দক্ষিণ কোরিয়ায় সংকট

৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে গ্রেপ্তার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১: ১৪

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কয়েক সপ্তাহের অস্থির অবস্থার পর বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অভিযানে অন্তত তিন হাজার পুলিশ সদস্য অংশ নেয়।

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে এক ভিডিও বার্তায় ইউন জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তপাত এড়াতে তিনি তদন্তকারীদের কাছে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

দেশটির তদন্ত বিভাগ জয়েন্ট ইনভেস্টিগেশন হেডকোয়ার্টার জানিয়েছে, তারা বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করেছে।

গ্রেপ্তারের পর রাজধানী সিউলের মধ্যাঞ্চলের প্রেসিডেনশিয়াল প্রাসাদ থেকে ইউন সুক ইওলকে বহনকারী একটি গাড়িবহর বের হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তাকে সিউলের দক্ষিণাঞ্চলে গোওচেয়ন এলাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্নীতি তদন্ত দপ্তর- সিআইওর দপ্তরে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ইউনকে গ্রেপ্তারে ভোরেই প্রেসিডেনশিয়াল প্রাসাদে অবস্থান নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। কিন্তু প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি দিয়ে বাড়ির প্রবেশপথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। সেই বাধা এড়াতে মই বেয়ে ইউনের বাড়ির প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়েন কয়েক সদস্য।

অন্তত ৬ ঘণ্টার অভিযানের পর সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় প্রথম কোনো প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার হলেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, সিআইওর উপপ্রধান লি জে-সিয়াং অভিশংসিত প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। সিআইও জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ইউনের আইনি প্রতিনিধিরাও উপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে গ্রেপ্তারের পর ইউনের একটি পূর্বে ধারণ করা ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তিন মিনিটের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘এটা অবৈধ তদন্ত। কিন্তু আমি অনাকাঙ্ক্ষিত রক্তপাত এড়াতে সিআইওর তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সামনে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে এর অর্থ এটা নয় যে, আমি তাদের তদন্তের অনুমোদন দিয়েছি।’

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করে আলোচনায় এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। পরে দেশটির পার্লামেন্ট সদস্যদের চাপে তা বাতিল করতে বাধ্য হন তিনি।১৪ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে সামরিক আইন জারির দায়ে ইউন সুক ইওলকে অভিশংসন করে। বর্তমানে সাংবিধানিক আদালতে ইউনের অভিশংসনের বিষয়ে শুনানি চলছে। গত মঙ্গলবার এ বিষয়ে আদালতের প্রথম শুনানিও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নিরাপত্তার কথা বলে শুনানিতে অনুপস্থিত থাকেন ইউন।

শুনানি শেষ হওয়ার অল্প কিছু সময় পরই ইউনকে গ্রেপ্তার অভিযানের কার্যক্রম শুরু হয়।

অভিশংসিত হলেও ইউন সুক ইওল সিউলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে অবস্থান করছিলেন। তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জেরেই প্রাসাদ ছেড়ে বের হননি তিনি।

বুধবারের এই অভিযান ইউনকে গ্রেপ্তারে দ্বিতীয় চেষ্টা। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি অভিশংসিত এই প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রথম দফা চেষ্টা চালানো হয়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত