আমার দেশ-এর তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত শিল্প গ্রুপ কর্ণফুলীর এমডি আবদুর রশিদের করা মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে), বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (অ্যাব) ও জিয়া পরিষদসহ ১০টি সংগঠন এসব বিবৃতি দেয়।
বিবৃতিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানোর পাশাপাশি নদীখেকো আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। এর আগে গত ১৬ ও ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব ও আমার দেশ-এর আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস ও স্টাফ রিপোর্টার এমকে মনিরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও শতকোটি টাকার মানহানির মামলা করেন মামলাবাজ আবদুর রশিদ।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, এসব ঘটনা মুক্ত ও গণমাধ্যমের অবাধ পরিবেশকে বিঘ্নিত করছে। সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। নেতারা জানান, সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। চারপাশের অনিয়ম, দুর্নীতি প্রকাশ করা সাংবাদিকদের দায়িত্ব। কেউ ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করলে নিঃসন্দেহে তার উদ্দেশ্য দুরভিসন্ধিমূলক।
এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষে সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেলিম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের মামলা সাংবাদিকতা ভয় দেখানোর উপায়মাত্র। প্রচলিত নিয়মানুযায়ী কেউ সংবাদে ক্ষুব্ধ হলে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করে প্রতিবাদ দেওয়ার কথা। কিন্তু আবদুর রশিদ তা না করে সরাসরি আদালতে মামলা করেছেন। এতে স্পষ্ট যে তার উদ্দেশ্য আমার দেশ-এর সাংবাদিকদের হয়রানি করা।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষে বিবৃতি দেন সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল। এতে বলা হয়, যেই অসৎ পন্থায় মামলা দিয়ে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটি কখনো সফল হবে না। এর মাধ্যমে আবদুর রশিদের নদী দখল, বেআইনি বাণিজ্য, রাজস্ব ফাঁকিসহ সব অবৈধ কর্মকাণ্ড বৈধতা পাবে না।
একইভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী সেলিম মোহাম্মদ জানে আলম, জিয়া পরিষদের পক্ষে মহানগর সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া বিবৃতি দেওয়া অন্য সংগঠনগুলো হলো, সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাব, মিরসরাই প্রেস ক্লাব, কর্ণফুলী প্রেস ক্লাব, সামাজিক সংগঠন সীতাকুণ্ড যুব উন্নয়ন ফাউন্ডেশন।
সংগঠনগুলো বলছে, শুধু সাংবাদিকদের নয় সাধারণ মানুষকেও ভয় দেখাচ্ছেন আবদুর রশিদ। মামলা দিয়ে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ রাখা যাবে না বলেও জানান তারা। এছাড়া রশিদ মামলা করেই ক্ষান্ত হননি, সাংবাদিকদের নামসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে ছাপিয়েছেন। এটির মাধ্যমে তিনি তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।