ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটসহ গোটা উত্তর জনপদ। রাত-দিন চারদিক ঢেকে গেছে কুয়াশার চাদরে। এর সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে হিমেল হাওয়া। গরম কাপড় পরিধান করেও ঠান্ডার হাত থেকে রেহাই মিলছে না। গ্রামাঞ্চলের শীতার্ত মানুষ দল বেঁধে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে কোনোরকম শীত নিবারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা। মাঠে রয়েছে ভুট্টা, সরিষা, গম, আলু এবং আমনের বীজতলা। কিন্তু কনকনে ঠান্ডার কারণে তারা খেতে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। কেউ কেউ ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজে নামলেও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারছেন না।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার আকবর আলী বলেন, শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হিমেল হাওয়া, এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ বের হচ্ছে না। এদিকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন অভিভাবকরা। সদর উপজেলা ছাড়া অন্য চারটি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। লালমনিরহাটে শহরের রিকশাচালক কোরবান আলী বলেন, এই ঠান্ডায় লোকজন খুব কম বের হয়। তাই রিকশা নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। পরিবার চালানো অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এত ঠান্ডায় কাজ করা যায় না, খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে।
লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন আবদুল হাকিম জানান, গত ৭ দিন ধরে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়া, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশু ও বৃদ্ধদের বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যেন কোনোভাবেই ঠান্ডা না লাগে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, শীত ও ঠান্ডায় কৃষকদের ক্ষতি রোধে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার জানান, শীত নিবারণের জন্য দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে। আরো চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।