২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন। গাজাযুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা ঘোষণা করেন। কথা বলার সময় ট্রাম্প দুই দফা থেমে গিয়েছিলেন। দুজন নেতার নাম নেন তিনি, যারা এই পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছিলেন। একজন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, আরেকজন সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির।
মুহূর্তটা ছিল ছোট। কিন্তু অনেক অর্থবহ। ট্রাম্প বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী আর জেনারেলকে একই কাতারে নিয়ে এসেছেন। প্রত্যেকেই বার্তাটা বুঝেছে। শেহবাজ শরিফ হয়তো প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে আছেন, কিন্তু আসল ক্ষমতা রয়েছে আসিম মুনিরের কাছে।
সেই ১৯৪৭ থেকেই পাকিস্তান বেসামরিক আর সামরিক শাসনের দোলাচলের মধ্যে ছিল। সবশেষ প্রকাশ্য সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। শেহবাজের বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে সরিয়ে দিয়েছিলেন জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। ২০০৮ সালে আবার বেসামরিক শাসন ফিরে আসে। কিছুকাল নির্বাচিত সরকারগুলোর কিছু স্বাধীনতা ছিল। অভ্যন্তরীণ নীতির কিছু দিক তারা দেখতে পারত। সত্যিকারের নির্বাচন করতে পারত। সেই সময় চলে গেছে। ইসলামাবাদে এখন হয়তো ট্যাংক ঢুকছে না। সামরিক আইনও জারি করা হয়নি। কিন্তু শাসন আসলে জেনারেলরাই করছেন। বেসামরিক নেতারা এটাকে গণতান্ত্রিক চেহারা দিচ্ছেন মাত্র।
জনগণ এর নাম দিয়েছে মুনির মডেল। ফাঁপা গণতান্ত্রিক খোলসের ভেতরে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে সেনাবাহিনী। ২০০৮ সালের পর এটাই পাকিস্তান রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। সেনাবাহিনী আর অন্ধকারে লুকিয়ে থাকছে না। প্রকাশ্যেই শাসন করছে। তারাই নীতি লিখছে। গণতন্ত্র চালাচ্ছে। অর্থনীতি পরিচালনা করছে। নিরাপত্তা ও গোয়েন্দার পুরো নিয়ন্ত্রণ তো আগে থেকেই তাদের কাছে আছে। এখন নিয়ন্ত্রণটাও বৈধতা পেয়েছে। নভেম্বরে পার্লামেন্টে নতুন আইন পাস হয়েছে। সেখানে মুনিরকে সবগুলো সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান করা হয়েছে। আদালত থেকে তাকে সারা জীবনের জন্য দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তার মেয়াদ আরো পাঁচ বছর নবায়নেরও সুযোগ রাখা হয়েছে। দশ বছর পর্যন্ত পদে থাকতে পারবেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ পরিষ্কার করে কথাটা বলেছেন। ব্যবস্থাটা এখনই হাইব্রিড হয়ে গেছে। সামরিক আর বেসামরিক অংশ ক্ষমতা ভাগাভাগি করছে। কোনো রাখঢাক না রেখেই তিনি বলেছেন এই হাইব্রিড সিস্টেম দারুণ কাজ করছে।
সমর্থকরাও মেনে নিয়েছেন। আগের বছরে পাকিস্তান আইএমএফ থেকে নতুন ঋণ পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে দরজা খুলে গেছে। বড় নতুন বিনিয়োগ এসেছে। সামরিক নেতৃত্বে স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিল গঠিত হয়েছে। তারা জ্বালানি, খামারায়ন এবং খনিজ খাতের বিদেশি চুক্তিগুলোর গতি বাড়িয়েছে। সমর্থকরা বলছেন, এই নতুন মডেল শৃঙ্খলা নিয়ে এসেছে। পুরোনো জোট আর ধীরগতির আমলামন্ত্রের পুরোনো বিশৃঙ্খলা শেষ হয়ে গেছে।
কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হলে জেনারেলরা এখন আর বেসামরিক নেতাদের দুষতে পারবেন না। সাফল্য আর ব্যর্থতা দুটোই এখন তাদের ঘাড়ে।
রাষ্ট্র গিলে খাওয়া
২০২২ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অনাস্থা ভোটে হেরে যান। প্রায় সবাই জানে সেনাবাহিনী তাকে সরাতে ভূমিকা রেখেছে। শেহবাজ শরিফ তখন প্রধানমন্ত্রী হন। তার সরকার টিকে থাকার একমাত্র কারণ ছিল সেনাবাহিনীর সমর্থন। কঠিন কাজগুলো সেনাবাহিনী নিয়ে নিয়েছিল। ভাঙা অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, রাস্তার বিক্ষোভ প্রশমন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং বড় বড় পররাষ্ট্র সম্পর্কের ব্যবস্থাপনাÑসবই তারা করেছে। বেসামরিক নেতারা শুধু নিশ্চিত করেছেন, যাতে পার্লামেন্টটা স্বাভাবিক মনে হয়।
২০২৪-এর ফেব্রুয়ারির নির্বাচনও সেটা প্রমাণ করেছে। ইমরান খানের দলকে তাদের প্রতীক ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। তাদের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছে। তারপরও সবচেয়ে বেশি আসন তারাই পেয়েছে। কিন্তু সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, যাতে তারা সরকার গঠন করতে না পারে। দুর্বল জোট নিয়ে শেহবাজ শরিফ আবার ক্ষমতায় ফিরেছেন। সেনাবাহিনীর আশীর্বাদে টিকে আছে তারা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, গোয়েন্দা, আদালত এবং আমলাতন্ত্রÑসব নিয়ন্ত্রণ করছে। তারাই ঠিক করছে কারা শাসন করবে এবং কতদূর তারা যেতে পারবে।
২০২৩ সালে এক কেবিনেটমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেনÑসেনাবাহিনীকে ছাড়া আমরা ইমরান খানকে শেষ করতে পারব না। সামান্য একটা উপহারের মামলায় ২০২৩-এর আগস্টে খানকে জেলে পাঠানো হয়। এখনো তিনি কারাগারে। অধিকাংশ পাকিস্তানি মনে করে মামলাটা ভুয়া। খান এখনো দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। বেসামরিক নেতাদের তার বিরুদ্ধে এককভাবে লড়াইয়ের সাধ্য ছিল না। তাই সেনাবাহিনীকে তারা আরো বেশি ক্ষমতা দিয়েছে। যেটা সংক্ষিপ্ত জোট ছিল, সেটা এখন স্থায়ী সামরিক শাসনে রূপ নিয়েছে। সেনাবাহিনী রাষ্ট্রকে গিলে ফেলেছে।
ফিল্ড মার্শালের গ্রীষ্মকাল
২০২৫-এর মে মাসে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে স্বল্পকালীন যুদ্ধ হয়েছে। ভারত যথারীতি দোষ দিয়েছে পাকিস্তানকে। কয়েক দিন লড়াই স্থায়ী ছিল। দুই পক্ষই পরে নিরস্ত হয়েছে। পাকিস্তানে এটাকে বিজয় মনে করে। ভারতও একই দাবি করে। আসল গল্পটা আলাদা। যুদ্ধ থামানোর জন্য আমেরিকা সরাসরি জেনারেল মুনিরের সঙ্গে কথা বলেছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বলেনি। সবাই সত্যটা দেখেছে। যুদ্ধ বা শান্তিÑসবটাই এখন জেনারেলদের নিয়ন্ত্রণে।
দুই মাস পরে ট্রাম্প শুধু মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ করেছিলেন। কোনো বেসামরিক নেতা আসেননি। তারা বাণিজ্য, জ্বালানি, প্রযুক্তি, ক্রিপ্টো এবং দুর্লভ খনিজ নিয়ে আলোচনা করেছেন। যে বিষয়গুলো নিয়ে আগে বেসামরিক মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা হতো, সেই আলোচনা এখন জেনারেলদের সঙ্গে হচ্ছে।
মুনির দ্রুত অর্থনীতি, কূটনীতিও নিজের হাতে নিয়ে নেন। পাকিস্তান মার্কিন শুল্ক পেয়েছে খুবই কমÑমাত্র ১৯ শতাংশ। ক্রিপ্টো ও খনিজ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সবগুলো বড় চুক্তিই এখন স্পেশাল ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কাউন্সিলের মাধ্যমে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কাগজে-কলমে চেয়ারম্যান। কিন্তু কমিটিতে সবার ওপরে আছেন সেনাপ্রধান। প্রতিদিনের কাজকর্ম দেখেন একজন সার্ভিং জেনারেল।
সেপ্টেম্বরে একটি সেনা কোম্পানি ৫০০ মিলিয়ন ডলারের দুর্লভ-খনিজ চুক্তি করেছে আমেরিকান ফার্মের সঙ্গে। ইসলামাবাদের সবাই জানে মুনির ব্যক্তিগতভাবে এই চুক্তি অনুমোদন করেছে।
কিছুদিন পরে মুনির আবার হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রিত হন। এবার সঙ্গে ছিলেন শেহবাজ শরিফ। ছবিতে দেখা গেছে, জেনারেল ট্রাম্পকে পাকিস্তানি খনিজের একটি ট্রে তুলে দিচ্ছেন। মূল বিক্রেতা এখানে সেনাপ্রধান।
ওই সফরের তিন দিন পর ট্রাম্প যখন গাজার কথা বলেন, তখন শরিফ আর মুনির দুজনেরই নাম নেন তিনি। ইসলামাবাদ এতেই খুশি। আমেরিকা এখন পাকিস্তানকে আবার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে। উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে আর পারমাণবিক শক্তিধর একমাত্র মুসলিম দেশ হিসেবে পাকিস্তান নিজেকে হাজির করেছে। ওয়াশিংটন যখন দ্রুত ফল পেতে চায়, তখন তারা জেনারেলদেরই পছন্দ করে। অতীতে আইয়ুব খান, জিয়া এবং মোশাররফের সময়েও তারা এটাই করেছে। আগের তুলনায় এখন পার্থক্য একটাই : কোনো সামরিক অভ্যুত্থান ছাড়াই মুনির এখন শীর্ষে চলে গেছেন।
মুনির এখন ফিল্ড মার্শাল। বহু দশকের মধ্যে প্রথম আবার কাউকে এই পদবি দেওয়া হলো। তার মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। সবগুলো সশস্ত্র বাহিনীর তিনি প্রধান। অর্থনীতি আর রাজনীতির কেন্দ্রে বসে আছেন তিনি। বহু বছরের মধ্যে এমন শক্তিধর জেনারেল পাকিস্তান আর দেখেনি।
ইমরান খানকে সরিয়ে দেওয়ার পর বহু পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। ২০২৩ সালে খানের সমর্থকরা সামরিক ভবনেও হামলা করেছিল। সেনাবাহিনী দেখেছে লুকিয়ে থেকে কোনো কাজ হচ্ছে না। তার চেয়ে প্রকাশ্যে শাসন করাই ভালো। ভালো খবরের কৃতিত্ব নেওয়াই উত্তম। ভারতের বিরুদ্ধে স্বল্পকালীন যুদ্ধটা তাদের সাহায্য করেছে। জনগণ সেনাবাহিনীকে আগের মতোই শক্তিশালী দেখেছে। জেনারেলরা এরপর নিজেদের একমাত্র শক্তি হিসেবে সামনে এনেছে, যারা পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারবে।
দৃশ্যমান হাত
এটা পুরোনো স্টাইলের কর্তৃত্ববাদিতা নয়। কোনো সংবিধান স্থগিত করা হয়নি। পার্লামেন্ট এখনো বসছে। নির্বাচন হচ্ছে। সেনাবাহিনী শুধু ব্যবস্থার মধ্যে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সামরিক আর বেসামরিক ক্ষমতার সব ভেদরেখা তারা মুছে দিয়েছে।
ক্ষমতা দৃশ্যমান করার মাধ্যমে সবকিছু বদলে গেছে। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষুদ্র কর্মকর্তা হয়ে গেছে। পার্লামেন্ট হয়ে গেছে নাটকের মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রীরা হয়েছেন সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তের ব্যবস্থাপক। ইমরান খানকে দূরে রাখতেই এই মূল্যটা দিতে রাজি হয়ে গেছে তারা।
কিন্তু দৃশ্যমান হওয়ায় সেনাবাহিনীর বিপদও বেড়ে গেছে। জেনারেলরা প্রকাশ্যে শাসন করছে বলে সব সমস্যার জন্য এখন জনগণ তাদের দুষছে। অর্থনীতির গতি কমে গেলে, কর্মসংস্থান না হলে, বোমাবাজি ফিরে এলেÑসবকিছুর দায় পড়ছে সেনাবাহিনীর ওপর। নিজেদের অযোগ্য রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখানোর আর কোনো সুযোগ তাদের সামনে নেই।
সেনাবাহিনীর আচরণে এরই মধ্যে বিচলিত ভাব দেখা যাচ্ছে। তারা নির্বাচনের কথা বলছে। সংবাদ সম্মেলন করছে। কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য তারা লড়ছে। তারা জানে জনগণের চোখ তাদের উপরে আছে।
বিনিয়োগ কাউন্সিলের মতো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বিনিয়োগকারীরা স্বচ্ছ কর্তৃপক্ষ পছন্দ করেন। কিন্তু তারা একই সঙ্গে বেসামরিক দক্ষতাও শেষ করে দেন। মন্ত্রীরা শূন্য হয়ে পড়ছেন। পার্লামেন্ট কোনো কিছুই ঠেকাতে পারছে না। ভুলত্রুটি লুকিয়ে রাখলেও একসময় সেগুলো প্রকাশ হয়ে পড়ছে। আগের সামরিক শাসকরা শক্তি নিয়ে শাসন শুরু করলেও সংকটের সময় তারা দ্রুত ভেঙে পড়েছিল।
ইমরান খানের জেলে থাকাটা আরেকটি সমস্যা। সেনাবাহিনীর সামনে দুটো বিকল্প : হয় ন্যায়বিচার ও ন্যায্য নির্বাচনের মাধ্যমে তাকে মুক্তি দিতে হবে। অথবা তাকে চিরকালের জন্য আটকে রাখতে হবে। তাকে মুক্তি দিলে নতুন ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। আবার তাকে অন্তহীন সময় জেলে আটকে রাখলে সেনাবাহিনীর ইমেজ ক্ষুণ্ণ হবে।
কিছু কিছু দেশ নতুন চেইন অব কমান্ড পছন্দ করেছে। কিন্তু জেনারেলদের হাতে পররাষ্ট্রনীতি চলে যাওয়ায় ভারতের সঙ্গে শান্তির মতো ইস্যুগুলো আরো কঠিন হয়ে গেছে। সবকিছুই নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে গেছে। আবার উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন যে প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে, এই চুক্তি পাকিস্তানকে এমন সব যুদ্ধে টেনে নিতে পারে, যেগুলো তারা চায় না।
মঞ্চ পুরোটাই আলোকিত
বহু বছর সেনাবাহিনী অন্ধকারে থেকে শাসন করেছে। ব্যর্থতার দায় নিয়েছেন বেসামরিক নেতারা। মুনির মডেল সেই খেলা শেষ করেছেন। জেনারেলরা এখন হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন। বাণিজ্য চুক্তিতে সই করছেন। দ্রুত ফলাফলের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু স্পটলাইটের জায়গাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
এটা আর ধীর অভ্যুত্থান নেই। এটা আগের চেয়ে স্মার্ট। সেনাবাহিনী নিজেই আইন লিখছে এখন। আধিপত্যকে তারা স্বাভাবিক আইনে পরিণত করেছে।
কৌতুকের বিষয় হলোÑশেহবাজ শরিফ এখন সেই ব্যবস্থার সুরক্ষা দিচ্ছেন, তার ভাই নওয়াজ শরিফ যে ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। একবার এক জেনারেল ক্ষমতা বেশি চাওয়াই তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন নওয়াজ। এখন জেনারেলদের ক্ষমতা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। আর সবকিছুই ঘটছে প্রকাশ্য দিবালোকে।
‘যৌথ অংশীদারত্বের’ মতো নরম শব্দগুলো এখন ছুড়ে ফেলার সময়। সত্যটা পরিষ্কার। পাকিস্তান চালাচ্ছেন জেনারেলরা। বেসামরিক নেতারা ক্যামেরায় হাসিমাখা পোজ দিচ্ছেন মাত্র। পর্দাটা আর নেই। মঞ্চ এখন পুরোটাই আলোকিত। প্রত্যেকেই দেখতে পাচ্ছেন কার হাতে আসল ক্ষমতা।
ফরেন অ্যাফেয়ার্স অবলম্বনে জুলফিকার হায়দার

