টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে হত্যার পর স্বামীর লাশ নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন স্ত্রী। এরআগে শনিবার দুপুরে স্বামী শহিদুল ইসলামকে (৩০) উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকায় স্থানীয় লোকজন নিয়ে মারধর করেন স্ত্রী নাসরিন আক্তার (২৮)। পরদিন রোববার শহিদুলের বোন আলেয়া বেগম নাসরিনসহ ৪ জনের নামে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। তবে নাসরিন শহিদুলের তৃতীয় স্ত্রী। এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত শহিদুল ইসলাম রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর গ্রামের মৃত আলম মিয়া ছেলে ও গ্রেপ্তার নাসরিন আক্তার মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পারদিঘী গ্রামের আজম খানের মেয়ে।
মামলা ও স্থানীয়রা জানায়, শহিদুল ইসলামের আরো দুজন স্ত্রী আছেন। তারা হলেন মুন্নী ও আতিকা। প্রথম স্ত্রীর ঘরে ৭ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান ও দ্বিতীয় স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শহিদুল গোড়াই এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন। কয়েকবছর পূর্বে নাসরিনকে বিয়ে করেন। এরপর এক বছর পূর্বে তাকে তালাক দেন। তালাক দিলেও নাসরিন তাকে স্বামী পরিচয় দিয়ে গোড়াই এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। একপর্যায়ে নাসরিন শহিদুলকে তার বাসায় আসতে বারন করলে নাসরিনের আপত্তিকর কিছু ছবি দেখিয়ে তাকে নিজের সঙ্গে থাকতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন শহিদুল। মাঝেমধ্যে ঝগড়া ও একে অপরকে মারধরের ঘটনা ঘটতো। গেলো শনিবার দুপুরে শহিদুল নাসরিনের ভাড়া বাসায় আসলে নাসরিন এলাকার কিছু উঠতি বয়সের ছেলে দিয়ে তাকে মারধর করান। মারধরে শহিদুল অজ্ঞান হলে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাসরিন কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার এবং নাসরিনকে গ্রেপ্তার করেন।
শহিদুলের দ্বিতীয় স্ত্রী মুন্নী বেগম বলেন, আমরা দেশের বাড়ি থাকতাম। তার এই তৃতীয় স্ত্রী সম্পর্কে আমরা কেউ অবগত নই। তিনি কাজের প্রয়োজনের বেশিরভাগ সময় এলাকার বাইরেই থাকতেন।
মামলার বাদী নিহতের বোন আলেয়া বেগম জানান, আমার ভাইকে আমি শনিবার সাড়ে ১১টার দিকে বাসে উঠিয়ে দেই। তার এক ঘণ্টা পর আমাকে ফোন করে জানায়, মির্জাপুরে নাসরিন নামক এক নারী তার ভাইকে মারধর করাচ্ছে। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই ভাইয়ের মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
মির্জাপুর থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।