জবিতে পাঠকমেলার মতবিনিময় সভা

আলামিন হোসাইন
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১০: ১৫

ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। এই স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়েছে আমার দেশ পত্রিকার পাঠকমেলার মতবিনিময় ও আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তারা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হন এবং নিজেদের দায়িত্ব ও কর্মপরিকল্পনা ভাগ করে নেন।

বিজ্ঞাপন

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার দেশ পাঠকমেলার সভাপতি ফাহিম হাসনাত এবং সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন পাঠকমেলার সাধারণ সম্পাদক আকরাম খান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি আবু সায়েম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহানা চৌধুরী ও তাহসিনুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুল বাশার সুমন, দপ্তর সম্পাদক হেনা শিকদার, সহ-দপ্তর সম্পাদক ঊর্মি আক্তার ঝিনুক, প্রচার ও প্রকাশনা-বিষয়ক সম্পাদক নুসরাত জাহান অর্পিতা, অর্থ সম্পাদক তানজিল মিয়া, সমাজসেবা-বিষয়ক সম্পাদক সেজু আক্তার, সাহিত্য সম্পাদক জয়া রানী পাল প্রমুখ। এ ছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে ছিলেন রাহুল শেখ, ইফাত হাসান ও সবুর কাজী।

পরিচিতি পর্ব শেষে সদস্যবৃন্দ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় বসে কীভাবে লেখনীর মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা যায়, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। জ্ঞান অর্জন কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়। একজন ব্যক্তি যদি আগ্রহী, পরিশ্রমী ও সচেতন হন, তবে নানা উৎস থেকে জ্ঞান অর্জন করে তিনি নিজেকে গড়ে তুলতে পারেন একজন জ্ঞানী, দক্ষ ও বিচক্ষণ মানুষ হিসেবে। তবে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করার অন্যতম একটি মাধ্যম হচ্ছে লেখালেখি চর্চা করা। এই চর্চার মাধ্যমে মানুষ অনেক কিছু জানতে পারে এবং শিখতে পারে। এতে তথ্য অনুসন্ধানের অভ্যাস গড়ে ওঠে, ভাষা ও প্রকাশভঙ্গির উন্নতি হয়, সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি পায়, আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং পাঠ্যবিষয়ক গভীর অনুধাবন ঘটে। এসব বিষয় আলোচনায় উঠে আসে।

সভাপতি ফাহিম হাসনাত বলেন, আমার দেশ পাঠকমেলা আমাদের নতুন একটি পরিবার। আমরা সবাই এ পরিবারের সদস্য। পরিবারের সদস্যদের যেমন কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হয়, ঠিক তেমনি নতুন পরিবারের সদস্য হিসেবেও আমাদের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের মূল কাজ হচ্ছে, আমার দেশকে সঙ্গে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলা।

তিনি আরো বলেন, আমার ইচ্ছা পাঠকমেলার প্রতিটি সদস্যকে লেখক হিসেবে দাঁড় করানো, যারা তাদের কলমের কালি দিয়ে সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্রের উপকার করে যাবে। আর এক্ষেত্রে সর্বদা আমাদের পাশে রয়েছে দেশের বহুল প্রচলিত জাতীয় পত্রিকা আমার দেশ।

সাধারণ সম্পাদক আকরাম খান বলেন, লেখা হলো সত্য ও সৌন্দর্যের প্রকাশ। একটি ভালো লেখা মানুষকে ন্যায় ও মানবতার পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে। লেখায় যেন থাকে দেশপ্রেম, ভ্রাতৃত্ব আর প্রগতির বার্তা। নবীন লেখকদের প্রতি আহ্বান—তারা যেন কলমকে সমাজের কল্যাণে ব্যবহার করে। ভালো লেখা যুগের পর যুগ মানুষকে পথ দেখায়।

এ ছাড়া সভায় আলোচনা করা হয় সামাজিক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন দিক নিয়ে, যেমন শিক্ষা উন্নয়ন কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা। সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক। একজন শিক্ষার্থী বা সাধারণ নাগরিকও ছোট, ছোট উদ্যোগের মাধ্যমে বড় পরিবর্তনের অংশ হতে পারে। সমাজ উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুধু নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং সচেতন ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার মাধ্যম। এ ছাড়া এখানে রাষ্ট্র নিয়ে ব্যক্তির নিজের সচেতনতার বিষয়টিও আলোচনা করা হয়। একজন ব্যক্তির রাষ্ট্রের ওপর কী কী দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে এবং রাষ্ট্র তার প্রতি কী কী দায়িত্ব পালন করবে, এসব আলোচনা করা হয়।

সবশেষে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, প্রত্যেক মাসে একটি পূর্ণাঙ্গ সাধারণ সভা ও কার্যনির্বাহী পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য একটি সাব কমিটি গঠন করা হবে। এ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয়, প্রত্যেক সদস্য তার নিজ নিজ দায়িত্ব কর্তব্য পালনে নিবেদিতভাবে কাজ করবে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত