মেট্রোরেলের বিয়ারিং দুর্ঘটনা
ফার্মগেটের ব্যস্ত সড়কে হঠাৎ এক ভারী রাবার খণ্ড ছিটকে পড়ে মুহূর্তেই নিভে যায় এক তরুণ উদ্যোক্তার জীবন। যে মানুষটি মেঝভাবি আছমা বেগমকে বলেছিলেন, ভাবি, ইলিশ মাছ কিনে রাখেন, দু-একদিনের মধ্যে বাড়িতে আসবো। সেই আবুল কালাম আজ ফিরলেন নিথর দেহে, সাদা কাফন পরে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ইশ্বরকাঠি গ্রামের বাড়িতে। জানাজায় অংশ নিতে ভিড় করেন স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী। কান্নায় ভেঙে পড়েন মা, ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজন। পরে নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের কবরস্থানে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এর আগে রোববার রাত ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তার বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা। আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে ঘটে সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, হাঁটতে হাঁটতে ঠিক কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে পৌঁছানোর সময় ওপর থেকে বিয়ারিং প্যাড ছিটকে নিচে পড়ে তার মাথায় আঘাত হানে। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন কালাম। স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে হাসপাতালে নিলেও চিকিৎসকরা আর বাঁচাতে পারেননি।
গ্রামের মানুষ বলছেন, কালাম ছিলেন পরিশ্রমী ও হাসিখুশি একজন মানুষ। ছোট ব্যবসা করে সংসার চালাতেন, স্বপ্ন দেখতেন বড় কিছু করার। তার হঠাৎ মৃত্যু পুরো গ্রামটার আলো নিভিয়ে দিয়েছে।
এই দুর্ঘটনা কেবল একটি পরিবারকে নয়, এক গ্রামের মানুষকেও গভীর শোকে নিমজ্জিত করেছে। গ্রামের প্রবীণ এক বাসিন্দা বলেন, আমরা ভাবতেই পারছি না—যে ছেলেটা সবার প্রিয় ছিল, সে এমনভাবে চলে যাবে! আল্লাহ যেন ওকে জান্নাত নসিব করেন।