হোম > সারা দেশ > ঢাকা

নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ ভাড়া হয় আবাসিক হোটেল আদলে

উপজেলা প্রতিনিধি, সদরপুর (ফরিদপুর)

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদী বেষ্টিত দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আবাসিক হোটেলের মতো ভাড়া দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করা হচ্ছে বাইরের মানুষের অস্থায়ী থাকার জায়গা হিসেবে। এ অঞ্চলের দশটি বিদ্যালয়ের কোথাও শিক্ষক আছেন কিন্তু নেই শিক্ষার্থী—আবার কোথাও শিক্ষার্থী আছে, নেই শিক্ষক। বিদ্যালয়গুলো কাগজে-কলমে চালু থাকলেও বাস্তবে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নদী বেষ্টিত এই এলাকায় বাইরে থেকে আসা কৃষিশ্রমিকরা বিদ্যালয়ের কক্ষে অস্থায়ীভাবে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে এসব কক্ষ ভাড়া দেয়া হয়েছে বলে অনেক অভিভাবক অভিযোগ করেন।

এলাকাবাসীর মতে, আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতেও পাঠদান প্রায় বন্ধ। কোথাও দু’একজন শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার্থী নেই। শ্রেণিকক্ষে ধুলা জমে আছে, মাঠে নেই শিশুদের কোলাহল। তারা আরো জানান, সাংবাদিক আসার খবর পেয়ে আজ কয়েকজন শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন—এর আগে তাদের দেখা মেলেনি।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিছু মানুষ বিদ্যালয়ের ভেতরে থাকে। কয়েকদিন হলো তাদের এখানে দেখছি। এই স্কুলেই তারা রান্না-বান্না করে। তারা টাকা দিয়ে ঘর ব্যবহার করে। এটা তো সরকারি স্কুল—এখানে এমন হওয়া ঠিক নয়।

চরখুনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান শ্রেণিকক্ষে কয়েকজন শ্রমিক থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, মান্নান শিকদার নামে স্থানীয় এক মাতব্বর তার জমি চাষের জন্য বাইরে থেকে কিছু শ্রমিক এনেছেন। তারাই মূলত স্কুলে থাকছেন। তাদের ভাড়া দেয়া হয়নি, তারা জোর করে থাকছেন। বিষয়টি আমি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি।

শিক্ষার্থীদের পাঠদান কীভাবে করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের স্কুলে তেমন শিক্ষার্থী নেই। একটি রুমেই কষ্ট করে ক্লাস নিতে হয়।

এছাড়া ইউনিয়নের মোজাফফরপুর, বিশ্বনাথপুর আকন্দি, নুরুদ্দিন সরদারেরকান্দি ও কটিকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, কিছু বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকলেও কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল না। জানা যায়, এসব স্কুলে অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী থাকলেও শিক্ষকরা নিয়মিত না আসায় শিক্ষার্থীরাও তেমন স্কুলে আসে না। অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে।

রফিক শেখ নামের এক অভিভাবক বলেন, আমাদের এলাকার স্কুলগুলো শুধু নামেই আছে। শিক্ষকরা মাসে এক-দুদিন এসে সই করে চলে যান। বাচ্চারা পড়াশোনার সুযোগ না পেয়ে ঘরে বসে সময় নষ্ট করছে। পরে আমরা বাধ্য হয়ে সন্তানদের মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি।

রোকেয়া বেগম নামের আরেক অভিভাবক জানান, আমরা চাই আমাদের সন্তানরা নিয়মিত স্কুলে যাক, কিন্তু শিক্ষক না থাকায় তারা পড়ালেখা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক না হলে এই এলাকার ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।

অন্যদিকে, শিক্ষকরা নিজেরা তাদের অসুবিধার কথাও তুলে ধরেছেন। তাদের দাবি, চরাঞ্চলটি দুর্গম হওয়ায় নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা সম্ভব হয় না। নৌযান সংকট ও প্রতিকূল যাতায়াতের কারণে প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকা কষ্টসাধ্য।

মোজাফফরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, চরাঞ্চল এলাকায় নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা সত্যিই কঠিন। বর্ষার সময় নদীর স্রোত ও নৌযান সংকটে প্রতিদিন আসা-যাওয়া সম্ভব হয় না।

বিশ্বনাথপুর আকনকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। অনেক সময় নৌকা না পেলে পুরো দিনই স্কুলে পৌঁছানো যায় না। এ জন্যই আমরা দুপুরে স্কুল ছুটি দিয়ে দেই।

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মামুনুর রহমান জানান, বিদ্যালয় ভাড়া দেয়া বা শ্রমিক থাকার বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স্বামীর পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

পদ্মার ৮ কেজি ঢাই মাছ ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি

ধনবাড়ীতে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণ

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্তুগিজ রাজ পরিবারের প্রধান ডিউক

সাটুরিয়ায় নাশকতার মামলায় আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫

তালগাছে মাচা, ভেবেছিলাম পাখি ধরছে পরে দেখি গাঁজার আস্তানা

আ.লীগ-জাপা-১৪ দলকে ছাড়া নির্বাচনে যাবো না: কাদের সিদ্দিকী ‎

টঙ্গীতে ইজিবাইক-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত ১

জাজিরায় খেলতে গিয়ে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

ধনবাড়ীতে পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪