কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন সফল করতে চিনিবোঝাই ট্রাকে আগুন দেয়া এবং ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে শিবচরের আজাহার হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে র্যাব–পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজাহার হাওলাদার (৪০) কুতুবপুর ইউনিয়নের শামসুদ্দিন মৌলভীর কান্দি গ্রামের মোহাম্মদ হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসিনার দীর্ঘ শাসনামলে তিনি ছিলেন সক্রিয় আওয়ামী লীগ কর্মী। সাবেক এমপি লিটন চৌধুরীর সভা-সমাবেশসহ নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়মিত অংশ নিতেন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টানোর পর তিনি যোগ দেন বিএনপির রাজনীতিতে। মাদারীপুর-১ আসনের স্থগিত প্রার্থী কামাল জামান নুরুদ্দিন মোল্লার বিভিন্ন সমাবেশে তাকে দেখা গেছে। শুক্রবার বিকালে শিবচরের নির্বাচনি সমাবেশেও সামনের সারিতে ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের নাওডুবা এলাকায় পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার কাছে চিনিবোঝাই একটি ট্র্যাকে আগুন ধরানো এবং এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি— এই দুই ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণে তার সম্পৃক্ততা পাওয়ার পর সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়।
র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন, “লকডাউনে নাশকতা ও সহিংস কর্মকাণ্ডে আজাহার হাওলাদারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় গেছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষণসহ গোয়েন্দা তথ্য যাচাইয়ের পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
এ সংক্রান্ত একাধিক ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়ার ছবিতে দেখা গেছে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লিটন চৌধুরীর সাথে। আর কিছু ছবিতে দেখা গেছে তিনি লিটন চৌধুরীর জন্য নৌকা মার্কায় ভোটের প্রচারণা করছেন। আবার একই ব্যক্তি বিএনপি নেতা কামাল জামান মোল্লার সমাবেশে মিছিল করছেন।
এদিকে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মাদারীপুর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান মিলন। তিনি বলেন, “এই লোক গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ করেছে। লিটন চৌধুরীর জন্য ভোট চেয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপরই বিএনপিতে যোগ দেয়। কামাল জামান মোল্লার সব প্রোগ্রামে নিয়মিত আসতো। শুক্রবার বিকালেও সমাবেশে ছিল। সেই রাতেই তাকে সন্ত্রাস দমন আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
শনিবার সকালে তাকে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ থানায় হস্তান্তর করা হলে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
স্থানীয়দের মতে— “শিবচরে অনেকে দিনে বিএনপি, রাতে আওয়ামী লীগ” করেন। আজাহারকে গ্রেপ্তারের এই বক্তব্য নতুন করে আলোচনায় এসেছে।