বরিশালে হাফভাড়া না নেয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বাস টার্মিনালে হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করেছে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় পাল্টাপাল্টি হামলায় শিক্ষার্থীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনালে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্তিতি স্বাভাবিক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে গেলে পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় ২৫ জন আহত হয়। তবে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে কোনোরকম পাল্টা হামলার ঘটনা অস্বীকার করা হয়েছে।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বিএম কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্করসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে হাফ ভাড়া দিতে চাইলে তাদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করে বাস শ্রমিকরা।
বিষয়টি বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. মোশারফকে জানানো হলে তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো শ্রমিকদের ছাত্রদের উপর লেলিয়ে দেন। এ সময় শ্রমিকদের হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। এ ঘটনার পর তারা বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে সহপাঠীদের জানালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এক জোট হয়ে বাসস্ট্যান্ডে এসে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। সময় শিক্ষার্থীরা এলোপাথাড়ি বাসস্ট্যান্ডে সারিবদ্ধ করে রাখা কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে। এক পর্যায় তারা একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতি টের পেয়ে শ্রমিকরা বাসস্ট্যান্ড থেকে শটকে পড়ে।
পরিবহণ শ্রমিক নেতা আরজু মৃধা বলেন, কলেজ বন্ধের দিনও হাফভাড়া দেয়া নিয়ে বরিশাল-মুলাদী রুটের এক শিক্ষার্থীর সাথে বাস শ্রমিকের বিরোধ হয়। এরপর সন্ধ্যায় বিএম কলেজের কয়েক শ’ শিক্ষার্থী এসে নথুল্লাবাদ স্টান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করে। এসময় সেখানে থাকা ১৫/২০ জন শ্রমিককে বেপরোয়া মারধর করে গুরুতর করে তারা।
ঘটনাস্থলে থাকা বিএম কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হাফভাড়া আমাদের অধিকার।
শনিবার মুলাদী থেকে বরিশাল নগরীতে আসার পথে এক শিক্ষার্থী হাফভাড়া দিতে চাইলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে বাস শ্রমিকরা। খবর পেয়ে আমরা (শিক্ষার্থীরা) নথুল্লাবাদ স্টান্ডে জড়ো হয়ে শ্রমিকদের বিচার দাবি জানাই। এসময় আমাদের উপর বাস শ্রমিকরা হামলা চালায়। এতে ২০/২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।