পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হন। আহতদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উপজেলার চরকাজল ইউনিয়নের দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনের চৌরাস্তায় রাত ৯টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ী, সদস্য সবুজ রাঢ়ী, নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী ও সলেমান রাঢ়ী। তারা সবাই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদের আহতদের মধ্যে রয়েছেন যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খলিফা। আজমির খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা। এরা গণঅধিকারের কর্মী সমর্থক। দুপক্ষের অন্যান্য আহতরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চরশিবা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি গঠন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কপালবেড়া বাজারে গণঅধিকারের সভা ছিল। সভায় বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল শোডাউনের মাধ্যমে অংশ নেন। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে গলাচিপায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের আগমনে রাতে শুভেচ্ছা মিছিল করে চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়ন বিএনপি। একদিকে সভা শেষ করে গণঅধিকার নেতাকর্মীরা ফিরছিলেন। অন্যদিকে মিছিল শেষে বিএনপির নেতাকর্মীরাও বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দক্ষিণ কাপালবেড়া চৌরাস্তা বাজারে দুদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সভায় লোক উপস্থিত হওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় বিএনপির নমিনেশন হাসান মামুন পাবেন নাকি গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পাবেন এ বিষয় নিয়ে তাদের তর্ক হয়। একপর্যায়ে দুদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুরের ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, হাসান মামুন নমিনেশন না পাওয়ার কারণে বিএনপির লোকজন উচ্ছৃঙ্খলতা শুরু করে। এলাকায় একটা ভয়ভীতি ও ত্রাসের রাজনীতি করতে চায়, যাতে গণঅধিকারে কেউ যোগ না দেয়।
এদিকে ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। এ সময় উভয় দলের আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন তিনি।
গলাচিপা থানার ওসি আশাদুর রহমান জানান, দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুই পরিবারের সদস্যরা দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাদের পূর্বে প্রভাব বিস্তার নিয়ে পারিবারিক বিরোধ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় এ নিয়ে সংঘর্ষ হতে পারে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।