টাঙ্গাইলে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণে কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে এ বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের জমির মালিকানা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে গণপূর্ত ও জেলা পরিষদ। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। নিজেদের অবস্থানে উভয় পক্ষ অনঢ় রয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে ।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলে গণপূর্তের জায়গা দখল করে বিশাল বহুমুখী বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে। গণপূর্ত বলছে, নির্মাণাধীন ভবন ভেঙে ফেলতে হবে অথবা তাদের অধীনে দিতে হবে। অপরদিকে জায়গা দখলের বিষয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে জেলা পরিষদ। এদিকে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের অন্তরালে নজিরবিহীন দুর্নীতি আর অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
গণপূর্তের প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ৭৫ শতাংশ জায়গা দখল ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের মধ্যদিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এদিকে টাকা জমা দিয়ে দোকান ইজারা নেওয়ার ১০ বছরেও পজিশন বুঝে পায়নি ব্যবসায়ীরা। বাণিজ্যিক ভবনের নির্মাণকাজ আদৌ সমাপ্ত হবে কি না নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না কেউ। ফলে চরম ক্ষোভ আর হতাশায় দিন কাটছে আড়াইশ দোকান মালিকের।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল শহরে নতুন বাস টার্মিনাল সংলগ্ন প্রায় এক একর ৫২ শতাংশ জায়গার ওপর ২০১৫ সালে বিবর্তন নামে বহুমুখী বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ। জেলা পষিদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের রয়েছে ৭৫ শতাংশ জায়গা। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকা। নির্মাণকাজ শুরুর পর গণপূর্ত বিভাগ বারবার কাজ বন্ধের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু কোনো তোয়াক্কা না করে জেলার সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা ফজলুর রহমান খান ফারুক ভবন নির্মাণকাজ চালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শম্ভু রাম পাল জানান, দখলকৃত জায়গার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩০ কোটি টাকার ওপরে। এখানে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে এটি গণপূর্তের অধীনে নিতে হবে অথবা ভেঙে ফেলতে হবে। তবে দুই মন্ত্রণালয় একত্রে সিদ্ধান্ত নিলে নিষ্পত্তি করার সুযোগ রয়েছে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার স্বপ্না জানান, গণপূর্তের দাবি কতটা সঠিক আগে সেটা আমাদের দেখতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে পারব। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। তারা সরেজমিন পরিদর্শনে এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে চায় জেলা পরিষদ।