পেহেলগাম হামলা : হিন্দুত্ববাদের নোংরা কৌশল?

ফাতিমা তামান্না
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৫, ১১: ১৯

ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ নিরীহ পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি। হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সীমান্ত বন্ধ, ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা সুবিধা বাতিলসহ বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বিপজ্জনক দিকে মোড় নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পেহেলগামের ঘটনায় ভারতের অতিমাত্রিক প্রতিক্রিয়া উত্তেজনা সৃষ্টিতে রসদ জোগাচ্ছে। ভারতের অভিযানে কাশ্মীরে প্রায় দুই হাজার মানুষ আটক করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নিরপরাধ বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কাশ্মীরের অভ্যন্তরে ক্ষোভ ও উদ্বেগ আরো বাড়ছে।

যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার নিন্দা জানালেও বারবার সতর্ক করে দিচ্ছে, যেন পরিস্থিতি যুদ্ধের দিকে না গড়ায়। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, ‘ভারতের প্রতিক্রিয়া এমন হওয়া উচিত, যা আঞ্চলিক সংঘাতের জন্ম না দেয়।’

অন্যদিকে পাকিস্তান হামলার দায় অস্বীকার করে সৌদি আরব, কুয়েত ও আরব আমিরাতের সহযোগিতা চেয়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছে। পাকিস্তান দাবি করছে, ভারত সীমিত সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সেই আশঙ্কায় তারা সামরিক বাহিনীকে সতর্ক করেছে।

চীন এই ইস্যুতে সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এমনকি ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে ভারতকে সতর্ক করা হয়েছে চীনের বিভিন্ন সরকারি গণমাধ্যমে। আবার বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে ভারতের প্রভাব খর্ব করার চেষ্টা করছে বেইজিং।

পেহেলগামে হামলাকে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীনসহ এ অঞ্চলে সৃষ্ট নতুন ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখতে হবে। এ হামলা কারা কেন ঘটিয়েছে, তা নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ উঠেছে। হামলার পেছনের কারণে যা-ই থাকুক, ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার এ থেকে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করছে। এ ঘটনাকে ঘিরে বিজেপি ও মোদির হিন্দুত্ববাদী আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা যেন নতুন মাত্রা না পায়, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে আমাদের। সেজন্য কোনো অবস্থাতেই একে যুদ্ধের দিকে গড়াতে দেওয়া যাবে না।

লেখক : কবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত