প্রতিবেদনে বলা হয়, গুম হওয়াদের রাখা হতো শব্দনিরোধক স্থানে। এর ফলে নির্যাতনের সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকার বাইরের কেউ শুনতে পেত না।
এর আগে শুক্রবার রাতে বড়উঠান ইউনিয়নের ফাজিলখার হাটের একটি ভাড়া বাসায় পুরনো প্রেমিকা পোশাক কর্মী হাবিবা আক্তারের (২৩) ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে এ ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন যুবক মোহাম্মদ আলমগীর (২৮)।
শেখ হাসিনার টানা ১৬ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্রের ছত্রছায়ায় একটি ভয়ংকর ও নিষ্ঠুর চর্চা প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল—গুম ও নির্যাতন। গুম সংক্রান্ত কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এই কালো অধ্যায়ের নির্মম বাস্তবতা প্রকাশ্যে এনেছে।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার গত সরকারের আমলে গুম করে নির্যাতন,কারাগারে নির্যাতনের ঘটনার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটে। এই সময় র্যাব, পুলিশ এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করে নির্যাতন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনাও ঘটে।
জুলাই পরবর্তী সময়ে নারীদের ওপর রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সহিংসতা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ফরিদপুরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষা অভিযোগ করেন, পুলিশের সামনেই বিএনপি কর্মীরা তার ওপর সহিংস হামলা চালিয়েছে।
দেশে চলতি বছরের মার্চ মাসে ৪৪২ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ১৬৩ জন এবং ধর্ষণচেষ্টার শিকার ৭০ জন। ১৫টি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আমাদের দেশে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না। শিক্ষায় পশ্চাৎপদের কারণে গৃহকর্মীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন।
মার্চে ৯৭টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু। একই সঙ্গে আহত ৭৩৩ জন। এ ছাড়াও ২৮৪ জন নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের পাশাপাশি ৪১ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের হার অনেক বেশি। ভারত সাংবিধানিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে বাস্তবে ধর্মীয় সহিষ্ণুতা অনেক কম।
এ ঘটনায় এজাহার জমা হয়েছে। এটি নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
শিশু ধর্ষণের বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিধান করা হচ্ছে। বলাৎকারসহ যে কোন ধরণের ধর্ষণ আইনের অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। এছাড়াও আরো কিছু বিধান যুক্ত করে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মাগুরার নির্যাতনের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে জানিয়ে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমি খুব সংক্ষেপে বলি- ১৫ বছর ধরেই অন্যায়-অবিচার দেখলে সহ্য হতো না। বাংলাদেশের প্রত্যেক সরকারই কম-বেশি অন্যায় করত। কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনকালে অন্যায়-অবিচার, নির্যাতন, মিথ্যাচার, ভারততোষণ- এগুলো এমন একপর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে নিজের বিবেকের তাড়নায় চুপ থাকতে পারতাম না।
নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি আক্রমণাত্মক ভঙ্গি, কটূক্তি, ইভ টিজিং, হেনস্তা, যৌন হয়রানি বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স হটলাইন সেবা চালু করেছে।
আমাকে সেদিন রাত ১০টা থেকে নির্যাতন করা শুরু হয়। বারোটার পর আর কোনো হুঁশ ছিল না৷ রাত সাড়ে তিনটার দিকে আমি নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে পাই। এক্সরে রিপোর্টে দেখি আমার বাম পা ও হাত ভেঙে গিয়েছে। আমাকে হল প্রশাসন থেকে বাঁচানোর জন্য কোনো চেষ্টা করা হয়নি। আমি এরপর আর কোনো ক্লাস করতে পারিনি। ...
চোখের কাপড় তুলে দেখি আমি পাবনা র্যাব অফিসে। তখন বুঝলাম আমাকে র্যাব তুলে এনেছে। পাবনা কার্যালয়ে আটকে রাখে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এরপর সন্ধ্যার পর পাবনা থেকে ঢাকায় র্যাব-১ কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে ছোট্ট একটা ঘরে রাখা হয়। যেন আয়নাঘরের মতো। কোনো দিকে হাত-পা নাড়াচাড়া করা যেতো না। একজন মানুষ শুয়েও থাকা যায়
হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন তিনি। বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে চারটি মামলায় তিন দফায় গ্রেপ্তার হয়ে সাড়ে ৬ মাস কারাগারে থাকার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যেও ক্ষতিগ্রস্ত হন ঢাকা জেলা উত্তর হেফাজতের সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক এই সম্পাদক।