নিজের মেধা ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে সফল হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়মের বেড়াজালে আটকে গেলেন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে কৃতকার্য হলেও দুঃখজনকভাবে শুধু নারী হওয়ার জন্য তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
নিয়োগের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে কেবল পুরুষেরা আবেদন করতে পারবেন বলে উল্লেখ করা হয়। তাকে দমিয়ে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয় সব মহল থেকে। তবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই নারী দমে যাওয়ার নন। তিনি কোনোভাবেই থেমে থাকেননি, হাল ছাড়েননি। বরং বলিষ্ঠভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিজের সঙ্গে হওয়া এই বৈষম্যের প্রতিবাদে পত্রিকায় তিনি কঠিন ভাষায় লেখেন।
১৯৭৯ সালের ৩১ মে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ বিমান বনাম মহিলা বৈমানিক’ শিরোনামে একটি চিঠি লিখেন কানিজ ফাতেমা রোকসানা। চিঠিতে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে সুস্পষ্টভাবে লেখেন—
‘মহিলা হিসাবে আমি একবিন্দু সুবিধা চাই না বা কোটার সমর্থকও আমি নই। যদি আমি পুরুষের মধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করিতে পারি, তবে শুধু মেয়ে হইয়া জন্ম নেওয়ার জন্য আমাকে যেন আমার ন্যায্য অধিকার হইতে বঞ্চিত করা না হয়।’
এরপরই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।
তার সেই প্রতিবাদের রেশে সে আলোচনা পৌঁছে যায় জাতীয় সংসদ পর্যন্ত। সংসদের নারী সদস্যরাও তখন তার হয়ে লড়াই শুরু করেন। অবশেষে সরকারের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ তাদের বিজ্ঞাপন থেকে নারী-পুরুষ বৈষম্যের শর্ত সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত সরকারি হস্তক্ষেপে তাকে নিয়োগ দিতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইনস।
এরপর ১৯৭৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম নারী পাইলট হিসেবে নিয়োগপত্র পান রোকসানা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলিম বিশ্বের প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে নিয়োগপত্র পান। সেই সঙ্গে তিনি আকাশে ওড়ার স্বাধীনতায় নারীদের পথ মসৃণ করেন, ঘুচিয়ে দেন নারী-পুরুষের বৈষম্য।
বৈমানিক রোকসানা যেমন মেধাবী ছিলেন, তেমনি ছিলেন প্রতিবাদী, সাহসী ও তীব্র আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন নারী। নারীদের জন্য প্রতিকূল সমাজে বাস করেও তিনি কারো করুণা বা কৃপা আশা করেননি, নিজের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে সবকিছু অর্জন করতে চেয়েছেন।
বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে প্রশিক্ষণকালে সার্বিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠ কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করা তিনিই প্রথম নারী পাইলট।
তবে অনেক লড়াইয়ের পর তার আকাশে ওড়ার স্বপ্ন পূরণ হলেও সেই আনন্দযাত্রা খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি। মাত্র পাঁচ বছর পরেই ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার। (সূত্র: উইকিপিডিয়া)
বৈমানিক রোকসানা নিয়োগের পাঁচ বছরের মাথায় বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান। বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়টি ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট। তিনি সেদিন চট্টগ্রাম থেকে ফকার এফ-২৭ বিমান চালিয়ে ঢাকা আসছিলেন। প্রচুর বৃষ্টিপাতের দরুন একাধিকবার চেষ্টা করেও ঢাকার রানওয়েতে অবতরণ করতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত রানওয়ে থেকে ৫০০ মিটার দূরে তার বিমানটি দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং ৪৫ জন যাত্রী ও চারজন ক্রুসহ করুণ মৃত্যু হয় এই সাহসী নারীর।
তবে তার বৈমানিক জীবন দীর্ঘ না হলেও তিনি নারীদের ওড়ার জন্য যে অনুপ্রেরণা তৈরি করে গেছেন, তা চিরস্মরণীয়।
তিনি নিজের স্বল্প জীবনযাত্রায় রচনা করে গেছেন নতুন ইতিহাস। পরের প্রজন্মের নারীদের মনে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বপন করে গেছেন, উড়তেও শিখিয়ে গেছেন। নিয়ম ভেঙে নারীর আকাশে ডানা মেলে ওড়ার পথ তিনিই সুগম করে গেছেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শাকসু বানচালের চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। যদি আগামী সোমবার ভিসি এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করে রোডম্যাপ ঘোষণা না করেন, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের...
৩ ঘণ্টা আগে
সংগঠনের তথ্য, উপহার প্রদান, অনুভূতি বক্স এবং মেহেদি দেওয়ার জন্য উৎসবের ছাউনিতে চারটি আলাদা বুথ। সেখানে ছিল নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। আয়োজকরা নতুন সদস্য আহ্বান ও প্রচারপত্র বিলি করেন। ফটকের সামনে একটি ব্যানারে লেখা, ‛প্রিয় ভাইয়েরা, ভেতরে প্রবেশ ও উঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।’
৩ ঘণ্টা আগে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
৫ ঘণ্টা আগে