হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের ৭০% ভবনই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে

ওচমান জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর অন্তত ৭০ শতাংশ ভবন ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, যেকোনো সময় ৭-৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হলে এ বিপুলসংখ্যক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে রয়েছে অপরিকল্পিত গড়ে ওঠা এলাকাগুলো—রিয়াজউদ্দিন বাজার, খাতুনগঞ্জ, নিউ মার্কেট, স্টেডিয়াম, হাজারী গলি ও বহদ্দারহাট।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ইমারত নির্মাণ আইন অমান্য, সয়েল টেস্ট ছাড়া নির্মাণ, দুর্বল ফাউন্ডেশন এবং অতি ঘনবসতির কারণে নগরীর ঝুঁকি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঢাকায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের মতো কোনো কম্পন চট্টগ্রামে হলে ঘিঞ্জি এলাকার বহু ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নগরবাসীর অভিযোগ, ১৯৯৭ সালের ভূমিকম্পে নগরীর হামজারবাগের সওদাগর ভিলা ধসে ২৩ জনের মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও সিডিএ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এছাড়া ছোট ছোট অনেক ভূমিকম্পে ভবন হেলে পড়া বা ফাটল ধরার ঘটনাও প্রায়ই দেখা যায়।

এর আগে গত শুক্রবার সকালে পাঁচ দশমিক সাত মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা। কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী কম্পনে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিংয়ের মনসুরাবাদ মিয়াবাড়ি সড়কের একটি ছয়তলা ভবন পাশের ভবনের দিকে হেলে পড়ে। এরপর চট্টগ্রামে মোট চারবার ভূমিকম্প অনুভূত হলে নগরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে আছেন নগরের রিয়াজুদ্দিন বাজার, হাজারী গলি, টেরিবাজারসহ ঘিঞ্জি এলাকার মানুষ।

হাজারী গলির একজন ব্যবসায়ী জানান, অনেক আগে থেকেই এ এলাকার ভবনগুলোর কোনো বিধি মানা হয়নি। প্রতিটি ভবনই পাশের ভবনের সঙ্গে লাগোয়া। এতে অগ্নিঝুঁকি যেমন আছে, তেমনি ভূমিকম্প ঝুঁকিও সঙ্গী এ এলাকার বাসিন্দাদের।

সিডিএ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শহরে বর্তমানে তিন লাখ ৮২ হাজার ১১১টি ভবন রয়েছে, যার মধ্যে দুই লাখ ৬৭ হাজার ভবন মাঝারি কম্পনেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ৯৪টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা সিটি করপোরেশনকে পাঠানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ভবন মালিকদের অনেকে ঝুঁকি অস্বীকার করেন, কেউবা ভাঙার খরচ দিতে চান না। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো আগের মতোই রয়ে গেছে।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি সুভাষ বড়ুয়া বলেন, চট্টগ্রামের ৭০ শতাংশ ভবন সয়েল টেস্ট ছাড়া নির্মিত। ফলে সেগুলোর ফাউন্ডেশন অত্যন্ত দুর্বল। ভবন নির্মাণে দুর্বল ফাউন্ডেশনই চট্টগ্রামকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে। তিনি অভিযোগ করেন, এর জন্য মূলত দায়ী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের নজরদারি ঘাটতি ও কর্তব্যে অবহেলা।

তিনি আরো জানান, চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় মাটি এতটাই দুর্বল যে, ৫ মাত্রার উপরে কোনো কম্পন হলে ভবনগুলো দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না। নতুন জরিপে দেখা গেছে, নগরের ৩২টি ওয়ার্ড এখন উচ্চ ঝুঁকির জোন। পুরো চট্টগ্রাম অঞ্চল উচ্চ ভূকম্পনপ্রবণ। শুধু ভবন নয়, চট্টগ্রাম বন্দর, শাহ আমানত বিমানবন্দর, ইস্টার্ন রিফাইনারি, বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও অবকাঠামোও হুমকির মুখে। নগরের এক হাজার ৩৩টি স্কুলের মধ্যে ৭৪০টি ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান তিনি। বড় ভূমিকম্প হলে সড়ক, সেতু অবকাঠামোতেও ব্যাপক ধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

চুয়েটের সাবেক উপাচার্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ভবন নির্মাণে আইন না মানা এবং তদারকির অভাবে চট্টগ্রাম ভূমিকম্পের অতিমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে । এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতির ঘাটতিও স্পষ্ট বলে জানান তিনি।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পুরোনো ভবন, অনিয়ন্ত্রিত বহুতল নির্মাণ ও দুর্বল ফাউন্ডেশন মিলিয়ে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও ভয়াবহ প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

সচেতন মহলের মন্তব্য, বাংলাদেশ ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। দেশে আরো বহুবার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে; অথচ দুর্যোগ-পরবর্তী উদ্ধার প্রস্তুতি অত্যন্ত দুর্বল। ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন ও সিডিএ—কোনো সংস্থারই যথেষ্ট সরঞ্জাম বা প্রশিক্ষিত দল নেই। এমনকি উদ্ধারকারী যান ঢোকারও সুযোগ থাকবে না বহু এলাকায়।

তারেক রহমানকে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ, উপজেলা আহ্বায়কের বহিষ্কার দাবি

মীর মুগ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে কালি দিলো দুর্বৃত্তরা

রামগঞ্জে চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যা

হাইমচরে আমনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

৩১ দফার ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ তৈরি হবে: লায়ন হারুন ‎

শতবর্ষী মা সহিনার খোঁজ নেন না তিন সন্তান

সাপ আতঙ্কে বন্ধ মেঘনার সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়

সীতাকুণ্ডে মাইকে ঘোষণা দিয়ে জামায়াত নেতাদের ধাওয়া করলেন গ্রামবাসী

বিএনপি নেতার নেতৃত্বে উজাড় সন্দ্বীপ উপকূলীয় বনাঞ্চল

পাহাড়ে সংঘাত থামিয়ে ভ্রাতৃত্বের ডাক