ভৈরবকে জেলা বাস্তবায়নের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় ছাত্র-যুবক-জনতা।
সোমবার ভৈরব বাজার রেলওয়ে জংশন স্টেশনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী চলে এই কর্মসূচি।
কর্মসূচি চলাকালে সকাল ১০টার দিকে নোয়াখালী থেকে ঢাকা অভিমুখী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে আটকে দেন আন্দোলনকারীরা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটির ইঞ্জিন থেকে আন্দোলনকারীদের নেমে যেতে বলেন এক পুলিশ সদস্য। এই নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হলে ট্রেনটিতে ইট-পাথর ছুড়ে মারার ঘটনা ঘটে।
পরে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মীরা এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। দুপুর ১২টার দিকে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নিলে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এদিকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলমান দুই ঘণ্টার কর্মসূচিতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী চট্টলা এক্সপ্রেস, সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখী কালনি এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অভিমুখী তিতাস কমিউটার ট্রেন, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী এগারোসিন্দুর ও ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি মালবাহী ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে। এতে করে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।
এই বিষয়ে ভৈরব বাজার রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ ইউসুফ জানান, ট্রেনটিতে ইট-পাথর ছুড়ে মারার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনায় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে ভৈরববাসীর দীর্ঘদিনের দাবির মুখে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ভৈরবকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন।
পরে ওই বছরের অক্টোবর মাসে কিশোরগঞ্জকে ভেঙে কটিয়াদী, বাজিতপুর, অষ্টগ্রাম, কুলিয়ারচর উপজেলার সমন্বয়ে “ভৈরবকে” দেশের ৬৫তম জেলা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে তৎকালীন সরকার। কিন্তু রহস্যজনক কারণে সেটি আর বাস্তবায়ন হয়নি।
সেই ন্যায্য দাবি আদায়ে তারা বর্তমানে আবারো মাঠে নেমেছেন। মাসব্যাপী ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
এই দাবিকে তারা তাদের অধিকার আখ্যা দিয়ে বলেন, দাবি না মানলে তারা এবার ক্ষান্ত হবেন না। প্রয়োজনে সড়ক, রেল ও নৌপথ লাগাতার অবরোধ করে দেশকে অচল করে দেবেন।
রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের পূর্বাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করাসহ ভৈরবের উপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, গ্যাস সরবরাহ লাইন, জ্বালানি সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেবেন বলেও জানান তারা।