আবদুল লতিফ মাসুম
এটি আশা ও আনন্দের কথা যে, অবশেষে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যে দোলাচলের সৃষ্টি হয়েছিল, তার অবসান হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বোধোদয় ঘটেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠকে এটি অর্জিত হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য বড় ধরনের অর্জন এবং একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ এবং একটি প্রথম পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, অন্য বিষয়গুলোতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই ঐক্যগুলো তুলতে পারব। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে আইনসভা তৈরি হবে, সেই আইনসভা যেন মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারগুলো করতে পারে এবং তাকে টেকসই করতে পারে, এ জন্য এই আইনসভাকে চিহ্নিত করা বা আলাদা বৈশিষ্ট্য দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। এখন অধিকাংশ দলই এ রকম মত দিচ্ছে যে ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত প্রয়োজন নাও হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ‘আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শিগগিরই সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুপারিশ তৈরি করে সরকারের কাছে দিতে পারব।’
জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের বিষয়ে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল একমত। তবে আমরা চাই ওই গণভোট নির্বাচনের আগেই হোক।
গণভোট কবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত না। আমরা মনে করি, এটি যাতে জাতীয় নির্বাচন কোনো ধরনের সমস্যা করা ছাড়া, নভেম্বর অথবা ডিসেম্বর এটি হতে পারে। তফসিলের আগেও করতে পারেন। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো ধরনের বাধা নেই। জনগণকে একটা জটিল অবস্থায় ফেলে না দিয়ে, মহাপরীক্ষায় না ফেলে সহজভাবে আগালে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে।
জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বা প্রস্তাবটি পরিমার্জন করে আরো সুনির্দিষ্ট ও বিস্তৃত করা হয়েছে। সংবিধান আদেশ জারি ও গণভোটের পাশাপাশি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে জুলাই সনদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মতামত চাওয়ার বিষয়টি যুক্ত করা হয়। তবে এখন গণভোট নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স প্রয়োজন হবে না বলে মনে করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এর পাশাপাশি গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা গঠনের বিষয়টিও আলোচিত হয়। গণভোট হলে তা জাতীয় নির্বাচনের দিনই হতে পারে। এখন যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগেই গণভোট চাচ্ছে, সুতরাং গণভোট অনুষ্ঠান শিগগিরই হতে পারে বলে আশা করা যায়। আর গণপরিষদ করা হলে সেটাও আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে করা যায়। সে ক্ষেত্রে আগামী সংসদ একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে। যেহেতু বর্তমান সংবিধানের অধীনেই সবকিছু হচ্ছে, সেহেতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ধারণা গণপরিষদ এ ক্ষেত্রে অবান্তর বিবেচিত হতে পারে। সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এতদিন ভিন্ন অবস্থানে ছিল। বিএনপি মনে করে, সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের একমাত্র বৈধ পথ বা ফোরাম হচ্ছে জাতীয় সংসদ। আগামী সংসদের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এর বাইরে অন্য কোনো উপায়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামতের পক্ষে ছিল দলটি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চায় সংবিধান আদেশ ও পরে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। এর ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে। এনসিপি চায় গণপরিষদের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হোক। উল্লেখ্য, সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেগুলো হলোÑ১. গণভোট, ২. বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, ৩. গণপরিষদ গঠন, ৪. আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ৫. সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং ৬. সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া।
জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। কিন্তু অন্য আরো বিষয় রয়েছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন প্রশ্নে এখনো জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিশেষ করে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে জামায়াত, এনসিপি এবং আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল অনড় অবস্থানে রয়েছে। এসব রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এখন খেলাফত মজলিস আবার নতুন কর্মসূচি দিয়েছে একই দাবিতে। এর আগে চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন পিআর প্রশ্নে অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। এই অচলাবস্থা দূরীভূত না হলে নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হয়ে পড়বে।
আশার কথা, আন্দোলনরত দলগুলো নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন বা নির্বাচন প্রতিরোধের কোনো ঘোষণা দেয়নি। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল আশা করে জাতীয় সনদ প্রশ্নে যে ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেভাবে নির্বাচন পদ্ধতি প্রশ্নেও জাতীয় ঐকমত্য সূচিত হতে পারে। এ বিষয়ে সমঝোতার প্রস্তাব হিসেবে উচ্চ পরিষদে পিআর সিস্টেম মেনে নিতে পারে বিএনপিÑএ রকম আলোচনা রাজনৈতিক মহলে রয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশে পিআর সিস্টেম বাস্তবায়নের আগে হাজারো চিন্তা করতে হবে। যেকোনো নতুন বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ বেশ সংবেদনশীল। অনেকে মনে করেন, পিআর সিস্টেমটি ফ্যাসিবাদ উত্থানের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সামগ্রিকভাবে আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর সিস্টেম উত্তম মনে হলেও বাংলাদেশের অধম রাজনৈতিক সংস্কৃতির আলোকে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নীতিগতভাবে পিআর সিস্টেমটিকে আলোচনার জন্য গ্রহণ করা। প্রাথমিকভাবে উচ্চ পরিষদে পিআর সিস্টেম কী ফল দেয়, তাও একটি বিবেচ্য বিষয়। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করে, এতে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির হারানোর কিছু নেই। বর্তমান পদ্ধতি অথবা পিআর সিস্টেমে তাদের প্রাধান্য বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়। বিএনপি যেহেতু এখন ‘গভর্নমেন্ট ইন ওয়েটিং’ বলে কথিত হচ্ছে, সে কারণে তাদের দায় ও দায়িত্বও বেশি। সব রাজনৈতিক দল জাতীয় স্বার্থে পিআর সিস্টেমসহ সব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাবেÑএই আশা সাধারণ মানুষের।
এটি আশা ও আনন্দের কথা যে, অবশেষে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যে দোলাচলের সৃষ্টি হয়েছিল, তার অবসান হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর বোধোদয় ঘটেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠকে এটি অর্জিত হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের সম্মতির জন্য একটি গণভোট অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। গত রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য বড় ধরনের অর্জন এবং একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ এবং একটি প্রথম পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী, অন্য বিষয়গুলোতেও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই ঐক্যগুলো তুলতে পারব। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে আইনসভা তৈরি হবে, সেই আইনসভা যেন মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারগুলো করতে পারে এবং তাকে টেকসই করতে পারে, এ জন্য এই আইনসভাকে চিহ্নিত করা বা আলাদা বৈশিষ্ট্য দেওয়া দরকার। তিনি বলেন, বিদ্যমান সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। এখন অধিকাংশ দলই এ রকম মত দিচ্ছে যে ১০৬ অনুচ্ছেদের আওতায় সুপ্রিম কোর্টের মতামত প্রয়োজন নাও হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে আলী রিয়াজ বলেন, ‘আমি মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোর এই প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শিগগিরই সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুপারিশ তৈরি করে সরকারের কাছে দিতে পারব।’
জাতীয় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের বিষয়ে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল একমত। তবে আমরা চাই ওই গণভোট নির্বাচনের আগেই হোক।
গণভোট কবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণ গণভোটে অভ্যস্ত না। আমরা মনে করি, এটি যাতে জাতীয় নির্বাচন কোনো ধরনের সমস্যা করা ছাড়া, নভেম্বর অথবা ডিসেম্বর এটি হতে পারে। তফসিলের আগেও করতে পারেন। গণভোট হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে কোনো ধরনের বাধা নেই। জনগণকে একটা জটিল অবস্থায় ফেলে না দিয়ে, মহাপরীক্ষায় না ফেলে সহজভাবে আগালে আমরাও বাঁচি, জাতিও বাঁচে।
জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ বা প্রস্তাবটি পরিমার্জন করে আরো সুনির্দিষ্ট ও বিস্তৃত করা হয়েছে। সংবিধান আদেশ জারি ও গণভোটের পাশাপাশি সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে জুলাই সনদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মতামত চাওয়ার বিষয়টি যুক্ত করা হয়। তবে এখন গণভোট নিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স প্রয়োজন হবে না বলে মনে করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এর পাশাপাশি গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা গঠনের বিষয়টিও আলোচিত হয়। গণভোট হলে তা জাতীয় নির্বাচনের দিনই হতে পারে। এখন যেহেতু জামায়াতে ইসলামীসহ আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগেই গণভোট চাচ্ছে, সুতরাং গণভোট অনুষ্ঠান শিগগিরই হতে পারে বলে আশা করা যায়। আর গণপরিষদ করা হলে সেটাও আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে করা যায়। সে ক্ষেত্রে আগামী সংসদ একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কাজ করবে। যেহেতু বর্তমান সংবিধানের অধীনেই সবকিছু হচ্ছে, সেহেতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের ধারণা গণপরিষদ এ ক্ষেত্রে অবান্তর বিবেচিত হতে পারে। সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এতদিন ভিন্ন অবস্থানে ছিল। বিএনপি মনে করে, সংবিধান সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের একমাত্র বৈধ পথ বা ফোরাম হচ্ছে জাতীয় সংসদ। আগামী সংসদের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এর বাইরে অন্য কোনো উপায়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামতের পক্ষে ছিল দলটি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চায় সংবিধান আদেশ ও পরে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। এর ভিত্তিতে আগামী নির্বাচন হতে হবে। এনসিপি চায় গণপরিষদের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা হোক। উল্লেখ্য, সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেগুলো হলোÑ১. গণভোট, ২. বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, ৩. গণপরিষদ গঠন, ৪. আগামী সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ৫. সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং ৬. সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া।
জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন। কিন্তু অন্য আরো বিষয় রয়েছে, যেগুলোর বাস্তবায়ন প্রশ্নে এখনো জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিশেষ করে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে জামায়াত, এনসিপি এবং আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দল অনড় অবস্থানে রয়েছে। এসব রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এখন খেলাফত মজলিস আবার নতুন কর্মসূচি দিয়েছে একই দাবিতে। এর আগে চরমোনাই পীর সাহেবের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন পিআর প্রশ্নে অভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। এই অচলাবস্থা দূরীভূত না হলে নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হয়ে পড়বে।
আশার কথা, আন্দোলনরত দলগুলো নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন বা নির্বাচন প্রতিরোধের কোনো ঘোষণা দেয়নি। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল আশা করে জাতীয় সনদ প্রশ্নে যে ধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেভাবে নির্বাচন পদ্ধতি প্রশ্নেও জাতীয় ঐকমত্য সূচিত হতে পারে। এ বিষয়ে সমঝোতার প্রস্তাব হিসেবে উচ্চ পরিষদে পিআর সিস্টেম মেনে নিতে পারে বিএনপিÑএ রকম আলোচনা রাজনৈতিক মহলে রয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশে পিআর সিস্টেম বাস্তবায়নের আগে হাজারো চিন্তা করতে হবে। যেকোনো নতুন বিষয়ে বাংলাদেশের মানুষ বেশ সংবেদনশীল। অনেকে মনে করেন, পিআর সিস্টেমটি ফ্যাসিবাদ উত্থানের কারণ হয়ে উঠতে পারে। সামগ্রিকভাবে আনুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর সিস্টেম উত্তম মনে হলেও বাংলাদেশের অধম রাজনৈতিক সংস্কৃতির আলোকে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত নীতিগতভাবে পিআর সিস্টেমটিকে আলোচনার জন্য গ্রহণ করা। প্রাথমিকভাবে উচ্চ পরিষদে পিআর সিস্টেম কী ফল দেয়, তাও একটি বিবেচ্য বিষয়। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল মনে করে, এতে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির হারানোর কিছু নেই। বর্তমান পদ্ধতি অথবা পিআর সিস্টেমে তাদের প্রাধান্য বজায় থাকবে বলে আশা করা যায়। বিএনপি যেহেতু এখন ‘গভর্নমেন্ট ইন ওয়েটিং’ বলে কথিত হচ্ছে, সে কারণে তাদের দায় ও দায়িত্বও বেশি। সব রাজনৈতিক দল জাতীয় স্বার্থে পিআর সিস্টেমসহ সব বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাবেÑএই আশা সাধারণ মানুষের।
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৪ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৪ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৫ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে