হোম > সারা দেশ > খুলনা

আওয়ামী দোসর সেই ২৩ শিক্ষক-কর্মচারী পুনর্বহাল

কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ

ওয়াজেদ খান ডবলু, কেশবপুর (যশোর)

কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে যশোরের কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের বরখাস্ত ২৩ শিক্ষক ও কর্মচারীকে বিশেষ ব্যবস্থায় স্ব-পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব আহম্মেদ কায়কাউসকে প্রধান করে টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে তাদের পুনরায় চাকরিতে বসানো হয়। এছাড়া গত সাত বছর প্রতিষ্ঠানে তাদের হাজিরার ধারাবাহিকতা না থাকলেও চার কোটির বেশি টাকা (এরিয়ার) বকেয়া বিল তুলে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র মতে, ২০১০ সালে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের তৎকালীন গভর্নিংবডির সভাপতি ও সাবেক জাতীয় সংসদের হুইপ শেখ আব্দুল ওহাব মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ৫০ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন। এ সময় প্রায় ছয় কোটি টাকা নিয়োগ-বাণিজ্য করা হয়। ২৩ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২২ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী রয়েছেন। তাদের জাল সনদ, সনদে অনিয়ম ও নিবন্ধন ছাড়াই সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে তৎকালীন গভর্নিংবডি ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, গভর্নিংবডির সভাপতি রেবা ভৌমিক ২০১৪ সালের ৫ জুন এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন। এর পাঁচদিন পর ১০ জুন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বাজেট) মো. মজিবুর রহমান এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (পরিদর্শন ও নিরীক্ষা) মো. রাশেদুজ্জামানসহ দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা প্রশাসনিক ও আর্থিক অনিয়মের তদন্ত করেন।

দুদিনব্যাপী তদন্তে তৎকালীন প্রভাষক বুলবুল কুদ্দুস, দেবী বিশ্বাস, রাজিব সানা, জয়দেব বৈরাগী, আলমগীর হোসেন, হাবিবুল্লাহ বিলালি, তোজাম্মেল হোসেন কাজল, রুনা লায়লা, মেহেদী হাসান, ফজলে খোদা মিন্টু, শাহ আলম, হুমায়ুন কবির, আসমা খাতুন, মনিরুজ্জামান, গোলাম ফারুক, বাহারুল আলম, দেবাশীষ কুমার দে এবং কর্মচারী রাজিয়া সুলতানাসহ সবাইকে জাল সনদ, যোগ্যতা না থাকা এবং নিবন্ধন ছাড়াই বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগের প্রমাণ মেলে। তদন্ত কমিটি ওইসব শিক্ষক-কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য একই বছরের ২২ জুলাই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশ করে।

মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে ২০১৪ সালের ৯ নভেম্বর তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্টদের দোসর ওইসব শিক্ষক-কর্মচারী আবার স্ব-পদে বহাল হতে কেশবপুরের সাবেক সংসদ ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের শরণাপন্ন হন। এ সময় উচ্চ মহলের নির্দেশে তৎকালীন গভর্নিংবডির সভাপতি রেবা ভৌমিক ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট রেজুলেশনের মাধ্যমে তাদের স্ব-পদে পুনর্বহাল করেন।

সূত্র জানায়, অবৈধ উপায়ে প্রতিষ্ঠানটির জিও জারির একদিন আগে এবং পরবর্তী চাকরিতে পুনর্বহালের ১৩ দিন আগে ৭ আগস্ট তাদের যোগদান দেখানো হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের চাকরি জাতীয়করণে বাধার সৃষ্টি হলে সবাই আওয়ামী লীগের উচ্চমহলে দেন-দরবার করেন। এ সময় টাস্কফোর্সের সুপারিশে তাদের জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়।

এছাড়া পুনর্বহাল হওয়া শিক্ষক বুলবুল কুদ্দুস একই সঙ্গে কেশবপুর কলেজ এবং কেশবপুর পৌর কারিগরি কলেজে চাকরি করতেন। তথ্য গোপন করে তিনি পদোন্নতি নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের বিএম শাখায় সংযুক্ত থাকলেও অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সহকারী অধ্যাপক পদ গ্রহণসহ একাধিক অভিযোগে তাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত করা হয়। প্রভাষক হাবিবুল্লাহ বিলালির নিয়োগকালীন সময়ে অনার্সে তৃতীয় শ্রেণিধারী এবং সনদ না থাকায় তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছিল।

আওয়ামী দোসর ওইসব অবৈধ নিয়োগধারী শিক্ষক-কর্মচারীরা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে প্রতিষ্ঠানে সভা-সমাবেশসহ বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক-কর্মচারীদের নানাভাবে নাজেহাল করেছেন বলে একাধিক শিক্ষক এই প্রতিনিধিকে জানান। তাদের চাকরি থেকে বরখাস্তসহ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এ বিষয়ে প্রভাষক হাবিবুল্লাহ বিলালি বলেন, আমার চাকরি এমপিওভুক্ত ছিল না। বিশেষ ব্যবস্থায় জাতীয়করণের আওতায় আনা হয়। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগবিধি অনুযায়ী আমার নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক ছিল।

কেশবপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি ২০২৪ সালে এ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছেন। এরপর তিনি শুনেছেন ২৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এরপর তাদের বরখাস্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আবার স্ব-পদে পুনর্বহাল করা হয়। এছাড়া প্রভাষক ফজলে খোদা, আ. সাত্তার, মোছাম্মত রুনা লায়লাসহ ১১ জন প্রভাষকের চাকরি এমপিওভুক্ত ছিল না। তারা বিশেষ ব্যবস্থায় সরাসরি জাতীয়করণের আওতায় আসে। গত সাত বছরে বেতন-ভাতাদি বাবদ ৪ কোটি ২ লাখ ৪৩ হাজার ২২৪ টাকা বকেয়া তুলে নিয়েছেন পুনর্বহাল শিক্ষক-কর্মচারীরা।

ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির ৫ সদস্য আটক

বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়ে যা বললেন উপদেষ্টা

খুনি হাসিনা আমাকে বিনা দোষে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারতে চেয়েছিল

নারীরাই ধানের শীষে ভোট দিয়ে বার বার বিএনপিকে ক্ষমতায় আনে

নির্বাচনে হলফনামায় তথ্য গোপন করেছিলেন শেখ হাসিনা: দুদক চেয়ারম্যান

ঢাকাস্থ পীরগাছা-কাউনিয়াবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় এমপি প্রার্থী এটিএম আযম খানের

হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্ক এগ্রিকালচার সেন্টার বুক কর্নার উদ্বোধন

বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে সড়ক অবরোধ

ধর্ম অবমাননার দায়ে সালথায় পল্লী চিকিৎসক আটক

ইন্দুরকানীতে ১৩ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক