শুনেছি নদীর সাথেই প্রথম কথা হয়েছিল তার
কেননা এখনো নদীর ভাষাই এখানে অপ্রতিরোধ্য
এবং স্বচ্ছ ও সহজবোধ্য!
একথা জেনে বারোশ নদীতে সপ্রতিভ সাঁতার কাটলেন
ডানা মেলে উড়লেন সুরমা মাতামুহুরী তিতাসের বুকে
লোকায়ত জনপদের গন্ধ শুঁকে শুঁকে
একটা গাঙ শুশুকের মতো হলেন জলে উদ্বেলিত।
তার ছিল মাছরাঙা পানকৌড়ির মতো তীক্ষ্ণ দুটো চোখ
চিরসবুজ বদ্বীপের মতো সম্ভাবনাময় বুক
চেতনায় ছিল তার নদী মোহনার অকৃত্রিম সুর।
তার জন্য কবিতার অপরাহ্ণে নেমে এসেছিল পাখিডাকা ভোর
একটা সাহসের পতাকা নিয়ে লাফিয়ে পড়েছিলেন সমুদ্রে
এ কথা জানতেন, সমকালীন পর্বতও তার উচ্চতার সমকক্ষ নয়
জানতেন নদী ও সমুদ্র ছাড়া তেমন কোনো শুদ্ধতা অবশিষ্ট নেই
ক্ষয়িষ্ণু নগরে তাই নিয়ে এসেছিলেন
আবহমান নদী পাখি বৃক্ষের হরিৎ
সুষম সামর্থ্যে তার সমুত্তীর্ণ হয়ে উঠেছিল ভাষা
ডানা মেলে উড়েছিল লুপ্তপ্রায় লোকায়ত আশা
ক্ষুদ্র কিছু আগাছার ঈর্ষা ছাড়া তার সেই সুবিশাল মাঠ
নীল সমুদ্রের মতো সম্মোহক দিগন্তের পাঠ
আমাদের জাতিগত আকাঙ্ক্ষার সম্মুখে
মেলে ধরেছিল অপরাজেয় বাংলাদেশের বুক
সহস্রাব্দের সম্মিলিত সংগ্রামী মানুষের মুখ।
কবি ও কবিতার কাছে সমাদৃত সহজ সাধনায়
খুঁজে পাই তার অদম্য শৈল্পিক চেতনার স্বাক্ষর।
অন্তর্গত জঙ্গমতায় বাঁক নিয়েছেন
তবু রুদ্ধ হয়ে যাননি কিছুতেই
স্বদেশের রক্তচরাচরে বিপ্লবী ফসলের মৌসুমে
শুনি তারই কবিতার জয়।

