ড. মো. খলিলুর রহমান
দীর্ঘ অনেক বছর বিগত প্রথমবারের আওয়ামী শাসনের ভুলত্রুটি ও অত্যাচারের জন্য করজোড়ে মাফ চেয়ে তসবি দেখিয়ে ভোল পাল্টিয়ে আবার ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে বিগত সরকার, যাকে বলে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার।
জনগণ ভেবেছিল, এবার হয়তো কিছুটা হলেও সরকার সহিষ্ণুতা দেখাবে। জনগণ লক্ষ করল, ক্ষমতায় আরোহণের পর সরকার আগের সেই কথা থেকে সরে আসেÑ‘টেলিভিশনে মুখ দেখাবে না; রেডিও-টিভির স্বায়ত্তশাসন দেবে; নিবর্তনমূলক কালো আইন বাতিল করা হবে; সন্ত্রাস, নির্যাতন, নারী নির্যাতন বন্ধ করা হবে এক ঘণ্টায় প্রভৃতি।’
ক্ষমতায় এসে সরকার একদম সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চরম স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছিল, দলের লোকরা তাদের প্রতি তার নমনীয় ভাব বুঝে একনাগাড়ে অন্যায়, অপরাধ, খুন, গুম ও টাকা পাচার শুরু করে। শুধু কি শুরু করে, মহা ডামাডোলে টাকা পাচার করে। প্রতিপক্ষের ওপর সব মিলিয়ে অত্যাচারের মাত্রা চরমে পৌঁছে। সব সেক্টরে আওয়ামী তাণ্ডব চলে। নির্দয়ভাবে তারা দেশের সম্পদ কুক্ষিগত করতে শুরু করে।
এ যেন সেই ১৯৭২-৭৫ সালের আওয়ামী সরকারের চেয়ে দুর্ধর্ষ সরকার। তাদের অসহিষ্ণুতার মাত্রা যেন আরো অনেক বেশি। তারা যেন একদলীয় সরকার কায়েমের লক্ষ্যেই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে। তারা যেন সেই আগের বাকশালী থলের বিড়ালই এত বছর পুষে এসেছে। সেই থলের বিড়াল যেন নির্দয়ভাবে দেশকে আক্রমণ করে সব সেক্টরকে নষ্ট করে দিয়ে অনেক বাচ্চাসহ থলে থেকে বেরিয়ে এসেছে। দেশের সব সেক্টরকে গিলে খেয়ে ফেলা হয়Ñহোক সে ব্যাংক, ব্যবসা-বাণিজ্য বা বিদেশের দেশীয় প্রতিষ্ঠান।
দেশকে ফোকলা করে ফেলেছে, রয়েছে শুধু হাড় ও কঙ্কালসার দেহ। ন্যায়নীতি দূর করে, বিবেকমন গ্লানিময় করে শতখানি সেক্টরকে তারা শেষ করে দেয়। পরিণামে দেশ পরমুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে। পরিবারতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করায় সবকিছু পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। আর এ কাজের জন্য যাদের পছন্দ, তাদের সবই দিয়ে দেয়Ñদেশ গোল্লায় যাক। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে গোপন আঁতাতরূপ থলের বিড়াল বহুলভাবে আলোচিত হয় সব মহলে। ‘তোরা যা চাস তাই দেব, দাদা, শুধু ক্ষমতায় থাকতে চাই।’
ক্ষমতায় থাকা যেন নিষ্কণ্টক হয়, তাই প্রচুর দলীয় নেতা ও নিজ বলয়ের সাংবাদিকদের নিয়ে দলবেঁধে দরিদ্র দেশের টাকা খরচ করে বাহাদুরি দেখিয়ে বিরাট বিমানে দেশের যাত্রীদের ভ্রূক্ষেপ না করে সব সময় প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে বিদেশ নিয়ে গিয়ে তাদের খুশি রাখা হয়। বিদেশ থেকে এসে ঘটা করে ঘরোয়া লেজুড়বৃত্তিক সাংবাদিকদের দাওয়াত দিয়ে আবার অনুষ্ঠান করে পাতানো প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে দেশবাসীকে বোকা বানানোর কূটকৌশল চলে, যেন দেশের লোক সব বোকা। তাদের সবকিছুতেই বোকা বানানো যাবে। আর নিষ্ঠুর সত্য, তারা আইনকানুন ও অত্যাচারের ভয়ে মুখ বন্ধ করেছিল আর আল্লাহ আল্লাহ করছে, কবে এই দানবের পতন হবে। আশ্চর্যজনকভাবেই অনেক প্রাণের বিনিময়ে সরকার পালিয়ে গেল।
দেশ দেখল, জনগণ দেখল, এ যেন একটা খোলস পড়ে রইল। প্রতিদিন বের হতে থাকল লুটপাটের কাহিনি, দেশ-বিদেশে, ব্যাংকে, বাণিজ্যে, বিদেশে অঢেল সম্পদ দলীয় নেতা, ব্যবসায়ী ও পরিবার-পরিজনের। এমনকি হাসিনার চাকরেরও আছে ৪০০ কোটি টাকা, নেতা, মন্ত্রী, লেজুড়বৃত্তিক ব্যক্তিদের সম্পদের শেষ নেই, এ যেন অঢেল সম্পদ। কত যে থলের বিড়াল, তার শেষ নেই। এবার বের হলো শ্যামল দত্তসহ ১৬ আওয়ামী সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকার পাহাড়ের খবর। শ্যামল দত্তের একার ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা। খবরে প্রকাশ ২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলোয় এবার বর্তমানে জমা আছে ৩০ কোটি টাকা।
প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৫৮ কোটি, ৩২ কোটি, ২৪ কোটি, ১৮ কোটি, ১৬ কোটি, ১৪ কোটি, ১০ কোটি, ৯ কোটি ও ৯ কোটি টাকা। তারা হয়তো বলবেন, ‘কই আমি তো জানি না কীভাবে হলো?’ কিন্তু সত্য হলো, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে; আপন আত্মীয়স্বজন, ভাইবোন, ভাগনে, মামা, শ্যালক, শ্বশুর, বাবা-মা, ভাগিনা তাদের দিয়ে নানা ব্যবসা করানো হয়েছে। বিশেষ করে বালুর ব্যবসা, সিমেন্ট, রডের ব্যবসা, ঋণ, শেয়ার, জমি কেনা, বাড়ি কেনা, যানবাহন কেনা, আরো হরেক রকম ব্যবসায় ইনভেস্টমেন্ট। একটা উদাহরণ দিই, প্রথম আলোর ২৫ নভেম্বর ইস্যুতে খাতওয়ারি বিস্তর দুর্নীতির খবর বের হয়েছে, ‘মালেক পার্টি গড়ে মানিকগঞ্জের শাসন’।
২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য হওয়ার পর জাহিদ মালেক দলের মধ্যে নিজের একটি পক্ষ তৈরিতে সক্রিয় হন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর জাহিদ মালেক নিজের প্রভাব বাড়াতে থাকেন। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি মালেক একক আধিপত্য গড়ে তোলেন। স্বজনও ও অনুসারীদের নিয়ে তার গড়া পক্ষ তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে মালেক পার্টি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে মোদির কাছে চলে যাওয়ার আগে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় দুই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ১২ হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গু অবস্থায় জীবনযাপন করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে বালুমহাল ও গণপরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যের জমি দখল করে কম দামে কেনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ‘মালেক পার্টির মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)’।
সাধারণত আত্মীয়দের নিয়ে ব্যাংক বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ, স্বজন ও অনুসারীদের নিয়ে পার্টি গঠন করে টাকা ইনভেস্ট করে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও কারসাজি করে টাকা লোপাট, প্রতিষ্ঠান গড়তে জমি দখল, নানাভাবে টাকা সরিয়ে আসল হিসাব কম দেখানো হয়। এতে করে সম্পদ বাড়ে বহুগুণ। ঠিক তেমনি সাংবাদিকরাও তাদের সম্পদ বাড়িয়েছেন, টাকা বাড়িয়েছেন বহুগুণ। এসব করলে তো বলা যায় ‘কই আমার এত টাকা কই’। আসল টাকা রাখছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এ জন্য দেখা যায়, ব্যাংকে জমা আছে অল্প, আসল টাকা রাখছে অন্যত্র। এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপের দরবেশ বাবাও একইভাবে টাকা কম দেখান। আর বলেন, কই টাকা কই। আরো অনেক গ্রুপই একই কায়দায় টাকা সরিয়েছেন নিশ্চয়ই।
লেখক : সাবেক প্রফেসর ও চেয়ারম্যান
প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও
প্রতিষ্ঠাতা, নিউরোসায়েন্স রিসার্চ সেন্টার অব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
দীর্ঘ অনেক বছর বিগত প্রথমবারের আওয়ামী শাসনের ভুলত্রুটি ও অত্যাচারের জন্য করজোড়ে মাফ চেয়ে তসবি দেখিয়ে ভোল পাল্টিয়ে আবার ক্ষমতার মসনদে আরোহণ করে বিগত সরকার, যাকে বলে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকার।
জনগণ ভেবেছিল, এবার হয়তো কিছুটা হলেও সরকার সহিষ্ণুতা দেখাবে। জনগণ লক্ষ করল, ক্ষমতায় আরোহণের পর সরকার আগের সেই কথা থেকে সরে আসেÑ‘টেলিভিশনে মুখ দেখাবে না; রেডিও-টিভির স্বায়ত্তশাসন দেবে; নিবর্তনমূলক কালো আইন বাতিল করা হবে; সন্ত্রাস, নির্যাতন, নারী নির্যাতন বন্ধ করা হবে এক ঘণ্টায় প্রভৃতি।’
ক্ষমতায় এসে সরকার একদম সব প্রতিশ্রুতি ভুলে গেছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর চরম স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছিল, দলের লোকরা তাদের প্রতি তার নমনীয় ভাব বুঝে একনাগাড়ে অন্যায়, অপরাধ, খুন, গুম ও টাকা পাচার শুরু করে। শুধু কি শুরু করে, মহা ডামাডোলে টাকা পাচার করে। প্রতিপক্ষের ওপর সব মিলিয়ে অত্যাচারের মাত্রা চরমে পৌঁছে। সব সেক্টরে আওয়ামী তাণ্ডব চলে। নির্দয়ভাবে তারা দেশের সম্পদ কুক্ষিগত করতে শুরু করে।
এ যেন সেই ১৯৭২-৭৫ সালের আওয়ামী সরকারের চেয়ে দুর্ধর্ষ সরকার। তাদের অসহিষ্ণুতার মাত্রা যেন আরো অনেক বেশি। তারা যেন একদলীয় সরকার কায়েমের লক্ষ্যেই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে। তারা যেন সেই আগের বাকশালী থলের বিড়ালই এত বছর পুষে এসেছে। সেই থলের বিড়াল যেন নির্দয়ভাবে দেশকে আক্রমণ করে সব সেক্টরকে নষ্ট করে দিয়ে অনেক বাচ্চাসহ থলে থেকে বেরিয়ে এসেছে। দেশের সব সেক্টরকে গিলে খেয়ে ফেলা হয়Ñহোক সে ব্যাংক, ব্যবসা-বাণিজ্য বা বিদেশের দেশীয় প্রতিষ্ঠান।
দেশকে ফোকলা করে ফেলেছে, রয়েছে শুধু হাড় ও কঙ্কালসার দেহ। ন্যায়নীতি দূর করে, বিবেকমন গ্লানিময় করে শতখানি সেক্টরকে তারা শেষ করে দেয়। পরিণামে দেশ পরমুখাপেক্ষী হয়ে পড়ে। পরিবারতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করায় সবকিছু পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। আর এ কাজের জন্য যাদের পছন্দ, তাদের সবই দিয়ে দেয়Ñদেশ গোল্লায় যাক। বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে গোপন আঁতাতরূপ থলের বিড়াল বহুলভাবে আলোচিত হয় সব মহলে। ‘তোরা যা চাস তাই দেব, দাদা, শুধু ক্ষমতায় থাকতে চাই।’
ক্ষমতায় থাকা যেন নিষ্কণ্টক হয়, তাই প্রচুর দলীয় নেতা ও নিজ বলয়ের সাংবাদিকদের নিয়ে দলবেঁধে দরিদ্র দেশের টাকা খরচ করে বাহাদুরি দেখিয়ে বিরাট বিমানে দেশের যাত্রীদের ভ্রূক্ষেপ না করে সব সময় প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে বিদেশ নিয়ে গিয়ে তাদের খুশি রাখা হয়। বিদেশ থেকে এসে ঘটা করে ঘরোয়া লেজুড়বৃত্তিক সাংবাদিকদের দাওয়াত দিয়ে আবার অনুষ্ঠান করে পাতানো প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে দেশবাসীকে বোকা বানানোর কূটকৌশল চলে, যেন দেশের লোক সব বোকা। তাদের সবকিছুতেই বোকা বানানো যাবে। আর নিষ্ঠুর সত্য, তারা আইনকানুন ও অত্যাচারের ভয়ে মুখ বন্ধ করেছিল আর আল্লাহ আল্লাহ করছে, কবে এই দানবের পতন হবে। আশ্চর্যজনকভাবেই অনেক প্রাণের বিনিময়ে সরকার পালিয়ে গেল।
দেশ দেখল, জনগণ দেখল, এ যেন একটা খোলস পড়ে রইল। প্রতিদিন বের হতে থাকল লুটপাটের কাহিনি, দেশ-বিদেশে, ব্যাংকে, বাণিজ্যে, বিদেশে অঢেল সম্পদ দলীয় নেতা, ব্যবসায়ী ও পরিবার-পরিজনের। এমনকি হাসিনার চাকরেরও আছে ৪০০ কোটি টাকা, নেতা, মন্ত্রী, লেজুড়বৃত্তিক ব্যক্তিদের সম্পদের শেষ নেই, এ যেন অঢেল সম্পদ। কত যে থলের বিড়াল, তার শেষ নেই। এবার বের হলো শ্যামল দত্তসহ ১৬ আওয়ামী সাংবাদিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের টাকার পাহাড়ের খবর। শ্যামল দত্তের একার ব্যাংক অ্যাকাউন্টেই লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪২ কোটি টাকা। খবরে প্রকাশ ২৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবে ১ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলোয় এবার বর্তমানে জমা আছে ৩০ কোটি টাকা।
প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৫৮ কোটি, ৩২ কোটি, ২৪ কোটি, ১৮ কোটি, ১৬ কোটি, ১৪ কোটি, ১০ কোটি, ৯ কোটি ও ৯ কোটি টাকা। তারা হয়তো বলবেন, ‘কই আমি তো জানি না কীভাবে হলো?’ কিন্তু সত্য হলো, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে; আপন আত্মীয়স্বজন, ভাইবোন, ভাগনে, মামা, শ্যালক, শ্বশুর, বাবা-মা, ভাগিনা তাদের দিয়ে নানা ব্যবসা করানো হয়েছে। বিশেষ করে বালুর ব্যবসা, সিমেন্ট, রডের ব্যবসা, ঋণ, শেয়ার, জমি কেনা, বাড়ি কেনা, যানবাহন কেনা, আরো হরেক রকম ব্যবসায় ইনভেস্টমেন্ট। একটা উদাহরণ দিই, প্রথম আলোর ২৫ নভেম্বর ইস্যুতে খাতওয়ারি বিস্তর দুর্নীতির খবর বের হয়েছে, ‘মালেক পার্টি গড়ে মানিকগঞ্জের শাসন’।
২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য হওয়ার পর জাহিদ মালেক দলের মধ্যে নিজের একটি পক্ষ তৈরিতে সক্রিয় হন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর জাহিদ মালেক নিজের প্রভাব বাড়াতে থাকেন। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি মালেক একক আধিপত্য গড়ে তোলেন। স্বজনও ও অনুসারীদের নিয়ে তার গড়া পক্ষ তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে মালেক পার্টি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পালিয়ে মোদির কাছে চলে যাওয়ার আগে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষকে গুম করা হয়েছে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় প্রায় দুই হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ১২ হাজার মানুষ আহত ও পঙ্গু অবস্থায় জীবনযাপন করছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে বালুমহাল ও গণপরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যের জমি দখল করে কম দামে কেনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ‘মালেক পার্টির মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। গত ১৯ আগস্ট তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)’।
সাধারণত আত্মীয়দের নিয়ে ব্যাংক বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ, স্বজন ও অনুসারীদের নিয়ে পার্টি গঠন করে টাকা ইনভেস্ট করে, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও কারসাজি করে টাকা লোপাট, প্রতিষ্ঠান গড়তে জমি দখল, নানাভাবে টাকা সরিয়ে আসল হিসাব কম দেখানো হয়। এতে করে সম্পদ বাড়ে বহুগুণ। ঠিক তেমনি সাংবাদিকরাও তাদের সম্পদ বাড়িয়েছেন, টাকা বাড়িয়েছেন বহুগুণ। এসব করলে তো বলা যায় ‘কই আমার এত টাকা কই’। আসল টাকা রাখছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এ জন্য দেখা যায়, ব্যাংকে জমা আছে অল্প, আসল টাকা রাখছে অন্যত্র। এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপের দরবেশ বাবাও একইভাবে টাকা কম দেখান। আর বলেন, কই টাকা কই। আরো অনেক গ্রুপই একই কায়দায় টাকা সরিয়েছেন নিশ্চয়ই।
লেখক : সাবেক প্রফেসর ও চেয়ারম্যান
প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও
প্রতিষ্ঠাতা, নিউরোসায়েন্স রিসার্চ সেন্টার অব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১১ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১১ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১২ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে