কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিল করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সাথে ব্যবসায়িকদের এই সংগঠনের নতুন প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমরান হোসাইন সজিব।
সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্বে) মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করেছেন।
ওই অফিস আদেশে বলা হয়, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি নিবন্ধিত বাণিজ্য সংগঠন। সংগঠনটির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি তাদের সার্বিক কার্যক্রম সাধারণ সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে সম্পাদন করতে পারছে না।
অফিস আদেশে আরো বলা হয়, যেহেতু, চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষের কারণে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যনির্বাহী কমিটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না এবং সমন্বয়হীনতার কারণে বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭ (১) ধারা অনুযায়ী- ব্যবসা, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবাখাতের স্বার্থে সংগঠনটির সার্বিক কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। সেহেতু, সংগঠনটির বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি বাতিলপূর্বক সরকারের অনুমোদনক্রমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), কক্সবাজারকে ‘কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হলো।
মহাপরিচালক মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন ওই আদেশে বলেন, নতুন প্রশাসক আগামী ১২০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।
অপরদিকে ২০২৪ সালের ১০ নভেম্বর কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মোহাম্মদ সানাউল্লাহর স্বাক্ষরে একটি চিঠি পাঠানো হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে।
বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিবের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে দাবি করা হয়, তিনি কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ওই চেম্বার ১৯৮৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত। যার লাইসেন্স নম্বর ১২। লাইসেন্স পাওয়ার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে নিয়মতান্ত্রিক ও স্বচ্ছভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে তারা কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী মদদপুষ্ট একটি পক্ষ আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকার নেতৃত্বে কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চলমান কমিটি দখল করে নেয়।
মোহাম্মদ সানাউল্লাহ দাবি করেন, আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা কমিটি দখল করলেও গত এফবিসিসিআই নির্বাচনে তাদের (সানাউল্লাহ কমিটি) ৪ জনকে ভোটার হিসাবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নির্বাচনের পর এফবিসিসিআই, কক্সবাজার চেম্বারের মনোনীত ৪ জন পরিচালককে এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটিতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তার ভাষায়, পরে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘অবৈধ চেম্বার সভাপতি’ আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা রাজনৈতিক বিবেচনায় ওই চারজনের নাম এফবিসিসিআইয়ের স্ট্যান্ডিং কমিটি এবং সাধারণ পরিষদ থেকে বাদ দিয়ে দেয়।
তার মতে, বিগত সরকারের সুবিধাবাদী চক্রের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের কারণে আমরা এই অন্যায় ও গর্হিত কাজের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ও এফবিসিসিআইয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি।