স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল মতিনকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় ঠিকাদার ও এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, অতিমাত্রায় ঘুষ না দিলে চলমান বিভিন্ন রাস্তা ও ব্রিজের কাজের বিল আটকে রাখেন আব্দুল মতিন। ফলে অনেক কাজ মাঝপথে থেমে থাকার কারণে সাধারণ মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অনেক ব্রিজের জমি কুমিল্লা এলজিইডি কর্তৃক অধিগ্রহণ না করায় ঠিকাদার কিছু অংশ কাজ করার পর বন্ধ হয়ে আছে। অনেক কাজের মেয়াদকালও শেষ হয়ে গেছে। তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুষ না দেয়ায় এসব কাজের মেয়াদ বাড়ছে না, জমিও অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না। ফলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে, একইসঙ্গে ঠিকাদাররাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তারা বলেন, প্রকল্প কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অর্থ বরাদ্দ আনার জন্যও তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুষ দাবি করে থাকেন আবদুল মতিন।
মাইনুদ্দিন বাঁশি লিমিটেড লিমিটেড ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমুর ইসলাম জানান, অতিমাত্রায় ঘুষ না দেওয়ার কারণে সিআইবিআরআর প্রকল্পের আওতায় দাউদকান্দি উপজেলার বাতাকান্দি থেকে মোহনপুর লঞ্চঘাট পর্যন্ত ৫৭০ মিটার লম্বা পিএসসি গার্ডার ব্রিজের নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধি করছে না কর্তৃপক্ষ। জমি অধিগ্রহণ না করার কারণে আমরা সঠিক সময়ে কাজ করতে পারি নাই। এছাড়া ব্রিজের ডিজাইন ত্রুটিপূর্ণ ছিল।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বারেশ্বর বাবুরবাড়ী এলাকায় সিসিবি প্রকল্পের আওতায় ২৭ মিটার লম্বা গার্ডার ব্রিজের প্রথম চলতি বিল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রকল্পের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স শশী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মো. কামাল হোসেন জানান, চাহিদামত ঘুষ না দেওয়ায় আমাদের প্রথম চলতি বিল এক কোটি চার লাখ টাকা প্রায় সাত মাস ধরে আটকে রেখেছে। প্রতিদিন রিগ মেশিনের ভাড়াসহ, ওইখানের জনবল কাঠামো নিয়ন্ত্রণসহ তাদের দৈনন্দিন বেতনসহ প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। রড সিমেন্ট চুরিসহ এ পর্যন্ত আমার ৫০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। আমরা খুব ভোগান্তির মধ্যে আছি।
সিসিবি প্রকল্পের আওতায় মনোহরগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজ আটকে রাখা হয়েছে ঘুষ না দেয়ার কারণে। কাজের সময় বৃদ্ধি না করার কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারছে না বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তারা আবদুল মতিনের বিরুদ্ধে সকল দুর্নীতির তদন্ত করে তার দ্রুত অপসারণসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার মো. রজব, নাছির ম্যাক্স, মো. শাহরিয়ার হাসান বিধান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে কুমিল্লা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মতিনকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় ।