নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঐতিহাসিক কাশিমপুর রাজবাড়ী নানা কারণে এখন ধ্বংসের পথে। দখল দূষণ আর যত্রতত্র বসতবাড়ি গড়ে ওঠায় সময়ের বিবর্তনে রাষ্ট্রীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই জমিদার বাড়িটি এখন ধ্বংসের শেষ প্রান্তে রয়েছে।
রাজবাড়ীর জমির একটি অংশে কাশিমপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হলেও তাদের নজরদারির অভাবে প্রভাবশালীরা জবরদখল করে নিয়েছে। সব মিলে ঐতিহাসিক স্থানটি এখন দিন দিন বিরানভূমি আর দখলদারিত্বের রাজ্যে পরিণত হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছে সরকারি এই বিশাল সম্পত্তি রক্ষায় কার্যকরি ভূমিকা নিয়ে সুন্দর্যবর্ধনের কাজ করে একটি মিনি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও নানা জটিলতার কারণে সামনে এগুতে পারেননি তিনি। অবৈধ দখলবাজদের কবলেই এখন কাশিমপুর রাজবাড়ীর বিশাল সম্পত্তি। উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে নওগাঁর ছোট যমুনা নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত ঐতিহাসিক কাশিমপুর রাজবাড়ী। এই রাজ পরিবারের অনেক সদস্যই কিছুটা বদমেজাজি হওয়ার কারণে রাজত্ব চলাকালীন সময়ে এই বাড়িটিকে পাগলা রাজার বাড়ি বলে খ্যাতি ছিল। বর্তমানে রাজবাড়ীর শেষ অংশটুকু গরুর গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করায় ন্যূনতম নিদর্শনও আজ শেষের পথে। দুটি মন্দিরের কিছু অংশ এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
রাজবাড়ীর মূল ভবনের সামনের চারটি গম্বুজ, উত্তর পাশে হাওয়াখানা ও পশ্চিম পাশে একটি দুর্গামন্দির ছিল। প্রতিনিয়ত মন্দিরে পূজা ও সন্ধ্যায় জ্বালানো হতো প্রদীপ, শোনা যেত শঙ্খ’র উলুর ধ্বনি। মন্দিরের পাশে ছিল বৈঠকখানা, পুকুর ও নদীর ধারে একটি কাচের ঘরের তৈরি বালিকা বিদ্যালয়। স্থানীয় প্রবীণরা বলছেন, কাশিমপুরের পাগলা রাজা নাটোরের রাজার বংশধর। শ্রী অন্নদা প্রসন্ন লাহড়ী বাহাদুর ছিলেন এই রাজত্বের শেষ রাজা। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে ছিলেন।